×

অপরাধ

কারাগারে রফিকুলের জুম মিটিং: চার কারারক্ষী সাসপেন্ড, মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২১, ০৮:০৯ পিএম

হাসপাতালের প্রিজন সেলে বসেই ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের জুম মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার ঘটনায় ১৭ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত দুই মাসে বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে দায়িত্ব পালন করা ৪ জন প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। তারা হলেন, মো. ইউনুস আলী মোল্লা, মীর বদিউজ্জামান, মো আব্দুস সালাম এবং মো. আনোয়ার হোসেন। বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭ জন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ৬ জন সাধারণ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (২ জুলাই) সন্ধায় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ ভোরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এরআগে, এ ঘটনা তদন্তে গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা অধিদপ্তর।

ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজনস) তৌহিদুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জড়িত সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন।

সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, দুই মাস আগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি হন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কারাবন্দি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন। গত মে ও জুনে তিনি হাসপাতালে বসে মোবাইল ফোন ও জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর আমাদের নজরে আসে। ওই সময়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত কারারক্ষীদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য ১৭ জন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিএসএমএমইউ প্রিজন সেলে দায়িত্ব পালন করা ৪ জন প্রধান কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে ৭ জন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ৬ জন সাধারণ কাররক্ষীদের বিরুদ্ধে। যদি আরও কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডেসটিনির রফিকুল আমিনের দায়িত্বে থাকা প্রধান কারারক্ষী আবদুস সালামসহ আট কারারক্ষীকে প্রত্যাহার করার কথা গত বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছিলেন সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ। পরে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ১৭ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

প্রসঙ্গত কারাকর্তৃপরে তত্ত্বাবধানে দুই মাস আগে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি হন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কারাবন্দি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন। গত মে ও জুনে তিনি হাসপাতালে বসে মোবাইল ফোন ও জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে কারা অধিদপ্তর। রফিকুল আমিনের জুম মিটিং ভিডিওতে তার নতুন এমএলএম ব্যবসা শুরু করার বিষয়টি প্রকাশ পায়। হাসপাতালে থাকার কারণ হিসেবে তিনি ডায়াবেটিসের কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে।

রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে দুটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ১১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেন। ২০১৪ সালের ৪ মে দাখিল করা অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় মোট ৫৩ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ৯৬ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App