×

শিক্ষা

চা-সিঙ্গারা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললো ঢাবি প্রশাসন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২১, ১০:২৬ পিএম

চা-সিঙ্গারা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললো ঢাবি প্রশাসন

ফাইল ছবি

‘১০ টাকায় এক কাপ চা, একটা সিঙ্গারা, একটা চপ এবং একটি সমুচা পাওয়া যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানতে পারলে গিনেস বুকে রেকর্ড হবে।’ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নবীন শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান এ কথা বলেন যা দেশজুড়ে ভাইরাল হয়। অবশেষে দীর্ঘ আড়াই বছর পর এ নিয়ে মুখ খুলেছে ঢাবি প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে টিএসসিতে নবীন শিক্ষার্থীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তিনি ক্যাম্পাসের মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠান স্থল টিএসসি’র গৌরবময় ভূমিকাও প্রসঙ্গক্রমে চলে আসে। তিনি নবাগত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাস্যরসে ক্যাফেটেরিয়ার সাধারণ, স্বল্পমূল্যের খাবার মেন্যু ও সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধার অবারিত সেবাকার্যক্রমের কথাগুলোও বলেন। বস্তুত সর্বজনীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতাভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ঐতিহ্য হিসেবে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের নিজেদের জীবনে এসবের প্রতিফলনের পরামর্শ দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সেদিন যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাবিহীন এক সাংবাদিক অনাহূতভাবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উপাচার্যের বক্তব্যের মূল অংশ কাটছাট করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে বাক্য ও শব্দ অবলোপন করে ক্যাফেটেরিয়ার বিভিন্ন খাবার আইটেমের মূল্যমান সংক্রান্ত বক্তব্যের অংশবিশেষ নিয়ে ১৫-২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল করে। ওই সাংবাদিক অবশ্য পরে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একজন শিক্ষক হিসেবে উপাচার্য বিষয়টিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। প্রসঙ্গত, টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ার খাবার মেন্যুর নজিরবিহীন স্বল্পমূল্য বিষয়ে উপাচার্যের মন্তব্য ‘বিবিসি বাংলা’ পরিচালিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সত্য প্রমাণিত হয়।

দেশের কোন কোন দায়িত্বশীল মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহৃত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত খণ্ডিত বক্তব্য ব্যঙ্গ বিদ্রুপ যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করাকে অনাকাঙ্খিত বলা হয়েছে এ বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়, সম্প্রতি দুটি বিষয় বিশেষভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। বিষয়গুলো ইতোপূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ ‘ব্যঙ্গ বিদ্রুপ’ রূপে উপস্থাপন করেছেন। তখন সেটিকে বৃহত্তর সমাজের কিছু মানুষের ভিন্ন রুচি ও ভিন্ন মূল্যবোধ হিসেবে ধরে আমলে নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি, কোনো কোনো দায়িত্বশীল মহলও বিভিন্নভাবে সেসব যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছেন, যা খুবই অনাকক্ষিত। বস্তুত কিছু অসাধুচক্র কোনো অপতথ্য বার বার ব্যবহার করে সেটিকে তথ্যে পরিণত করতে চায়; যা জনমনে অনেক সময় বিভ্রান্তি তৈরি করে।

করোনা মহামারিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে সাড়া দেয়নি; কোভিড-১৯ টেস্টিং কার্যক্রম শুরু করে বেশ বিলম্বে; কিছুদিন পর আবার ল্যাব বন্ধ করে দেয়; এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ডজনেরও অধিক আরটি-পিসিআর মেশিন থাকা সত্ত্বেও সেসব দিয়ে জাতির মহাদুর্যোগে সেবাকার্যক্রম পরিচালনা না করে বসে আছে। এ বক্তব্যটি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছিল। প্রকৃত ঘটনা হলো কোনো বিলম্ব ছাড়াই ১৯ মার্চ ২০২০ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী, জিন প্রকৌশলী ও প্রাণরসায়নবিদদের নিয়ে প্রথম ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ গঠন করে। উল্লিখিত কমিটির মাধ্যমে বিভাগগুলো থেকে ৩টি আরটি-পিসিআর মেশিন এনে সিএআরএস ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্যোগে বায়োসেফ্টি নিশ্চিত করে তিন সপ্তাহে তৈরি করা হলো কোভিড-১৯ টেস্টিং ল্যাব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন পাওয়ার পর ৫ মে ২০২০ এর উদ্বোধন করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভ্রান্তিকর ও খণ্ডিত তথ্য ব্যবহার করে কোনো বিশেষ মহল যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতে এবং মানহানি না ঘটাতে পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App