×

জাতীয়

জুমায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২১, ০৫:৫৫ পিএম

জুমায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায়। ছবি: ভোরের কাগজ

কঠোর লকডাউন চলাকালীন মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিদের জন্য বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২ জুলাই) দেশের বেশিরভাগ মসজিদে জুমার নামাজে অংশ নেয়া মুসল্লিদের এসব শর্ত মানতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মসজিদ কর্তৃপক্ষও ছিল উদাসীন। যদিও মসজিদের মাইক থেকে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ অল্প সংখ্যক মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিসভার বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারির পর মসজিদে নামাজ আদায় করা মুসল্লিদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কতিপয় শর্ত বেঁধে দেয়। শর্তের মধ্যে রয়েছে, মসজিদের ফটকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখা, মুসল্লিদের মাস্ক পরে মসজিদে আসা, বাসা থেকে অজু এবং সুন্নত নামাজ আদায় করে আসা, মসজিদে কার্পেট না বিছিয়ে নিজ নিজ জায়নামাজ আনা, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা। এছাড়া নামাজে দাঁড়ানোর সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা এবং শিশু, বৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি ও অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তির জামায়াতে অংশ না নেওয়া। গতকাল জুমার নামাজের আগে দেশের বেশিরভাগ মসজিদে এসব স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকিংও করা হয়। তবে তা কানে তোলেননি মুসল্লি ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

জুমার নামাজে অধিকাংশ মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা জীবাণুনাশক দেখা যায়নি। বাসা থেকে অজু করা বা জায়নামাজ নেয়ার শর্তও মানেননি অনেকে। অধিকাংশ মসজিদও কার্পেট তোলেনি। নামাজে দাঁড়ানোর সময় সামাজিক দূরত্ব দূরে থাক মাস্কও ছিল না অনেক মুসল্লির মুখে। ঢাকার রায়ের বাগ এলাকার রশিদিয়া জামে মসজিদে আসা মুসল্লি আব্দুর রহমান বলেন, আমি বাসা থেকে অজু করে এবং সুন্নত পড়ে ও জায়নামাজ নিয়ে মসজিদে আসলেও এসে দেখি অন্যরকম পরিস্থিতি। এখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে খুব কম লোকে। অথচ এর আগে মসজিদের মাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসার জন্য বলা হয়েছিল। এছাড়া সেগুনবাগিচাস্থ বায়তুল আমান জামে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি ফয়সাল হোসেন বলেন, কেউই তো স্বাস্থ্যবিধি মানছেনা। দুই-চারজন মানলে কী হবে? সবাই মানলে ভালো হতো।

এ বিষয়ে মতিঝিল বায়তুন নূর জামে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে রাজধানী মালিবাগের দায়ী ইল্লাল্লাহ জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি খায়রুজ্জামান বলেন, আসলে লোকজন যে যার স্থান তেকে যতক্ষণ না পর্যন্ত সচেতন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নিয়ম মানা সম্ভব হবে না। আমরা কতক্ষণ পাহারা দিব। মাদেরও তো নামাজ আদায় করতে হয়। তবুও আমরা মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। তবুও তারা সচেতন না হলে আমরা কি আর করতে পারি। আমাদেরও তো সীমাবদ্ধতা আছে।

এদিকে কঠোর লকডাউনের পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে গতকাল বিভিন্ন স্থান থেকে বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক অনেক কম। ফলে জাতীয় মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা ছিল লক্ষনীয়। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে নামাজ আদায় করেছেন উপস্থিত মুসল্লিরা। অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক ফাঁকা ছিল মুসল্লিদের চলাফেরা ও অবস্থান। মূল চত্বর ছাড়া বারান্দা-সিঁড়িসহ বিভিন্ন স্থান প্রায় খালি ছিল। যেখানে অন্যান্য জুমায় নিচের মার্কেট চত্বর বা আশপাশের ফাঁকা স্থানে কাতার করে নামাজ আদায় করতে দেখা যায় মুসল্লিদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App