ক্রিকেট মাঠে মেজাজ হারিয়ে বিতর্কের জন্ম দেয়া সাকিব আল হাসানের জন্য নতুন কিছু নয়। তিনি মাঠে দর্শক বা সতীর্থদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে এর আগেও অনেক বার খবরের শিরোনাম হয়েছেন। এবার বাজে আচরণের রাজা খেতাব পেলেন সাকিব। তাকে এ খেতাবে আখ্যায়িত করেছে জনপ্রিয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো। ক্রিকেটের আলোচিত বিষয় নিয়ে ক্রিকইনফোর মাসিক আয়োজন দ্য ব্রিফিং। যেখানে মূলত বিগত দিনগুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে কৌতুকের ছলে তুলে আনে তারা।

গত ২৩ জুন শেষ হয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর। জমজমাট এ টুর্নামেন্টে ভারতকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের চোখে যোগ্য দলের মাথায় উঠেছে টেস্ট সেরার মুকুট। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ছাপিয়ে বাজে আচরণের চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে হাজির হয়েছে ক্রিকইনফো। যেখানে তারা বিশ্লেষণ করেছে বিগত দিনগুলোতে খেলোয়াড়ের বাজে আচরণের সব ঘটনা। যেখানে উঠে আসে সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচের ঘটনা।

গত ১১ জুনের ম্যাচটিতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে স্ট্যাম্পে লাথি মারেন সাকিব। পরে বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হলে তিনটি স্ট্যাম্প তুলে মাটিতে আছাড় মারেন তিনি। এ ঘটনায় সাকিবকে ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার শাস্তি দেয়া হয়। এ শাস্তি ভোগ করে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচটিও খেলেছিলেন সাকিব। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শেষে এর সঙ্গে মিল রেখে নিজেদের মাসিক আয়োজন দ্য ব্রিফিংয়ে বাজে আচরণের চ্যাম্পিয়নশিপের একটা ধারণা তুলে আনে ক্রিকইনফো। সেখানেই বাকি সবাইকে ছাপিয়ে ‘ব্যাড বিহেভিয়ার কিং’ তথা বাজে আচরণের রাজা হিসেবে সাকিবের নাম উল্লেখ করেছে তারা।

একই প্রতিবেদনে বাজে আচরণ করা শ্রীলঙ্কার তিন ক্রিকেটার কুশল মেন্ডিস, নিরোশান ডিকভেলা ও নিরোশান গুনাথিলাকার নাম উল্লেখ করেছে তারা। কেননা জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মাঝে জৈব সুরক্ষা বলয় ভঙ্গের মতো গর্হিত কাজ করেছেন তারা তিনজন।

এ বিষয়ে ক্রিকইনফো লিখেছে, যদি বিশদভাবে বিশ্লেষণ করতে যান সেক্ষেত্রে তিন লঙ্কান ক্রিকেটারের ঘটনাকে সামান্যই মনে হবে। বাজে আচরণে এদের সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন সাকিব আল হাসান। তিনি জানতেন খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে এবং মিডিয়াও সেখানে নজর রেখেছে। এরই মাঝে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে প্রথমে আউটের আবেদনে সিদ্ধান্ত পছন্দ না হওয়ায় স্ট্যাম্পে লাথি মারা এবং পরে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ করার ঘোষণা দিলে স্ট্যাম্প তুলে মাটিতে আছাড়া মেরেছেন।

অথচ ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন রাখার দায়ে পাওয়া নিষেধাজ্ঞার এখনও দুই বছর হয়নি সাকিবের। এর সঙ্গে রয়েছে তার আগের নানান কীর্তি। যেমন খেলা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি (নিদাহাস ট্রফি), আম্পায়ারের ওপর রাগ দেখানো (বিপিএল), একজন দর্শককে শারীরিক প্রহারসহ আরও অনেক কিছু। যেগুলো সত্যিই দেখার বিষয়। যদি সত্যিই বিশ্ব বাজে আচরণের কোনো চ্যাম্পিয়নশিপ হয়, তাহলে সে ট্রফি উঠবে সাকিবের হাতে। কিন্তু তার হাতে ট্রফিটি তুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে ভোঁ দৌড় দিতে হবে শুধু। কারণ অবশ্যই তিনি এটিকেও ছুঁড়ে মারবেন আপনার দিকে।