×

জাতীয়

লকডাউন বাড়ছে কি না জানা যাবে মঙ্গলবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ০৯:১৩ পিএম

করোনা সংক্রমণ না কমায় আরো সপ্তাহখানেক বাড়তে পারে চলমান লকডাউন । আগামী মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। রবিবার (৪ জুলাই) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর সংখ্যা দেড়শ’র বেশি। তাই লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কতদিন বাড়তে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সপ্তাহ খানেক হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনায় যে হারে মৃত্যু ও আক্রান্ত হচ্ছে, লকডাউন বাড়ানো ছাড়া সরকারের কাছে অন্য কোনো পথ খোলা নেই। মানুষের জীবন রক্ষায় লকডাউন অন্তত আরও সাতদিন বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়ে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, এবারের পরিস্থিতি ভয়ানক। কারণ এবারের যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট তা অত্যন্ত ভয়ানক। যারা ভেবেছিলেন, করোনা শুধু বড়লোকদের সংক্রমিত করে, তারা এবার বুঝতে পারছেন করোনা কাউকেই ছাড়ে না। এই ভ্যারিয়েন্ট শহর-গ্রাম সর্বত্র দ্রুত ছড়ায়। এই ভয়াবহতা থেকে মানুষকে রক্ষা করতেই লকডাউন আরও সাতদিন বাড়াতে হবে। লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামও। গত ২৮ জুন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ৭ দিন পর এই লকডাউন বাড়ানোর বিষয় বিবেচনায় রয়েছে। এর আগে গত ২৪ জুন জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউনে’র সুপারিশ করা হয়। কমিটির সুপারিশের আলোকে ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন তিন দিন সীমিত পরিসরে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এরপর ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় কঠোর লকডাউন। যা চলবে ৭ জুলাই পর্যন্ত। নতুন করে ৭ দিন সময় বাড়ানো হলে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কঠোর লকডাউন। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে সরকার এ বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে লকডাউন দিয়ে আসছে। দেশব্যাপী লকডাউনের পাশাপাশি এবার স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ লকডাউন জারি করে। কিন্তু তারপরও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সারা দেশে কঠোর লকডাউন দেওয়া হয়। চলমান লকডাউনের সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, শপিং মল, দোকানপাট এবং গণপরিবহন ছাড়াও যন্ত্রচালিত যানবাহন (জরুরি কাজে নিয়োজিত ছাড়া) চলাচল বন্ধ রয়েছে। সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র, জনসমাবেশ হয়-এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও বন্ধ। অতি জরুরি প্রয়োজন (ওষুধ-নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার ইত্যাদি) ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে মানা করেছে সরকার। নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার ও জরিমানা করা হচ্ছে। এবার বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য টহলে নেমেছে সেনাবাহিনী। তবে শিল্পকারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, রাজস্ব আদায় কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রয়েছে। বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, নৌ, স্থল) ও সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাবেচা করতে দেওয়া হচ্ছে। টিকা কার্ড দেখিয়ে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাচ্ছে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইনে কেনা বা খাবার নিয়ে যাওয়া) করতে পারছে। তবে হোটেলে বসে খাওয়ায় রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বিধিনিষেধের সময় সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা চালু চলবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App