×

সারাদেশ

ভারসাম্যহীন নারীর পাশে ইউএনও

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২১, ০৩:৫৮ পিএম

ভারসাম্যহীন নারীর পাশে ইউএনও

নওগাঁর সাপাহারে ভারসাম্যহীন নারীকে সহযোগিতা করেন ইউএনও। ছবি: ভোরের কাগজ।

ভারসাম্যহীন নারীর পাশে ইউএনও

এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে (৫২) উদ্ধার করে নিজের স্ত্রীর শাড়ি ব্লাউজ ও পেটিকোটও দিলেন নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন।

শনিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে সাপাহার উপজেলার শিরন্টী ইউনিয়নের পাগলার মোড় নামক এলাকার শামিম রেজার ভবন থেকে এই নারীকে উদ্ধার করেন তিনি। এই সময় তার সাথে ছিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান, স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মানিক, অধ্যাপক আজিজুর রহমান প্রমুখ।

শামিম রেজা বলেন, দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি আকবর হোসেনকে জানায় এই নারী গত ৩ দিন থেকে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন না। আমার ভবনের মধ্যে পড়ে আছেন। প্রসব-পায়খানা করছেন। হিতাহিত জ্ঞান নেই। এখানে কোন তার আত্মীয়-স্বজনও নেই। এই শুনে ও সরজমিনে গিয়ে সাংবাদিক আকবর হোসেন দেখেন।

[caption id="attachment_296064" align="aligncenter" width="320"] কয়েকদিন না খেয়ে ছিরেন তিনি। পরে তাকে খাওয়ানো হয়। ছবি: ভোরের কাগজ।[/caption]

সমাজসেবা কর্মকর্তা ও প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মানিককে জানায় এই সাংবাদিক। পরে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে দেখা করে বিষয়টি জানায়। রাতেই ও সমাজসেবা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন ইউএনও। রাতে বাজার খোলা না থাকায় নিজের সহধর্মীনির কাপড়-চোপড় দিয়ে বস্ত্রহীন এই নারীর ইজ্জত রক্ষা করলেন তিনি। দিলেন বাসায় বানানো খাবারও।

শিরন্টি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ শ্রী যোগেশ জানান, এই নারী প্রায় ৫ বছর থেকে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। ২ বছর আগে ২ মাস আমার বাড়িতে ছিলেন। তখন তার ঠিকানা খুজে বের করে ছিলাম। তার নাম গীতা রানী। মান্দা উপজেলায় তার বাড়ি ছিল। সেখানে দেড় বিঘা জমি আছে। কিন্তু তার স্বজনেরা তাকে নিতে চাননা। কারণ হিসেবে জানান তারা যোগেশকে জানান, হিন্দু থাকা অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে ছিল। পরে স্বামী-সন্তান রেখে মুসলমান ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম বিবাহিত যুবককে বিয়ে করেন। কিন্তু ওই যুবকের আগের স্ত্রী তাকে বাড়িতে উঠতে দেননি। এরপর কিছু দিন তারা আলাদা সংসার করে। এক সময় স্বামী তালাক দিয়ে দেন। পরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দিক-বিদিক ঘুরে বেড়ান। ২ বছর আগে খুব কষ্টে তার স্বজনদের সন্ধান পায়। এতো দিনে তার ঠিকানা ভুলে গেছি।

সমাজসেবা কর্মকর্তা জানান, আমরা তার কোভিড পরীক্ষা করব। পরে আদালতে পাঠাবো। আদালতের সিধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো। ইউএনও (স্যার) সার্বক্ষণিক খোজ-খবর রাখছেন। তিনি ব্যাক্তিগত অর্থে তার দেখভালের জন্য এক নারীকে নিয়োগ করেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App