শিক্ষার্থীরা চাইলে অনলাইনে পরীক্ষা নিবে কুবি: উপাচার্য
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২১, ০৯:৪৭ পিএম
অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ
শিক্ষার্থীদের মতামতের উপর ভিত্তি করেই অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
করোনা মহামারির মধ্যে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। দীর্ঘসময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সেশনজটের কবলে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সেশনজট থেকে মুক্ত হতে অনলাইন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক প্ল্যাটফর্ম গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষার দাবি জানিয়ে অনেক শিক্ষার্থী সোচ্চার হয়েছেন। একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী মানজুরুল ইসলাম ফেইসবুকে বলেন, যেখানে দেশে বাহিরের সকল বিশ্ববিদ্যালয় গুলো করোনা মহামারী কারনে অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট নামের অভিশাপ থেকে মুক্তি করে দিচ্ছে। অথচ আমরা পিছিয়ে রয়েছি। শিক্ষার্থীদেরকে ৪ বছরে অনার্স শেষ করে দিবে বলে ভর্তি করানো হয় কিন্তু সেটা শেষ হয় ৬ বছরে, এই সেশনজট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরে আমরা উপায়ান্তর না দেখে আন্দোলন করে দুইবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে বসেছি, কিন্তু সরকারি বিধিনিষেধের কারণে পরীক্ষা গুলো বার বার মাঝখানে বন্ধ হয়ে গেছে, অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে অনেকগুলো ব্যাচের পরীক্ষা। ফলে চরম সেশনজট পোহাতে হচ্ছে আমাদের। করোনার কারণে কবে যে মানুষ স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবে সেটার কোন নির্দিষ্ট ধরাবাধা সময় নেই, এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত যত দ্রুত সম্ভব অনলাইনে পরীক্ষা গুলো সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের সেশনজট মুক্ত করা। আশা করি প্রশাসন এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।
এরমধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গত ২৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী ডিজেস্টার রিকভারী গাইডলাইন প্রণয়ণ ও অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে দুইটি কমিটি করা হয়েছ।
অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমরা কমিটি করে দিয়েছি, ওরা কাজ করছে। আমাদের পক্ষ হতে ইউজিসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, এ মুহূর্তে আমাদের সামর্থ্য ও লোকবল সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আমাদের কমিটি কাজ করছে। আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী ভাইভা, প্রেজেন্টেশন গুলো এখন অনলাইনেই নিচ্ছি। সব শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবো।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে গেল বছরের ১৭ মার্চ হতে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। এরমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গেল বছরের ২০ ডিসেম্বর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া শুরু করলেও চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারী তা স্থগিত করে। সর্বশেষ চলতি মাসের ১৩ জুন হতে স্বশরীরে আবারও পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ায় পরীক্ষা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ২৫ জুন পুনরায় সব পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়। এরপর হতেই শিক্ষার্থীদের অনেকেই অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাতে থাকে।