×

শিক্ষা

জবি সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ডরমেটরির রুম দখলের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২১, ১১:০২ এএম

জবি সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ডরমেটরির রুম দখলের অভিযোগ

ডরমেটরি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষকদের আবাসিক ভবন ডরমেটরিতে সহকারী প্রক্টর শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে আরেক শিক্ষকের নামে বরাদ্দ হওয়া রুম দখলের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক স্বপ্নীলা চৌধুরীর নামে রুমটির লিখিত বরাদ্দপত্র রয়েছে। প্রতি মাসে বেতন থেকে কক্ষের ভাড়া কেটে নেওয়া হলেও তিনি পাচ্ছেন না নির্ধারিত রুমটি। অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর সেখানে বহিরাগত শিক্ষার্থী তার নিজের বোনকে থাকতে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজের নামে বরাদ্দকৃত রুম না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।

অভিযোগপত্রে প্রভাষক স্বপ্নীলা চৌধুরী উল্লেখ করেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর বাসা দূরে (সিলেটে) হওয়ায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের এপ্রিল থেকে থাকার জন্য ডরমেটরির (৬০৪A) কক্ষটি আমার নামে লিখিতভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। করোনার কারণে এপ্রিলে উঠতে না পারায় ১ জুন নির্ধারিত রুমে উঠতে গেলে পাশের (৬০৪B) কক্ষে অবস্থানরত সহকারী প্রক্টর শাহনাজ পারভীন বলেন, আমাকে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কীভাবে কক্ষটি বরাদ্দ দেন বলে প্রশ্ন তুলেন। নবনিযুক্ত উপাচার্যের সভায় বরাদ্দ পেতে হবে বলে জানিয়ে দেন। এই রুমটি তার বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকের। মাঝেমধ্যে তিনি এখানে আসেন।

অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, সেসময় আমার নির্ধারিত রুমে বহিরাগত শিক্ষার্থী ওনার বোন অবস্থান করছিলেন। বুয়েটে পরীক্ষার কারণে সে কিছু দিন এখানে অবস্থান করবে বলে তাকে জানান অভিযুক্ত শিক্ষক।

অভিযোগে আরও বলা হয়, হিসাব দপ্তরের ফাইলে স্বপ্নীলা চৌধুরীর নামে কক্ষ বরাদ্দসহ দুই মাসের বেতন থেকে কক্ষের ভাড়া কর্তনের কাগজপত্র দেখানোর পরেও সহকারী প্রক্টর রুম ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। তখন প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় ছাড়া অন্য কোনো আসবাবপত্র না আনার শর্তে কিছু দিন অতিথি হিসেবে থাকতে বলেন। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানালে জরুরি মিটিং এ রুমের সমস্যা সমাধান করা হবে জানিয়ে আপাতত ৬০২ নং ইউনিটে A, B রুম উল্লেখ না করে থাকতে বলা হয়। কিন্তু ১০-১২ দিন থাকার পর এই দুই রুমের বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষিকারা এখানে উঠবেন জানিয়ে তাদের রুম ছাড়তে বলেন। বরাদ্দপত্র থাকা সত্ত্বেও এবং প্রতিমাসে বেতন থেকে কক্ষের ভাড়া কেটে নেওয়া হলেও নির্ধারিত রুম পাচ্ছেন না বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রেজিস্ট্রারকে অনুরোধ করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর শাহনাজ পারভীন ভোরের কাগজকে বলেন, আমার বোন পরীক্ষার জন্য আমার সঙ্গে অবস্থান করছে। পাশের রুমে আমার বিভাগের এক ম্যাডাম ওঠার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাই আমি স্বপ্নীলাকে পরবর্তী মিটিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে বলি। পরবর্তী সময় কী হয়েছে জানি না।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে স্বপ্নীলা চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, অভিযোগপত্রে আমি যা উল্লেখ করেছি এটাই সত্য। আমি বরাদ্দপত্র নিয়ে ডরমেটরিতে গেলেও আমাকে উঠতে দেওয়া হয়নি। আমার রুমে ওনার বোন পড়ালেখার জন্য অবস্থান করছিলেন। তাই গেস্ট হিসেবে ওনার সঙ্গে থাকতে বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। আমি তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডরমেটরির কয়েকজন শিক্ষক বলেন, এখানে নীতিমালার প্রয়োগ না থাকায় যে তদবির করতে পারে তার থাকার সুযোগ মিলে। অনেক জুনিয়র প্রভাষক সমস্যা সত্ত্বেও সুযোগ পান না। অথচ সুযোগ পান বিভাগের চেয়ারম্যান ও তার ছেলে।

এ সময় শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সার্ভিস চার্জ নেওয়া হলেও এখানে নেই কোনো সিসি ক্যামেরা, সিকিউরিটি গার্ড বা কেয়ারটেকার। কে ভবনে আসে-যায় দেখার যেন কেউ নেই।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ডরমেটরি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। যার বরাদ্দ আছে সে উঠবে। সবাইকে নোটিসের মাধ্যমে জানানো হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App