×

জাতীয়

লকডাউন আতঙ্ক: রাজধানীতে আসছে মানুষ যাচ্ছে মানুষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২১, ০৭:১৪ পিএম

লকডাউন আতঙ্ক: রাজধানীতে আসছে মানুষ যাচ্ছে মানুষ

শাটডাউন আতঙ্কে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ছবি: মামুন আবেদীন

লকডাউন আতঙ্ক: রাজধানীতে আসছে মানুষ যাচ্ছে মানুষ

আমিনবাজার থেকে আরিচা রোড দূরপাল্লার বাসের যানজট। ছবি: মামুন আবেদীন

লকডাউন আতঙ্কে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। আবার যারা ঢাকার বাইরে ছিলেন তারা ঢাকায় ফিরছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষের ঘরে ফেরা ও ঢাকায় ফেরা ঠেকানো যাচ্ছে না। শুক্রবার (২৫ জুন) সকাল থেকে সব পথেই মানুষের চাপ বেড়েছে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও আতঙ্কগ্রস্থ মানুষ আরো বিপুল উৎসাহে রাস্তায় নেমে পড়েছে। চড়া ভাড়ায় মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, সিএনজি, মিনিট্রাকে উঠে গন্তব্যে পাড়ি জমাচ্ছে। রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে উভয়মুর্খী মানুষের এই স্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না।

জানা গেছে, ‘লকডাউন আতঙ্ক’ সারাদেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই এখন ঢাকা ছাড়ছে। আবার যারা ঢাকার বাইরে অবস্থান করছিলেন তারাও ঢাকায় ফিরে আসছে। শুক্রবার ছুটির দিনের সকালেও হাজার হাজার মানুষের পদচারনায় রাজধানীর গাবতলী, আব্দুল্লাহপুর, বাবুবাজার ও সাইনবোর্ড এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। সব পথেই উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। গাবতলীর অমিনবাজার ব্রিজ এলাকায় সকাল থেকেই মানুষের ভিড় শুরু হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই হেঁটে ব্রিজ পাড় হয়ে আমিনবাজার গিয়ে গাড়িতে উঠছেন। প্রাইভেটকার চালক মাসুম জানান, এখান থেকে মানিকগঞ্জ, পাটুরিয়া, টাঙ্গাইল, মির্জাপুর, এলেঙ্গাসহ সব জায়গার যানবাহনে যাওয়া যাচ্ছে। ভাড়া একটু বেশি নিলেও যাওয়া নিশ্চিত। পথে পুলিশ ধরলেও সমস্যা নেই, তাদেরকে ম্যানেজ করেই চালকরা যাতায়াত করছে। জনপ্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় তিনি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় যাতায়াত করছেন। মাথাপিছু ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় কেউ কেউ পাটুরিয়াও যাচ্ছে। গাবতলী জোনের ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট প্রিয়ংকর রায় জানান, গত কয়েকদিনের তুলনায় ঢাকা ছেড়ে যাওয়া গাড়ির চাপ কিছুটা বেশি। নানান অজুহাত দেখিয়ে তারা ঢাকা ছাড়ছে। আবার অনেকে ঢাকায় ঢুকছে।

[caption id="attachment_292251" align="aligncenter" width="700"] লকডাউনের মধ্যেও ঢাকার উদ্দেশ্যে ফেরিতে করে নদী পার হচ্ছে মানুষ। শিমুলিয়া ফেরিঘাট থেকে ছবিটি তুলেছেন মামুন আবেদীন।[/caption]

ঢাকা-চট্টাগ্রাম রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় সকালের দিকে শত শত মানুষের ভিড় হয়। মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে লোকজন ঢাকা ছাড়তে ব্যস্ত। অনেকে পায়ে হেঁটেই সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে পরিবহনের খোঁজ করেছে। অনেকে মিনিট্রাক ভাড়া করে গন্তব্যের দিকে যাত্রা করেছে। আবিদুর রহমান জানান, তিনি লকডাউনের কথা শুনেছেন। তাই পরিবারের সদস্যদের ব্রাম্মণবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে রেখে আসতে যাচ্ছেন। শনিবার দিনি ঢাকায় ফিরে অফিস করবেন। আব্দুল্লাহপুর থেকেও আশুলিয়া এবং গাজীপুরের দিকে শত শত মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। সবাই পায়ে হেঁটে ব্রিজ পার হয়ে টঙ্গি গিয়ে আবার ছোট যানবাহনে গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছে।

অন্যদিকে আবার যারা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মস্থলে বা কাজে অবস্থান করছিলেন, লকডাউনের কথা শুনে তারাও এখন ঢাকায় ফিরছেন। ফলে ঢাকা ছাড়ার পাশাপাশি ঢাকায় ফেরার মানুষের চাপও কম না। এনজিও কর্মী শামীম শাটডাউনের কথা শুনে ঢাকায় ফিরে এসেছেন। তারমতো আরও অনেকেই ঢাকায় ফিরছে। কোথাও কারো মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে খেয়াল নেই।

[caption id="attachment_292598" align="alignnone" width="1280"] আমিনবাজার থেকে আরিচা রোড দূরপাল্লার বাসের যানজট। ছবি: মামুন আবেদীন[/caption]

শাটডাউন ঘোষণার আশঙ্কায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে গতকাল যাত্রীর ভিড় বেড়েছে। এই দুই ফেরিঘাটের যাওয়ার সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট বসিয়েও লোকজনকে আটকানো যাচ্ছে না। সকাল থেকেই ফেরিগুলোতে ঢাকা ছেড়ে দক্ষিনাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের উভয়মুখী ভিড় শুরু হয়। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই মানুষ ফেরিতে উঠে পড়ছে। এরকারনে পণ্যবাহী ও জরুরি পরিবহনগুলো ফেরিতে উঠতে ঝামেলায় পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। যাত্রীদের কোনো ভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার রাত থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। দুপুর দুইটার দিকে এই ঘাটে ৪ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি করেও ফেরিতে উঠছে। যাত্রী নানান পথ ব্যবহার করে তারা ঘাটে পৌছেছে। মূলত শাটডাউন ঘোষণার আশঙ্কায় ঘাটে উভয়দিকের যাত্রীর চাপ বেড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App