×

জাতীয়

সড়ক-মহাসড়কে পুলিশের চেকপোস্ট, টহলে সেনা-বিজিবি (ভিডিও)

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২১, ১১:১৯ এএম

সড়ক-মহাসড়কে পুলিশের চেকপোস্ট, টহলে সেনা-বিজিবি (ভিডিও)

করোনা সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধে কঠোরতার মধ্যদিয়েই সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়ক মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশ চেকপোস্ট। টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনী। রিক্সা ও পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া রাস্তায় অন্য কোনো যানবাহনের চাপ নেই। বিভিন্ন অফিস শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় সেসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করছেন। তবে তাদেরকেও পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। রাজধানীর সব এলাকার দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। খোলা রয়েছে হোটেল রেস্টুরেন্ট সহ খাদ্যপণ্যের দোকান এবং কাঁচা বাজার। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল করলেও দেশের অন্য মহাসড়কগুলোতে কিছু পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া আর কোনো যানবাহন চলছে না।

রাজধানীর গাবতলী এলাকায় আজও কঠোর লকডাউন প্রয়োগের প্রথম দিনেও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের চলাচল দেখা গেছে। এদের মধ্যে নিম্নআয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া অন্যান্য শ্রেণী ও পেশার লোকজনও ঢাকা ছাড়ছে। এই সড়কে কিছু কিছু যানবাহন চলাচল করছে। রাজধানীর বেশির ভাগ সড়ক কি এখন সুনসান নীরবতা। সড়কের পাশের সব দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র রেস্টুরেন্ট এবং ঔষধের দোকান খোলা রয়েছে। গাবতলী পুলিশ চেকপোস্ট দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা প্রয়োজন হলেই গাড়ি থামিয়ে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চায়। ভোর রাত থেকে বিপুল সংখ্যক ট্রাক, মিনি ট্রাক, রিক্সা ভ্যান সবজি ও কাঁচামাল নিয়ে গাবতলী দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। সকালের দিকে এসব যানবাহনগুলোকে গাবতলী ব্রিজ পার হয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। ভোর থেকে নিম্ন আয়ের সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ গাবতলী পুলিশ চেকপোস্ট পার হয়ে নির্বিঘ্নেই আমিন বাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। তাদেরকে কোন ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। কারণ তাদেরকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে কাজ না থাকায় তারা ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। অনেক দিন মজুরের হাতে কোদাল ও বেলচা ছিল। সাইদুল নামের এক নির্মাণ শ্রমিক জানান, লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ তাই তিনি রাজবাড়ীর গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। কাজ না থাকায় ঢাকায় বাসা ভাড়া দিয়ে তুমি চলতে পারবেন না। তার সঙ্গে মানিকগঞ্জ আপনার এলাকার কয়েকজন শ্রমিক রয়েছেন। তারা জানালেন ভেঙে ভেঙে তারা পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত যাবেন। তারপর ফেরি পার হলেই বাড়ি পৌছতে কোনো সমস্যা হবে না।

কলাবাগান বাস স্ট্যান্ডের সামনে পুলিশের চেকপোষ্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সব ধরনের যানবাহন এবং লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া ছাড়ছে না। ফার্মগেট এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মানুষের চলাচল তুলনামূলকভাবে সকালে দিয়ে কিছুটা বেশি দেখা গেছে। এর কারণ হচ্ছে এসব এলাকায় গার্মেন্ট গুলো খোলা থাকায় আশেপাশের এলাকা থেকে শ্রমিকরা সকালে কর্মস্থলের দিকে রওনা দেয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের আইডি কার্ড চেক করে এবং যেতে দেয়। সায়েন্স ল্যাবরেটরী, আসাদগেট, বিজয় স্মরণী মোড়, মোহাম্মদপুর রিং রোড, এলাকায়ও পুলিশ কঠোর বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে ব্যাপক তৎপরতা।রাজধানীর মিরপুর রোডে সকাল থেকেই অপেক্ষাকৃত কম যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে। জরুরি পণ্য বহনকারী যানবাহন ছাড়া অন্যকোনো যানবাহন খুব একটা চোখে পড়েনি। এলিফ্যান্ট রোড বাটা সিগন্যাল মোড়ের চেকপোস্টে পুলিশকে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি চেকপোস্টই গত কয়েকদিনে ২/৩ জন পুলিশ সদস্য উপস্থিত থেকে যানবাহন তল্লাশি এবং লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এসব চেকপোষ্টে পুলিশের জনবল কয়েকগুণ বাড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছে। প্রতিটি চেকপোষ্টে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

নগরীর আব্দুল্লাহপুর এলাকাতেও পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এই এলাকার দিয়েও আজ ভোর থেকে অনেক লোকজন ঢাকা ছেড়েছে। তোরে গাজীপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। কাজ না থাকায় তারাও গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ অংশে হাইওয়ে পুলিশ ছয়টি চেকপোস্ট বসিয়েছে। এই মহাসড়কে যন্ত্রচালিত যানবাহন যেন চলাচল করতে না পারে সেজন্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের সড়কে সকাল থেকেই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। লকডাউন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঢাকা মাওয়া মহাসড়ক শিমুলিয়া বাংলাবাজার ফেরিঘাটে যানবাহন ও সাধারন মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর একটা অংশ এখানে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের দায়িত্ব পালন করছে। শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরি চলাচল করলেও শুধুমাত্র পণ্যবাহী যানবাহন, এম্বুলেন্স সহ জরুরী পরিবহনের যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। শিমুলিয়া ফেরিঘাট একরকম ফাকাই বলা চলে। মানিকগঞ্জের আরিচা, পাটুরিয়া এবং রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ফেরিঘাট একেবারেই ফাঁকা রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘাটগুলো ফাঁকা রয়েছে। যানবাহন এবং মানুষজনের কোনো চাপ নেই। এম্বুলেন্স জরুরী পরিবহন গুলো নির্বিঘ্নেই পারাপারের কাজ চলছে। ফেরিঘাটে পুলিশ ও বিজিবি সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছে।

https://youtu.be/o6ZJEsLRheE

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App