×

খেলা

রাতে ইউরোর স্বপ্নের ফাইনালে ইতালি-ইংল্যান্ড মুখোমুখি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২১, ০৮:৩৩ এএম

রাতে ইউরোর স্বপ্নের ফাইনালে ইতালি-ইংল্যান্ড মুখোমুখি

সেমিফাইনালে জেতার পর ইতলিয়ান খেলোয়াড়দের উল্লাস।

রাতে ইউরোর স্বপ্নের ফাইনালে ইতালি-ইংল্যান্ড মুখোমুখি

সারাবিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। দীর্ঘ এক মাসের প্রতীক্ষার পর আজ রাতে  মাঠে গড়াচ্ছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও ইতালি মুখোমুখি হবে ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে, যা সরাসরি দেখাবে সনি টেন ২ চ্যানেল। আজ লন্ডনে শেষ হাসি হাসবে কারা?

ইউরোর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। আজ রাতের পর এই সংজ্ঞা বদলাচ্ছে। পর্তুগালসহ, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স ও স্পেনের মতো দলগুলো আগেই বিদায় নিয়েছে। ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপের শ্রেষ্ঠ দুটি দল। ইংল্যান্ড অনেকটা তারকাসমৃদ্ধ দল। হ্যারি কেন সামনে থেকে লিড দিচ্ছেন থ্রি লায়ন্স টিমকে, যেন সত্যিকারের অধিনায়ক তিনি। প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা এবার ইউরোতেও ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ চার গোল করেছেন। নেতার ভূমিকায় আছেন আরেকজন, রহিম স্টার্লিং। পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই প্রতিপক্ষ দলগুলোর রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের জন্য ভয় জাগানিয়া এক নামে পরিণত হয়েছেন তিনি। আজও কি পারবেন ইতালির বিপক্ষে নিজের দিকে আলো ছড়াতে?

গ্যারেথ সাউথগেটের দলের মধ্যভাগও শক্তিশালী। কেলভিন ফিলিপস ও ডেকলাইন রিচের মতো দুজন তারকা কাঁধে বয়ে চলেছেন মাঝমাঠের খেলা। বুকায়ো সাকা, জ্যাক গ্রিয়ালিশরা দিচ্ছেন নিজেদের সর্বোচ্চটা। রক্ষণভাগে কাইলে ওয়াকার, হ্যারি মাগুইয়ার ও লোকে শও আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। বলা হচ্ছে, ইংল্যান্ডের বেঞ্চের খেলোয়াড়দের নামালেও তাদের পারফরমেন্সে একটুও ঘাটতি থাকবে না। বোঝাই যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের ইংল্যান্ড কতটা শক্তিশালী হয়েছে।

পক্ষান্তরে ইতালিতে এত বড়সড় তারকা নেই। রবার্তো মানচিনির শিষ্যদের মধ্যে সবাই প্রায় একই মানের। তাদের শক্তির জায়গাটা ভারসাম্যে। দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়াটাও দুর্দান্ত। যে কারণে দাপটের সঙ্গেই ফাইনালে উঠেছে আজ্জুরিরা। ইতালি বরাবরই রক্ষণশীলভাবে খেলে থাকে এই কথা হয়তো কারোরই অজানা নয়। লিওনার্দো বুনুচ্ছি ও জর্জিও কিয়েলিনি জুটিতে যা আরো ভারি হয়েছে। রক্ষণের পাশাপাশি এখন মানচিনির শিষ্যরা হুটহাট আক্রমণে উঠে যাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্ধর্ষ। এ ক্ষেত্রে লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে, নিকোলো বারেলা ও ফেদেরিকো চিয়েজাদের নাম উল্লেখযোগ্য। সেমিফাইনালে তো ফেদেরিকো চিয়েজার কল্যাণেই স্পেনকে হারাতে সক্ষম হয়েছে চারবারের বিশ্ব জয়ীরা। ইতালির মাঝমাঠের প্রাণ মার্কো ভেরাত্তি, এককথায় ভেটেরান অ্যাখ্যা দেয়া যায় তাকে।

[caption id="attachment_295970" align="aligncenter" width="634"] সেমিফাইনালে ডেনমার্কের বিপক্ষে জয়ের পর ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের উল্লাস।[/caption]

ফাইনালের আগে দুদলের কোচের মুখেই প্রাপ্তি বাকির সুর। ফাইনালে ওঠাকে গৌরব মনে করলেও মানচিনি ও সাউথগেট দুজনেই চান জয় দিয়ে ইউরোর সমাপ্তি রাঙাতে। এ সম্পর্কে মানচিনি বলেন, ‘ফাইনালে ওঠাই আমাদের জন্য বড় অর্জন। কিন্তু এটা যথেষ্ট না। ফাইনালে যদি জিততে পারি তবেই আমরা সফল। আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পারি, কারণ দিন শেষে জয়কেই সবাই গণ্য করে।’ সাউথগেটের ভাষ্য, ‘ফাইনালে ওঠা আমি কিংবা স্টাফ কারো জন্যই যথেষ্ট নয়। আমরা জিততে চাই।’

ইতালি ও ইংল্যান্ড, আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে ২৭ ম্যাচে। আজ্জুরিদের ১১ জয়ের বিপরীতে ইংলিশদের জয় ৮ ম্যাচে, ৮টি ম্যাচ ড্রও হয়েছে। প্রথম ৮ দেখায় কোনো হার নেই ইতালির। ৪টি জয়ের বিপরীতে সমানসংখ্যক ম্যাচে ড্র করেছিল তারা। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে এগিয়ে ইংল্যান্ড, দুটিতেই জয় তাদের। ২টি ম্যাচ ড্রয়ের বিপরীতে ইতালির জয় মাত্র ১টি। তবে গোলের পরিসংখ্যানে এগিয়ে ইংল্যান্ড। ২৭ দেখায় ইংল্যান্ড করেছে ৩৩ গোল, ইতালির গোলসংখ্যা ৩১টি।

ইতালি এর আগে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছে তিনবার, ১৯৬৮ সালে শিরোপা জয়ের পর ২০০০ ও ২০১২ সালে দুবার হেরেছে তারা। এবারের আসরটি হবে তাদের চতুর্থ ইউরোর ফাইনাল। এবারের ফাইনাল দিয়ে স্পেন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের রেকর্ডে ভাগ বসাবে ইতালি। স্পেন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুদলই চারবার করে ইউরোর ফাইনালে খেলেছে। এই রেকর্ডে সবার শীর্ষে জার্মানি, তারা ফাইনালে খেলেছে ছয়বার। একবার ইউরো জয়ের পাশাপাশি চারবার বিশ্বজয়ও করেছে আজ্জুরিরা। অন্যদিকে ইংল্যান্ড একবার বিশ্বকাপ জিতলেও এর আগে কখনোই ইউরোর ফাইনালে উঠতে পারেনি। ফলে এবারের আসরটি তাদের জন্য নতুন এক মাইলফলকের।

ইতালির ফিফা র‌্যাঙ্কিং ৭ এবং ইংল্যান্ডের ৪। বলা যায় দুটি হট ফেভারিট দল অংশগ্রহণ করছে এবারের আসরের ফাইনালে। ইংল্যান্ড এর আগে ইউরো শিরোপা জিতবে তো দূরের কথা, এর আগে কখনো ফাইনালে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি। ১৯৬৮ ও ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ দুবার সেমিফাইনালে খেলেছিল তারা। ইংল্যান্ড একমাত্র ফাইনালটি খেলেছিল ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে, সেবার শিরোপাও জিতেছিল হ্যারি কেনের পূর্বসূরিরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App