×

সারাদেশ

তেঁতুলিয়া ও বোদায় পশুরহাট বন্ধ করে দিল প্রশাসন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২১, ০৪:১৩ পিএম

তেঁতুলিয়া ও বোদায় পশুরহাট বন্ধ করে দিল প্রশাসন

সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোরবানির পশুরহাট চালু করার পরে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ছবি: ভোরের কাগজ

তেঁতুলিয়া ও বোদায় পশুরহাট বন্ধ করে দিল প্রশাসন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার পশুর হাট শালবাহান এবং বোদা উপজেলার পশুর হাট নগর কুমারীতে ইজারাদারেরা সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোরবানির পশুরহাট চালু করার পরে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। খবর পেয়ে পশুর হাট দুটিতে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। পরে হাট থেকে পশু সহ ক্রেতা বিক্রেতাদের ফিরিয়ে দেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহ সেনা ও বিজিবি-পুলিশের যৌথ বাহিনী।

এদিকে তেতুঁলিয়া উপজেলার শালবাহান পশুর হাট চালু চেষ্টা করে হাট ইজারাদার আব্দুর রশিদ। খবর পেয়ে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে হাট বন্ধ সহ তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তেতুঁলিয়া উপজেলা কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা। শনিবার (১০ জুলাই) সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের শালবাহান দাখিল মাদ্রাসা মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অভিযোগে এই জরিমানা করা হয় বলে জানান তিনি। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ওমর আলী নামে এক কোরবানির পশু ক্রেতাকেও ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

তেতুঁলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ অমান্য করে ঈদ উল আযহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু ক্রেতা বিক্রেতারা পশুর হাটে আসতে শুরু করেছিলেন। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে গিয়ে হাট বন্ধ সহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে হাট ইজারাদার সহ দুইজনকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কঠোর লকডাউনে পশুরহাট বসিয়েছেন নগর কুমারী হাট ইজারাদার। শনিবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আধাবেলা চলে পশুর হাট। পরে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে পশুর হাটটি বন্ধ করে দেয়।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা যায়, বোদা উপজেলার নগরকুমারী হাটের ইজারাদার সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে হঠাৎ করেই শনিবার সকাল থেকে পশুর হাটের কার্যক্রম শুরু করে। এর আগেই ইজারাদের লোকজন আগেই পশুর হাট চালু করার বিষয়টি ক্রেতা বিক্রেতা সহ পশু ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেন। এ কারণে শনিবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী সহ খামারিরা। মুহুর্তেই নগরকুমারী পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতায় হাজারো মানুষের ভিড় জমে যায়। আগের তুলনায় পশুর হাটটিতে দ্বিগুন গরুসহ অন্যান্য পশুর দেখা মিলে।

হাটে পাঁচ উপজেলা থেকে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভীড়ে জনসমাগম বেড়ে যায়। সকাল থেকে হাট সংলগ্ন সড়কের দুই পাশে নসিমন-করিমন, পিকআপ সহ অন্যান্য যানবাহনের সারি সারি অপেক্ষমান রয়েছে। পরে প্রশাসনের নির্দেশের পর হুইসেল বাজিয়ে পশুর হাটের ক্রেতা বিক্রেতাদের দ্রুত হাট ত্যাগ করে চলে যেতে বলে প্রশাসন। পরে পশুর হাটটি বন্ধ ঘোষনা করা হয়। এ সময় বোদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলীর নির্দেশে হাট বন্ধ করার জন্য তাৎক্ষনিক মাইকিং করে হাট বন্ধের ঘোষনা করে সেই সাথে গরু নিয়ে বিক্রেতাদের দশ মিনিটের মধ্যে হাট ত্যাগ করার কথা প্রচার করেন। হাটে আসা লোকজনকে সরিয়ে দেন।

বোদা নগর কুমারী পশুর হাটের ইজারাদার আব্দুর রহমান বলেন, বিক্রেতারা গরু নিয়ে হাটে হাজির, ক্রেতারাও এসেছেন। বাধ্য হয়ে পশুর হাট চালু করেছেন। তবে সরকারিভারে লকডাউনে পশুর হাট বসানোর কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানায়, আমাদের অজান্তে প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে হাট বসিয়েছে। খবর পেয়ে পশুর হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ইজারাদারকে কোন জরিমানা করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ইজারাদার প্রভাবশালী ও দলীয় পরিচয় থাকায় জরিমানা করা হয়নি।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সাধারনত ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে এই সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার পশুর হাটে কোরবানির পশুর ব্যাপক ক্রয় বিক্রয় হয়। কিন্তু করোনার উর্ধগতি ঠেকাতে বর্তমান সময়ে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় হাট বসানো যাচ্ছে না। করোনা মহামারির কারণে হাট ইজারাদার, খামারি ও গৃহস্থরা হয়তো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এ জন্য সবদিক বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিদের সমন্বয়ে আলোচনাও অব্যাহত রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বর্তমানে আরোপিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলতে আমরা সকলকে উৎসাহিত করে চলেছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App