×

রাজধানী

অর্থনৈতিক উন্নয়নে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধিতে বিনিয়োগ জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ০৪:২৫ পিএম

অর্থনৈতিক উন্নয়নে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধিতে বিনিয়োগ জরুরি

আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটারএইড

আগামী দুই দশক পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধিতে (ওয়াশ) বড় অংকের বিনিয়োগ করে সবার জন্য সুপেয় পানি, পরিচ্ছন্ন টয়লেট এবং হাইজিন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারে।

 বুধবার (৭ জুলাই) আর্ন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়াটারএইড এর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্যের জন্য কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) খাতে সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আর্ন্তজাতিক দাতাগোষ্ঠীদের বিনিয়োগ অপরিহার্য, যা অর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এবং ভবিষ্যতে অতিমারি মোকাবিলার প্রস্তুতি পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন প্রকল্পগুলোতে যুক্তরাজ্য সরকারের দ্বিপক্ষীয় বৈদেশিক তহবিল ৮০ শতাংশের বেশি কর্তনের পর এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। ‘মিশন ক্রিটিক্যাল: ইনভেস্ট ই ওয়াটার, স্যানিটেশন এন্ড হাইজিন ফর এ হেলদি এন্ড গ্রিণ ইকোনমি রিকভারি’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ একটি মজবুত 'সবুজ' অর্থনৈতিক প্রণোদনামূলক বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রণীত এ প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়ায় ওয়াশ খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও সময়-সাশ্রয়ী বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি বিশেষত: নারী, মেয়েশিশু এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুবিধা প্রাপ্তি বিষয়ে কিছু কেস ষ্টাডির উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশ বন্যার কবলে পড়ে বন্যা পুনর্বাসন ও ওয়াশ (ওয়াশ) সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে ব্যয় হয় প্রায় ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অথচ, জলবায়ু সহিষ্ণু পরিসেবার জন্য মাত্র ৯ কোটি ডলার ব্যয় করলে এই ক্ষতি এড়ানো যেতো।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার কারণে লবনাক্ত পানির প্রবেশ নিরাপদ পানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং এর ফলে প্রতি বছর দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং তাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় নলকুপ থেকে পানি সংগ্রহ করা একটি সাধারণ বাস্তবতা। মৌলিক পানি পরিসেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিশ্বে প্রতি বছর নারীর ৭ কোটি ৭০ লাখ কর্মদিবস বাঁচানো সম্ভব, যা তাদের কাজের ও জীবিকার বিকল্প সুযোগ খুঁজতে সহায়তা করতে পারে।

দীর্ঘ সময় ধরে নারীর অপরিশোধিত শ্রম ওয়াশ খাতে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি আরও অবনতি হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ওয়াশ খাতে পর্যাপ্ত ও লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগ এ পরিস্থিতির উত্তরণে এবং একই সঙ্গে জেন্ডার সমতা বাড়াতে সহায়তা করবে।

এ বিষয়ে ওয়াটারএইডের প্রধান নির্বাহী টিম ওয়েনরাইট বলেন, অতিমারির আগের পরিস্থিতি আবার ফেরত নাও আসতে পারে। কোভিড-১৯ মোকাবিলা, সম্ভাব্য অতিমারির প্রস্তুতি এবং সবুজ বা পরিবেশবান্ধব পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিনকে প্রাধান্য দিয়ে সঠিক কাজটি করতে এবং সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে আমরা সরকার, দাতাসংস্থা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ওয়াশ খাতে অধিক বিনিয়োগ করে তুলনামূলক কম ব্যয়ে অর্থনৈতিক সুযোগ ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণের সম্ভাবনা উন্মোচন করা সম্ভব। কোভিড পরবর্তী প্রণোদনা ব্যয়ের মূল উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নে এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকিসমূহ মোকাবিলায় এই বিনিয়োগ সহায়ক হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App