×

জাতীয়

দল যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এ উপলব্ধি থাকতে হবে: শফিউল আলম চৌধুরী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২১, ১০:৫৪ পিএম

দল যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এ উপলব্ধি থাকতে হবে: শফিউল আলম চৌধুরী
দল যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এ উপলব্ধি থাকতে হবে: শফিউল আলম চৌধুরী
তৃণমূল থেকে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এই নির্দেশনা কীভাবে বাস্তবায়ন করছেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা। এ নিয়ে কথা বলেছেন ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।

ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেছেন, তৃণমূল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি গঠনে ত্যাগী এবং যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলে কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল হবে না। আমি নির্মোহভাবে সে চেষ্টাই করছি। বিভাগীয় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গত মঙ্গলবার ভোরের কাগজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

স্কুল জীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি সিলেটের রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের। ছিলেন স্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি। এরপর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। পর্যায়ক্রমে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। পর্যায়ক্রমে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক। রাজনীতির পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে তার অবাধ বিচরণ। বর্তমানে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ছিলেন দুই মেয়াদে। বর্তমানে বিসিবির নারী ক্রিকেট উইংসের চেয়ারম্যান। জড়িত রয়েছেন নানা সামাজিক, সেবামূলক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। আওয়ামী লীগের একুশতম জাতীয় সম্মেলনে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। বর্তমানে ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন।

প্রথমবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজনীতি করেছি একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ে। স্বপ্ন ছিল কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে দায়িত্ব পালনের। কিন্তু সেটা প্রকাশের দুঃসাহস কখনোই ছিল না। দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র আধাঘণ্টা পূর্বে কিছুটা আঁচ পেয়েছি- এ রকম একটা কিছু হতে যাচ্ছি। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ কখনোই কোনো পদের জন্য লবিং করিনি। দলের জন্যই কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এতবড় জায়গায় আমাকে বসাবেন, সেটা ছিল অকল্পনীয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যখন নাম ঘোষণা করলেন, টেলিভিশন স্ক্রলে দেখে নিশ্চিত হলাম আমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। কারণ, এর আগে কেউই আমাকে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি।

ময়মনসিং বিভাগের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে কিছুটা সাংগঠনিক স্থবিরতা চলছে। এই বিভাগে ৫টি জেলা ইউনিট আছে। জামালপুর জেলার সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ২০ মে, শেরপুর ১৮ মে, নেত্রকোনা ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এবং ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলার সম্মেলন হয়েছে ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল। বর্তমানে সবগুলোই মেয়াদোত্তীর্ণ। উপজেলা ও থানাসহ ৩৯টি ইউনিট আছে। ২০২০ সালে দায়িত্ব পেয়েই ৫টি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে ঢাকায় বসেছিলাম। সবার কথা শুনে কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি। পরের মাস থেকেই করোনার প্রকোপ শুরু হয়।

তিনি বলেন, করোনাকালে প্রতি মাসেই দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ অন্যদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা করি। এরইমধ্যে ১৫টি পৌরসভা নির্বাচনে সৃষ্ট স্থানীয় সমস্যা মিটিয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করছি। বিভিন্ন উপজেলা ও থানা নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত বসছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সম্মেলনের নির্দেশনা দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই অল্প সময়ে প্রতিটি কমিটি করে ফেলব। এর আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়নের কমিটিগুলো ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নতুন হিসেবে দায়িত্ব পালনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা খুব সহজভাবেই নিয়েছি, কঠিন মনে হয়নি। কঠিন তখনই হতো- যদি আমার নিজস্ব কোনো চিন্তা-ভাবনা বা পছন্দ-অপছন্দের বিষয় থাকত। দায়িত্ব পালনে যদি আমরা নির্মোহভাবে কাজ করি। নেত্রীর নির্দেশনা- দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও সৎ যারা দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না তাদের নেতৃত্বে আনতে হবে। তাদের নেতৃত্বে আনলে সংগঠনের জন্য ভালো হবে। এক্ষেত্রে নিজেকে সৎ রাখলে সব কাজই সহজে করতে পারব। চ্যালেঞ্জ তখনই মনে হবে, যখন কমিটি গঠনে নিজের পছন্দ-অপছন্দের প্রয়োগ করতে যাব।

দায়িত্ব পালনে কোনো বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব সময় চেষ্টা করছি, আমার দ্বারা কোনোভাবেই যেন দল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দলের জন্য আমি খুব ভালো কিছু না করতে পারি, কিন্তু আমার কারণে দল যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়- সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সেভাবেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App