×

জাতীয়

নৌ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ জরুরি : চৌধুরী আশিকুল আলম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২১, ০৭:২৪ পিএম

নৌ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ জরুরি : চৌধুরী আশিকুল আলম

চৌধুরী আশিকুল আলম

বিদেশগামী নৌ শ্রমিকদের টিকায় অগ্রাধিকার প্রয়োজন

করোনা মহামারিতে আয় রোজগার হারিয়ে চরম দুঃসময় পার করছেন দেশের নৌযান শ্রমিকরা। কয়েক মাস ধরে বেতন-বোনাস বন্ধ। সংসার চালাতে গিয়ে ধার-দেনায় ডুবেছেন। পাওয়া যাচ্ছে না ত্রাণও। এ অবস্থায় অনেক নৌ-শ্রমিকের ঘরেই চাপা কান্না চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম।

এই শ্রমিক নেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার কয়েক দফা যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা কীভাবে চলবেন, তা নিয়ে কারো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। তিনি বলেন, নৌযান শ্রমিকরা যে পরিমাণ বেতন পান তা দিয়ে উর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালানো কঠিন। এর ওপর কয়েক মাস ধরে বেতন বন্ধ। উৎসব ভাতা দেয়া হয়নি। তাই গত রোজার ঈদে বেশিরভাগ শ্রমিকের ঘরে ভাল রান্না হয়নি। খেয়ে না খেয়ে পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। সামনে আরো একটি ঈদ চলে এসেছে। শ্রমিকদের এ মানবেতর অবস্থা থেকে রক্ষা করতে জরুরি ভিত্তিতে বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধের দাবি জানান তিনি।

আশিকুল আলম বলেন, এ পর্যন্ত সামান্য সংখ্যক শ্রমিক মাত্র আড়াই হাজার টাকা করে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পেয়েছেন। বাজেটে এ দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য কিছুই রাখা হয়নি। এমনকি রেশনিং চালুর কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। চরম অর্থকষ্টে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরকার কঠোর লকডাউনের নামে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশের ভয় দেখিয়ে জনগণকে গৃহবন্দী করে রাখতে চাইছে। কিন্তু এ অবস্থায় শ্রমিকরা বাঁচবে কী করে-এটা ভাবা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, নৌযান শ্রমিকরা সাধারণত মাসের ৭/৮ তারিখে বেতন পেয়ে থাকেন। কিন্তু মাসের শুরুতেই লকডাউন দেওয়ায় তাদের খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ঈদুল আযহার আগ মুহুর্তে লকডাউন শুরু হওয়ায় শ্রমিকরা উৎসব বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। এর আগেও লকডাউনের কারণে মালিকরা বকেয়া মজুরি ও বোনাস দেননি। এ বিষয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘরে অবস্থান করছেন, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযান শ্রমিকরা পণ্য পরিবহণ ও খালাস করছেন। এতে খাদ্যসহ জরুরী সামগ্রীর চাহিদা যোগান দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল থাকছে। কিন্তু শ্রমিকদের প্রণোদনা, ঝুঁকি ভাতা, স্বাস্থ্যবীমার বিষয়ে সরকারের নিরবতা দূর্ভাগ্যজনক।

বিদেশগামী নৌযানের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার ভ্যাকসিন দেয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকা বহনকারী জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায়, তেমনি আমাদের সিফেয়ারার্সরাও বিদেশি জাহাজে কাজ করে। সব মিলিয়ে এ সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। তারা আমাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। অদূর ভবিষ্যতে এসব নৌ-শ্রমিকের জন্য করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার সনদ থাকা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়বে বলে আমরা মনে করছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিফেয়ারার্সদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হচ্ছে। তাই আমাদের দেশেও অফিস আদেশ জারি করে এই অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App