×

সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কী?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২১, ১২:২৫ এএম

গতকাল থেকে স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় ফের ছুটি বাড়ানো হলো। এ দফায় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কওমি মাদ্রাসাসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ সময়ে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে এবং টেলিভিশনসহ দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে লেখাপড়া চলবে। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ৩ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থী মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। যদিও শুরু থেকে দূরশিক্ষণ ও পরে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু সরাসরি মাধ্যমের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে শিখন ঘাটতিতে পড়েছে। করোনার এ সময়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাসূচি এলোমেলো হয়ে গেছে। এক দশক ধরে পূর্বনির্ধারিত শিক্ষাসূচি অনুযায়ীই চলছে শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘ এই ক্ষতি কীভাবে পোষানো হবে তার বিশ্লেষণ করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনলাইনে এবং টেলিভিশনসহ দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে লেখাপড়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যান্ত্রিক এই শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী পরিচিত না থাকায় সমস্যা বেড়েছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একটা অংশকে পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা গেলেও একটা বড় অংশ এ কার্যক্রমের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। আমরা জানি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা, যাদের ইন্টারনেট সাপোর্ট, ডিভাইস (ল্যাপটপ, স্মার্টফোন ইত্যাদি) ও দুর্বল ইন্টারনেট গতির অসুবিধার কারণে সবাইকে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত থাকায় শিক্ষকরা যথাযথ দিকনির্দেশনা ও সঠিক মূল্যায়নের দিকে যেতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেমে এসেছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। নতুন করে সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার ও চাকরিজীবনের প্রতিযোগিতায় অনেক প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা শিক্ষার্থীরা ভুগছেন নানাবিধ মানসিক সমস্যায়। গত এক বছরে বাংলাদেশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্বের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। অনলাইনভিত্তিক সেসব গবেষণায় সীমাবদ্ধতা থাকলেও, প্রায় সব জরিপেই উঠে এসেছে এ দেশের ছাত্রছাত্রীরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ আর মানসিক চাপে ভুগছে। শিক্ষার পাশাপাশি এবার ছাত্রছাত্রীদের মনস্তাত্ত্বিক সুরক্ষারও পদক্ষেপ নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দু-তিন দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হবে। সরকারের এমন পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। করোনায় শিক্ষা বিপর্যয় ও ক্ষতিপূরণ পোষাতে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বিকল্প সহায়ক হলে তা বাস্তবায়নে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। অনলাইন শিক্ষায় যেসব সমস্যা ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে পৃথিবীর অন্য দেশগুলো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে এগিয়ে নিচ্ছে সে বিষয়ে ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App