×

অর্থনীতি

বিকল্প উপায়ে প্রণোদনার ঋণ বিতরণের পরামর্শ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১, ১০:৩৬ পিএম

বিকল্প উপায়ে প্রণোদনার ঋণ বিতরণের পরামর্শ

আইবিএফবি ও বিইআই আয়োজিত বাজেট আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ছবি: ভোরের কাগজ

দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে এবং গ্রামের ৯০ শতাংশ মানুষ ব্যাংক বহির্ভূত। সরকারের সব প্রণোদনা এবং ঋণ ব্যাংক সম্পৃক্ত। তাই গ্রামের মানুষের প্রণোদনা পাওয়ার সুযোগ নাই। কিন্তু এ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরতদের অর্থায়ন কীভাবে করতে হবে সে কৌশল বাজেটে নেই। ব্যাংক বর্হিভূত এসব খাতে কর্মরতদের প্রণোদনার অর্থ পৌঁছাতে হলে বিকল্প উপায় চিন্তা করতে হবে। এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রস্তাবিত বাজেট ও বেসরকারি খাত নিয়ে শনিবার (২৬ জুন) ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট (বিইআই) আয়োজিত এক বাজেট আলোচনায় এ সুপারিশ করা হয়।

আইবিএফবির সভাপতি হুমায়ূন রশীদের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আলোচক ছিলেন আইবিএফবির আইনী অর্থনীতিবিদ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএস সিদ্দিকী, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ এবং ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মোহাম্মদ মাহফুজ কবির। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান।

বক্তারা বলেন, করোনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত্র। কিন্তু সরকার ঘোষিত প্রণোদনা কিভাবে দ্রুত পৌঁছানো যায় সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। পুঁজি হারিয়ে যাদের ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে তারা কীভাবে ব্যবসায় ফিরবে জানা নেই। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সাত হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন করে ‘লকডাউন’ দেয়া হচ্ছে। তাই লকডাউনের এ সময়ে থোক বরাদ্দের টাকা গরিব মানুষের জন্য খরচ করা যেতে পারে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রণোদনার ঋণ এনজিওগুলোর মাধ্যমে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের সুদহার অনেক বেশি। এজন্য পিকেএসএফ, এসএমই ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা অনুভব করি ঘাটতি আছে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আমি যখন চাকরি শুরু করি, তখন যে অবস্থায় ছিল, এর চেয়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ‘সাগর’ পরিবর্তন করতে পারিনি, কিন্তু ‘পুকুর’ পরিবর্তন করতে পেরেছি।

দুর্নীতি সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি কেউ চায় না। তবু দুর্নীতি বিরাজমান। এটাকে আক্রমণ করার অস্ত্র আপাতত নেই। সরকার চেষ্টা করছে। যেমন, ব্যবসা করতে লাইসেন্স লাগে তেমনি এটা কমাতে হলে আইনকানুন বানাতে হবে।

মূল প্রবন্ধে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাজেটে থোক বরাদ্দ হিসেবে সাত হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এখন আবার লকডাউন দেয়া হচ্ছে। এই সময়ে যেন এ টাকা গরিব মানুষের জন্য খরচ করা হয়। তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে প্রণোদনার টাকা অনেকে নিয়েছেন। ব্যাংকগুলো মনে করছে, তাদের অনেকেই টাকা ফেরত দিতে পারবে না। এজন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে চায় না। বিকল্প উপায়ে ঋণ বিতরণ ব্যবস্থা করার সময় এসেছে ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, রিজার্ভ বাড়লেই তা অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে। আমরা হয়তো শ্রীলঙ্কা ও সুদানকে ঋণ দিয়ে বাহবা নিতে পারব। এই অর্থ বসিয়ে না রেখে অর্থনীতিতে কাজে লাগানো উচিত। রিজার্ভের অর্থ ব্যবহার নিয়ে পরিকল্পনা দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App