×

খেলা

টেবিল টেনিসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২১, ১০:৪৪ পিএম

টেবিল টেনিসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই

জোবেরা রহমান লিনু

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০২ সালে জোবেরা রহমান লিনু রেকর্ড ১৬ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন। মাত্র আট বছর বয়সে ১৯৭৩ সালে জোবেরা রহমান লিনু প্রথম টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সে বছর ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব ওপেন টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টে লিনু বড়দের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে রানারআপ হন। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তার বড় বোন মুনিরা মোর্শেদ। পরের বছর একই প্রতিযোগিতায় তিনি রানারআপ হন। ১৯৭৭ সালে লিনু যখন মাত্র ১২ বছরের মেয়ে সে বছরই জাতীয় টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর ৭৯, ৮২, ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৮৮, ৯০, ৯১, ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭, ৯৯, ২০১১ সালে রেকর্ড ১৬ বার মেয়েদের টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ গেমসের অধীনে টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় লিনু ১৯৮৮, ৯২ ও ৯৬ সালে চ্যাম্পিয়ন হন। তিনি ১৯৭৮, ৭৯ ও ৮০ সালে জাতীয় সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশে ইউনিসেফের ক্রীড়াদূতও হয়েছিলেন। খেলা ছাড়ার পর নিজের প্রিয় ডিসিপ্লিন টেবিল টেনিসে সাংগঠনিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। টেবিল টেনিসে সহসভাপতির পর অ্যাডহক কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে হেরেছেন। টেবিল টেনিসের গত নির্বাচনে একটি প্যানেলই হয়েছে। একক প্যানেলে তাকে সহসভাপতি পদে রাখা হলেও তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। টেবিল টেনিস থেকে সরার পর সাইক্লিংয়ের অ্যাডহক কমিটিতে জায়গা পান লিনু। সেই সাইক্লিং থেকেও এবার বাদ পড়েছেন।

ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ক্রীড়াঙ্গনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন জোবেরা রহমান লিনু। তিনি বলেন, ক্রীড়াঙ্গনে প্রাপ্য সম্মান না থাকলে এবং না পেলে সেখানে থেকে লাভ নেই। আমার বয়স এবং অভিজ্ঞতার প্রতি সম্মান না দেয়ায় আমি টেবিল টেনিস থেকে রিজাইন দিয়েছি। এবার আমাকে না জানিয়ে সাইক্লিংয়ের কমিটি গঠন করা হলো। ক্রীড়াঙ্গনে এখন অনেক রাজনীতি। আমি এগুলোর মধ্যে থাকতে পারব না। ধীরে ধীরে সরে যেতে হচ্ছে। ক্রীড়াঙ্গনে হয়তো আর থাকা হবে না।

সাইক্লিংয়ে কী ঘটেছে? এ প্রশ্নের উত্তরে জোবেরা রহমান লিনু বলেন, নীরবে আমাকে সাইক্লিং থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের অজুহাত আমি যোগাযোগ রাখি না। আমাকে ফোনে পায় না। একদিন না পেলে পরের দিন ফোন করবে। ওইদিন না পাওয়া গেলে তার পরদিন ফোন করবে। এসব কিছুই করেনি। আমার বাসা উত্তরা। কাজ না থাকলে বা প্রয়োজন না হলে তো আর জ্যাম, করোনার মধ্যে স্টেডিয়াম বা ওই এলাকায় শুধু শুধু যাওয়া যায় না। কয়েক দিন আগে সেক্রেটারিকে ফোন করেও পাইনি। আমি জানি তাদের পছন্দের একজনকে আনতে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনে যে নোংরামি শুরু হয়েছে। এখানে সম্মান নিয়ে থাকা দায়। তাই ক্রীড়াঙ্গন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার চিন্তাভাবনা করছি।

আবাহনী ক্রীড়া চক্রের টেবিল টেনিস কমিটির সঙ্গে কি এখনো সম্পৃক্ত আছেন? বাংলাদেশে ইউনিসেফের ক্রীড়াদূতের দায়িত্ব পালন করা লিনু জানান, আবাহনীর সঙ্গে নেই অনেক দিন ধরে। এ মুহূর্তে আমি মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করছি। ইদানিং ক্রীড়াঙ্গনে নিষ্ঠাবান লোকের অভাব সম্পর্কে লিনু বলেন, এখানে ভালো সংগঠকরা আসবে কেমনে? মুষ্টিমেয় কিছু লোক নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে পছন্দের লোকদের ক্রীড়াঙ্গনে আনছেন। এতে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। যোগ্য সংগঠক না হলে, অভিজ্ঞতা না থাকলে কাজ করবে কেমনে। একটা শ্রেণী ক্রীড়াঙ্গনকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। তাদের পছন্দের লোক না হলে, তাদের কথা না শুনলে ক্রীড়াঙ্গনে সম্মান নিয়ে থাকায় দায়। তাই ভাবছি এখানে থাকব না নাকি চলে যাব। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি।

বাংলাদেশে টেবিল টেনিসের সম্ভাবনা সম্পর্কে লিনু বলেন, আমি টেবিল টেনিস সম্পর্কে এ মুহূর্তে কিছুই জানি না। নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছি। সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে না। তার পরও যতটুকু জানি সুমি, রুমা, সালেহা ও সোমারা ভালো খেলছে। ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে থাকলেও নিজেকে লেখালেখিতে ব্যস্ত রেখেছেন জোবেরা রহমান। তিনি জানান, আগামী বইমেলার জন্য ক্রীড়া বিষয়ক বই লিখছেন। নাটক নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে তার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App