×

জাতীয়

কোথাও পুরনো কমিটি বহাল থাকবে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২১, ০৮:৪৬ এএম

কোথাও পুরনো কমিটি বহাল থাকবে না

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, সারাদেশে তৃণমূল থেকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে তৃণমূলকে ঢেলে সাজানো হবে। কোথাও কোনো পুরনো কমিটি থাকবে না। দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ভোরের কাগজকে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেন মির্জা আজম। দায়িত্ব পালন করেছেন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের। এরপর টানা ১০ বছর ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রাজপথে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা রেখেছেন। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হন। বর্তমানে জাতীয় সংসদের সদস্য। ছিলেন জাতীয় সংসদে সরকারদলীয় হুইপ। ছিলেন সরকারের পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী। বর্তমানে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলন না হওয়া ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। এসব নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন ভোরের কাগজের সঙ্গে।

মির্জা আজম বলেন, ঢাকা বিভাগে ১৭টি সাংগঠনিক জেলা। নির্বাচনী আসন হচ্ছে ৬৯টি। শতাধিক উপজেলা। সাংগঠনিক থানাও দুই শতাধিক। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জেই সবচেয়ে পুরনো কমিটি রয়েছে। করোনার কারণে আপাতত সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ আছে। কিছু কাজ শুরু করেছিলাম। সম্প্রতি ঢাকা জেলার নেতাদের নিয়ে বসেছিলাম। সেখানকার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জুলাই, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ঢাকা জেলার সব থানার সম্মেলন শেষ করব। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা জেলার সম্মেলন করব। ২৭ জুন কিশোরগঞ্জে বর্ধিত সভার তারিখ নির্ধারণ ছিল। ১৫ জুলাই রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা আর ২৯ জুলাই সম্মেলনের কথা ছিল। লকডাউনের কারণে সেটা পেছাতে হবে। এছাড়া আরো কিছু জেলায় বর্ধিত সভা ও সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণে আমরা কাজ করছি।

ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে দুর্বল সংগঠন ঢাকা মহানগর। কোনো চর্চা না থাকায় মহানগরের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের জড়তা চলে এসেছে। আমরা সচল করার চেষ্টা করছি। যেহেতু আমি ঢাকা সিটি রাজনীতির স্পর্শেই ছিলাম। আমার কিছুটা ধারণা আছে। যার কারণে কীভাবে কাজ করতে হবে, সেটা আমি বুঝি।

তার মতে, ঢাকা মহানগর উত্তর মোটামুটি সচল হয়েছে। দক্ষিণ কিছুটা পিছিয়ে আছে। সমান্তরালভাবে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। ২০১৬ সাল থেকে থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো শুধু সভাপতি-সাধারণ দ্বারা চলছে। পাঁচ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। আমরা তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার সুযোগ দিচ্ছি না। এজন্য ইউনিট থেকে কাজ শুরু করেছি, এরপর থানা ও ওয়ার্ডের সম্মেলন হবে। আগামী কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে আমরা এগুলো শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।

কিশোরগঞ্জের কমিটি প্রসঙ্গে মির্জা আজম বলেন, কিশোরগঞ্জ হলো সারা দেশের মধ্যে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে পুরনো জেলা কমিটি। এখানকার সবচেয়ে নতুন থানা কমিটির বয়সও ১৯ বছর। সেখানে ২৭ বছরের পুরনো থানা কমিটি বহাল আছে। এমনও কমিটি আছে যে কমিটির ৫ ভাগের ৪ ভাগ লোক মারা গেছে। একটা কমিটির ৫১ জনের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছে। আরেকটা আহŸায়ক কমিটির ৩৭ জনের মধ্যে ২৯ জনই মারা গেছে। কিশোরগঞ্জের সেই কমিটিগুলো এখনো চলছে। তবে ২৭ জুন আমরা বর্ধিতসভার একটা তারিখ দিয়েছিলাম। লকডাউনের কারণে হয়নি। পরিস্থিতি ভালো হলেই সেখানে বর্ধিতসভা করে নতুন কমিটি করব।

সাংগঠনিক কাজে বাধা বা সমস্যা মোকাবিলা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাধা নয়, কিছু জটিলতা আছে। দায়িত্বশীল নেতাদের অনেকেই দলের গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চেয়ে ব্যক্তিগত ইচ্ছার প্রকাশকে বেশি মূল্য দিতে চান। এটাই মূল চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করতে বলি। এটা হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

তৃণমূলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় কোন্দলকে খুব বড় করে দেখছি না। আওয়ামী লীগ পুরনো দল। নেতা ও কর্মীর সংখ্যা বেশি। সমাধানের জন্য বসলেই কোন্দল মেটানো যায়। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় সাংগঠনিক কাজে অনেকের আগ্রহ কমে গেছে। ব্যক্তিগত ব্যবসা নিয়ে বেশি মনোযোগী। এটাই বড় বাধা। এ কারণে আগামীতে নতুন কমিটিগুলোয় সংগঠনের প্রতি যাদের মহব্বত ও আত্মার টান আছে, তাদেরকেই স্থান দেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App