×

অর্থনীতি

এলডিসি পরবর্তী সম্ভাবনাময় শিল্পের সমান সুযোগ নিশ্চিতের আহ্বান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ০৭:৪৮ পিএম

এলডিসি পরবর্তী সম্ভাবনাময় শিল্পের সমান সুযোগ নিশ্চিতের আহ্বান
এলডিসি পরবর্তী সম্ভাবনাময় শিল্পের সমান সুযোগ নিশ্চিতের আহ্বান

বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানী বহুমুখীকরণে চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ডায়ালগে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন। ছবি: ভোরের কাগজ

দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ও সহায়ক নীতি সহায়তা, তৈরি পোশাকের মতো রপ্তানিমুখী সব শিল্পে সমান সুবিধা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া মানব সম্পদের উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় নীতিমালার দ্রুত সংষ্কার ও যথাযথ বাস্তবায়ন, আন্তর্জাতিক নেগোশিয়েশনে দক্ষতা বাড়ানো, গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ ও বরাদ্দ বাড়ানো প্রভৃতি বিষয়গুলোই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানী বহুমুখীকরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করবে বলে উল্লেখ করেন তারা।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে রপ্তানী বহুমুখীকরণে চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ডায়ালগে বুধবার অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। আয়োজিত ডায়ালগে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)’র ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এইচ এম আহসান।

ডায়ালগের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সাল পরবর্তী সময়ে অনেক রপ্তানি বাণিজ্য ও স্বল্প ব্যয়ে ঋণ সুবিধাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের শুল্ক-অশুল্ক বাধার সম্মুখীন হতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের এক হাজার ৭৫০টি রপ্তানি পণ্যের প্রায় ৮১শতাংশই তৈরি পোশাকখাতের অন্তর্ভূক্ত।

এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে দেশের রপ্তানি শিল্প পোশাকখাতসহ অন্যান্য মাঝারী ও ছোট শিল্প যেমন পাট, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা, ফার্মাসিটিক্যাল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আইসিটিসহ অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতের রপ্তানির বাজার ধরে রাখতে ও বাজারে বৈচিত্র নিশ্চিত করতে আমরাদেরকে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি। রিজওয়ান রাহমান ২০২৬ সাল পরবর্তী সময়ে দেশের রপ্তানিখাতের লাইফলাইন সমুন্নত রাখার জন্য সম্ভাব্য রপ্তানিমুখী শিল্প ও সম্ভাবনাময় খাতের চ্যালেঞ্জগুলো সনাক্ত করে তার থেকে উত্তোরণের কৌশলগত সুপারিশমালা নির্ধারনের উপর জোরারোপ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান এবং সিইও এ এইচ এম আহসান জানান, স্বল্পোন্নত দেশ হবে বাংলাদেশের এ অর্জনকে টেকসই করার লক্ষ্যে সরকারের নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানী পণ্যের বাজার মূলত ইউরোপ ও আমেরিকা ভিত্তিক, তবে সময় এসেছে বর্তমান বাজারের বাইরে বিশেষকরে আফ্রিকা, ল্যাতিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাজার সম্প্রসারণে মনোযোগী হতে হবে এবং পণ্যের পাশাপাশি সার্ভিস বা সেবা রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করাকে প্রাধান্য দেয়া জরুরি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন, সেই সঙ্গে তৈরি পোশাকের ন্যায় অন্যান্য রপ্তানীমুখী খাতে বন্ডসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার আহ্বান জানান।

সিপিডি-এর সম্মানিত ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ অর্জন বিভিন্ন সূচকে আমাদের ধারাবাহিক উন্নয়নের একটি স্বীকৃতি, তবে এর ফলে অর্থনীতির কোথায়, কি ধরনের প্রভাব পড়বে তার জন্য আমাদের হোম ওয়ার্ক করতে হবে। ডা. মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের দেশিয় আইন ও নীতিমালাগুলোকে ডব্লিউটিও সুপারিশের আলোকে সংশোধন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন খুবই জরুরি।

তিনি আরো বলেন, সেক্টর ভিত্তিক চাহিদাগুলোকে মাথায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে পাশাপাশি বিএসটিআই সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। তিনি সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতা পরিহারের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ‘নেগোশিয়েশন সেল’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন। গবেষণা কার্যক্রমে বরাদ্দকে ব্যয় হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)’র সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল’র জেনারেল ম্যানেজার নাইমুল হুদা, এসিআই মবিলিটি, প্লাস্টিক অ্যান্ড এগ্রিবিজনেস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ড. এফ এইচ আনসারী, লেদারগুডস্ অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি অনার্স এসোসিয়েশন (বিইআইওএ)-এর সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক অংশ নেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App