×

জাতীয়

যাত্রী বেশে সর্বস্ব লুটে নিতো ছিনতাইকারী চক্রটি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২১, ০৩:১৫ পিএম

বাসায় ফিরতে বাসের জন্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন আরিফুল ইসলাম। তার মতো আরও কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন। কিছু সময়ের মধ্যে একটি প্রাইভেটকার আসে। সামনে থেকে ছুটে যান কয়েকজন। তাদের পিছু পিছু যান আরিফুল। একটি সিট পেয়ে তিনিও উঠে বসেন। তাকে মাঝখানে বসিয়ে গাড়ি সামনে যায়। কিছুদূর যেতেই দুপাশ থেকে দুজন চেপে ধরে আরিফুলকে। ফোন, নগদ টাকা ও বিকাশের পিন নাম্বার নিয়ে নেয়। সব লুটে নিয়ে চোখে স্প্রে করে গাজীপুরের কালিগঞ্জে রাস্তার পাশে ফেলে যায়।

গত ২০ মে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কুড়াতলী বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে ভুলতাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আরিফুল। সেখান থেকে প্রাইভেটকারে যেতে গিয়ে ছিনতাইয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। আরিফুল এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ বুধবার রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থেকে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

তারা হলেন- চক্রের প্রধান মো. মানিক মিয়া, মো. জাকির হোসেন, আরিফ, হযরত আলী ও জাহিদ হোসেন।

আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার যার রেজি. নম্বর ঢাকা মেট্টো-গ-১১-৭৪৫৭, একটি নকিয়া মোবাইল সেট, লোহার বাটযুক্ত একটি ছুরি, একটি সবুজ রংয়ের পুরাতন গামছা, একটি খাকি স্কচটেপ, লাল-কালো রংয়ের ইলেকট্রিক তার, কালো বাটযুক্ত একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি লোহার তৈরি লিভার উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, ভিকটিম আরিফুলের আশপাশে আরও কিছু লোক ছিল। তারাও বাসের জন্য অপেক্ষা করার অভিনয় করছিলেন। মূলত তারাও এই চক্রের সদস্য। হঠাৎ আসা একটি প্রাইভেটকারে অন্যদের সঙ্গে উঠতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন আরিফুল।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তারা ঢাকা মহানগরীর খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ভুলতা-গাউছিয়া ও এয়ারপোর্ট থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে যাত্রী ওঠায়। পরবর্তী সময়ে যাত্রীর গলায় ইলেকট্রিক তার পেঁচিয়ে, গামছা দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়। তারা উক্ত ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।

রাইড শেয়ারের আগে সতর্ক থাকতে নগরবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন এ কে এম হাফিজ আক্তার।

রাজধানীর সড়কগুলো সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, রাজধানীতে অনেকগুলো কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। সেগুলোকে কেন্দ্র করে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। আমরা পুরো শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

আগামী ১-২ বছরের মধ্যে সিসিটিভির আওতায় আনাসহ তদন্তে অন্যান্য প্রযুক্তির সুবিধা যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App