×

সারাদেশ

ঘটক পেশার নেই কদর, অভাবে দিন কাটছে সামসু মিয়ার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২১, ১০:২৫ পিএম

ঘটক পেশার নেই কদর, অভাবে দিন কাটছে সামসু মিয়ার

ঘটক সামসু মিয়া

হাতে ছাতা, কাঁধে ব্যাগ ভর্তি পাত্র-পাত্রীর ছবি আর ঠিকানা নিয়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছুটে বেড়াতেন ঘটকরা। উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ছবি আর ঠিকানা দিয়ে জোড়া মিলিয়ে দিতেন ঘটকরা। পেতেন ভাল বকশিস। সম্মানও ছিল বেশ। কদরও কম করতেন না মানুষ।

তবে বর্তমান সময়ে ঘটকদের খুব একটা কদর নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক পেইজ ও ওয়েব সাইটে মিলছে পাত্র-পাত্রীর ছবি ও জীবন বৃত্তান্ত। সেখান থেকে বিয়ের উপযুক্ত পাত্র-পাত্রী খুঁজে নেওয়া হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমেও বিয়ে শাদি হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে হাতে ছাতা আর কাঁদে ব্যাগ নিয়ে চলা ঘটকের খুব একটা দেখা যায় না।

তবে এখন অনেক ঘটক মোবাইল ফোনে পাত্র-পাত্রীর ছবি ও বায়োডাটা রাখেন। চলে আদান-প্রদান। বিয়ে শাদি ঠিক করে দিলে পান কিছু অর্থ। সেটাও খুব বেশি নয়। তাই অনেক ঘটক পেশা বদল করেছেন। আবার যারা এখনো রয়ে গেছেন তারা খুব কষ্টে দিন পার করছেন। তেমনি একজন ঘটক সামসু মিয়া। বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের ভান্ডারুয়া গ্রামে। পিতার নাম মৃত এনু মিয়ার ছেলে।

বয়স সত্তরের কাছাকাছি। এখন আগের মতো কাজ করতে পারেন না। তথ্য প্রযুক্তির এই সময় রয়ে গেছেন আগের মতোই। নেই স্মার্ট ফোন। বয়সের ভারে এপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে যেতে পারেন না। আর যে কয়টা বিয়ে ঠিক করে দেন সেখান থেকে যে টাকা পান তা দিয়ে চলে না সংসার। একটি বিয়ে ঠিক হলে তাকে সম্মানি হিসেবে দেওয়া হয় ১০ থেকে ৫ হাজার টাকা।

কয়েক মাস বিয়ে না থাকলেই হাতের টাকা খরচ হয়ে যায়। তখন কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। এই বয়সে পাচ্ছে না কোন সরকারি সহযোগিতা। পাচ্ছেন না বয়স্ক ভাতা, পাচ্ছেন না ১০ টাকা কেজি দরের চাউল। বাড়ি ছাড়া তেমন কোন সম্পত্তিও নেই সামসু মিয়ার। সংসারে তিন মেয়ে ও এক ছেলে, আছে ছেলের বউ ও নিজের স্ত্রী। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন জমি বিক্রি করে। একমাত্র ছেলে ঢাকাতে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে। যে টাকা আয় করেন সেটা দিয়ে চলে না সংসার।

সামসু মিয়া জানান, তিনি কোন সরকারি কোন সহযোগিতা পান না। ১০ টাকা কেজি দামে যে চাউল কিনা যায় তা পেলেও চলতে পারত। কিন্তু সেটাও তিনি পাচ্ছেন না।

শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন খান জানান, লোকটির বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ওনার কাগজপত্র দিলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

মাধবপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশ্রাব আলী জানান, কোন অসহায় মানুষকে সেবা দিতে পারলে, সহযোগিতা করতে পারলে ভাল লাগে। তিনি যদি কোন সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে থাকেন তাহলে ওনার কাগজপত্র পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App