×

জাতীয়

হিলিপ প্রকল্পে পাল্টে যাওয়া রোজিনা এখন অনুপ্রেরণার নাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২১, ০২:০০ পিএম

হিলিপ প্রকল্পে পাল্টে যাওয়া রোজিনা এখন অনুপ্রেরণার নাম

মাঝে বসে আছেন রোজিনা আক্তার।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে অভাব ও কষ্ট ছিল যার নিত্যসঙ্গী সেই রোজিনা আক্তারের (৩৩) মুখেই এখন হাসি। আর তার হাসির পেছনের কারণই এখন অনুপ্রেরণা ফতেহপুর গ্রামের হাজারো নারীর। স্বামী-শ্বশুর বাড়ির যন্ত্রনা সইতে না পেরে অভাবী বাবার সংসারে এসে যখন শুধু দু-মুঠো খেয়ে টিকে থাকাই দায়। ঠিক এ সময় তার সামনে আশার আলো হয়ে আসে হাওর অঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (হিলিপ)। এ প্রকল্পের আওতায় দেড়মাস ব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণ পাল্টে দেয় রোজিনার জীবন।

২০১৯ সালে বাবার সংসারে চলে আসেন রোজিনা। এরপরই লেখা-পড়া ও হাতের কাজের জ্ঞান না থাকায় ঘরে বসেই সীমাহীন অভাবে দিন কাটছিল তার। এমন পরিস্থিতিতে হিলিপের এক মাঠকর্মীর সঙ্গে আলাপ হয় তার। ওই মাঠকর্মীই তাকে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণের বিষয়ে জানালে দ্রুতই সেখানে গিয়ে কাজ শেখা শুরু করেন রোজিনা। এর মধ্য দিয়েই সূচনা হয় তার সুখের জীবনে পদার্পনের।

প্রশিক্ষণ শেষে ৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি  সেলাই মেশিন কিনে দর্জির কাজ শুরু করেন। প্রথমদিকে প্রতি মাসে ৩-৪ হাজার টাকা আয় হয় হলেও বর্তমানে তার আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। এরই মধ্যে হিলিপ প্রকল্পের মাধ্যমে নিজসহ আশপাশের গ্রামের প্রশিক্ষণ নেওয়া ২৪ জন নারীকে নিয়ে বাঁধন সেলাই সমিতি নামে একটি সংগঠনও করেন রোজিনা। আর সমিতিকে শক্তিশালী করার জন্য কৃষি ব্যাংকে খোলেন সঞ্চয়ী হিসাব। এখন পর্যন্ত সেই হিসাবে জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে লাখ টাকার ওপরে।

বাধন সেলাই সমিতির এখন ১২টি সেলাই মেশিন নক্সিকাঁথা ও মেয়েদের পোশাকসহ  অন্যান্য পণ্য তৈরি হচ্ছে। এসব পণ্য বিক্রির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্কেট লিংকেজ স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে রোজিনা আক্তার ভোরের কাগজকে জানান, হিলিপ প্রকল্প তার চোখ খুলে দিয়েছে। ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা শুরু করতে আসলে বেশী পূঁজির প্রয়োজন নেই। পরিশ্রমী, উদ্যোগী ও প্রত্যয়ী হলে অতি অল্পতেই সফলতা আসে। এখন তার পরিকল্পনা হচ্ছে বাঁধন সেলাই সমিতির মাধ্যম কাজ করে সমিতির সকল সদস্যকে স্বাবলম্বী করা।

তিনি আরও জানান, এ সমিতির মাধ্যমে নারী নির্যাতন, বাল্য ও বহু বিবাহ প্রতিরোধ এবং যৌতুক বিরোধী কর্মকান্ড প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে কাজ চালিয়ে যাওয়া।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক গোপাল চন্দ্র সরকার ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে প্রকল্প এলাকার সমস্যগ্রস্থদের প্রশিক্ণণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার কাজ করছি। এমনকি তাদেরকে যেকোনো ধরণের সহযোগিতা আমরা প্রকল্পের মাধ্যমে দিয়ে যাচ্ছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App