×

জাতীয়

কিছু নেতার বিচ্যুতি ঘটলেও তৃণমূলের কর্মীরা অবিচল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২১, ১১:০৭ এএম

কিছু নেতার বিচ্যুতি ঘটলেও তৃণমূলের কর্মীরা অবিচল

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ

৭২ বছর পূর্ণ হলো মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের। এই মাহেন্দ্রক্ষণে দলটি সম্পর্কে কী ভাবছেন সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ভোরের কাগজের কাছে এ নিয়ে কথা বলেছেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ। লিখেছেন মুহাম্মদ রুহুল আমিন।

আওয়ামী লীগের জন্মই প্রতিকূল পরিবেশে। প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই দলটি এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যতেও বহু প্রতিক‚লতার মুখোমুখি হতে হবে। তারপরও আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের জায়গায়ই থাকবে, আরো শক্তিশালী হবে। দলের বিভিন্ন দুর্যোগে কিছু নেতা আদর্শ বিচ্যুত হবে। কিন্তু তৃণমূলের কর্মীরা কোনোদিন বিচ্যুত হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তারা আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচল থাকবে। আর এই তৃণমূলই আওয়ামী লীগের চলার পথে সবচেয়ে বড় শক্তি।

৭২তম প্রতিষ্ঠিাবার্ষিকীর পূর্বক্ষণে গতকাল বুধবার ভোরের কাগজের কাছে দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এভাবেই নিজের মূল্যায়ন তুলে ধরেন দলটির সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর মানুষ যদি শান্তিতে বসবাস করতে পারতেন, ঠিকমতো খেতে পারতেন, স্বাধীনভাবে মুক্ত নিশ্বাস নিতে পারতেন। তাহলে বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে আসতেন কি না জানি না। বঙ্গবন্ধু যখন দেখেছেন- এদেশের মানুষ প্রতিটি স্তরে শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত, বৈষম্যের শিকার। তখনই তিনি মহামানব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ছাত্রদের একত্রিত করে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। দলকে সংগঠিত করতে মনোনিবেশ করেন। সংগঠনকে সবার সংগঠনে রূপ দিতে মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরণ করেন। যে আওয়ামী লীগ হয়েছে সাধারণ মানুষের দল। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। এটা হয়েছে একটা দলের এবং একজন নেতার (বঙ্গবন্ধু) জন্যই। যা বিশ্বে বিরল। এটিই দলটির সেরা সাফল্য।

সমীর চন্দ বলেন, শোষণহীন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার ভিত্তি রচনা করেছেন। এমন কোনো সেক্টর নেই, যেখানে বঙ্গবন্ধু পরিবর্তনের কাজ শুরু করেননি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সবকিছুই থমকে যায়। উল্টোপথে হাঁটা শুরু করে বাংলাদেশ।

আগামীর আওয়ামী লীগ কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষক লীগের সভাপতি বলেন, ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগকে পঁচাত্তরের পর নিশ্চিহ্নের অপচেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনি। এক/এগারোতে আওয়ামী লীগের ওপর যে ঝড় এসেছে, সেই ঝড়ে কিছু কিছু নেতার বিচ্যুতি হয়েছে। কিন্তু দলের যারা মূল চালিকা শক্তি, সেই তৃণমূলের কর্মীরা কখনো আদর্শচ্যুত হয়নি। ভবিষ্যতেও যদি আওয়ামী লীগের ওপর কোনো দুর্যোগ আসে, তখন কিছু কিছু নেতার বিচ্যুতি ঘটবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মূল আদর্শ থেকে কর্মীরা এক ইঞ্চিও বিচ্যুত হবে না। বঙ্গবন্ধুকন্যা এ দলকে এমনভাবে সংগঠিত করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে সংকট আসলেও তা সমাধান করার মতো নেতাকর্মী তৈরি করে যাচ্ছেন। সাম্প্রদায়িক উসকানি বা মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থানে বা হুঙ্কারে একটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে- এটা কোনোদিন হবে না।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠী কৃষক সমাজকে কৃষক লীগের পতাকা তলে সম্পৃক্ত করা গেলে ভোটের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের সমর্থন দলকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। এদেশের কৃষক যাকে বুক দেখায়, তাকে পিঠ দেখায় না। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে তারা খাঁটি সোনায় পরিণত হয়। তাদের লোভ-লালসা নেই।

আমরা কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি। আগামী দিনের পথচলা ও নেতৃত্ব বিকাশে কৃষক লীগ আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করবে। জাতির পিতা কৃষকদের ভালোবাসতেন। তার কন্যা শেখ হাসিনাও কৃষকদের ভালোবাসেন। আওয়ামী পরিবারের সবার উচিত কৃষকদের ভালোবাসা, মর্যাদা দেয়া, সম্মান করা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App