×

খেলা

খেলোয়াড়দের কনফিডেন্স লেভেলে ঘাটতি রয়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২১, ১০:১৮ পিএম

খেলোয়াড়দের কনফিডেন্স লেভেলে ঘাটতি রয়েছে

শফিকুল ইসলাম মানিক

 বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে মঙ্গলবার ( ১৫ জুন) বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচে ওমানের মোকাবেলা করবে। এ ম্যাচে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা সেরা একাদশের চারজনকে পাচ্ছে না। মঙ্গলবারের ম্যাচ নিয়ে ভোরের কাগজের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক ফুটবলার, জাতীয় দলের সাবেক কোচ, বর্তমানে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কোচের দায়িত্বে থাকা শফিকুল ইসলাম মানিক। ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করে কোচিং পেশায় এসে যে কয়জন সাফল্য পেয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৬৭ সালের ২২ অক্টোবর জন্ম নেয়া জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় মানিক তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ছিলেন। তার খেলোয়াড়ি জীবনের সূচনা ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলার মাধ্যমে। গোপীবাগের ক্লাবে ছয় মৌসুম কাটানোর পর ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন ছেড়ে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দেন। ১৯৮২ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে তার অভিষেক ঘটে। সাদা-কালো জার্সি গায়ে ১০ মৌসুম খেলার পর ১৯৯৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের জার্সি গায়ে শফিকুল ইসলাম মানিকের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে। খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর ১৯৯৬ সালে মানিক এক মৌসুমের জন্য ঢাকা মোহামেডানের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোচ হিসেবে যোগ দেন। যেখানে তিনি কোচ হিসেবে দীর্ঘ আট মৌসুম অতিবাহিত করেন। মুক্তিযোদ্ধার কোচের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি আবার ঢাকা মোহামেডানে কোচ হিসেবে যোগ দেন। ২০০৮ সালে মানিক বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন, তিনি দুই বছর বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে কাজ করেন। ২০১০-১১ মৌসুমে তিনি আবার ঢাকা মোহামেডানের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তারপর তিনি দ্বিতীয়বারের মতো মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোচের পদ অলংকৃত করেন। পরবর্তীতে শফিকুল ইসলাম মানিক চট্টগ্রাম আবাহনী, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব এবং শেখ রাসেলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালের ৭ মে জোসেফ আফুসি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি দ্বিতীয়বারের মতো শেখ জামালের কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ১৯৮৮-৮৯ মৌসুমে কায়সার হামিদকে হারিয়ে ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ-ওমান ম্যাচ সম্পর্কে ভোরের কাগজকে শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, এ ম্যাচ ঘিরে আমাদের আশা-প্রত্যাশার কিছু নেই। অসম লড়াইয়ে আমরা কতটা ভালো খেলতে পারি, তাই দেখার বিষয়। আমাদের দলটা এ মুহূর্তে ভঙ্গুর। হলুদ কার্ডের কারণে তিনজন এবং একজন ইনজুরির কারণে একজন খেলতে পারছেন না। ওদের র‌্যাঙ্কিং ৮০, আমাদের ১৮৪। ওমান ১০৪ ধাপ পিছিয়ে আছে বলে আমাদের দলটা একেবারে খারাপ নয়। আফগানিস্তান ওমানের বিপক্ষে হেরেছে ২-১ গোলে। আমরা আফগানদের সঙ্গে যে খেলাটা খেলেছি, সে রকম খেলতে পারলে মিরাকল কিছু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আজকের ম্যাচে আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে যত কম ভুল করা যায়। অসম ম্যাচে কম ব্যবধানে হারটাই মুখ্য উদ্দেশ্য। প্রথম সাক্ষাতে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে হেরেছিল ওমানের বিপক্ষে।

বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এ খেলোয়াড় বলেন, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে কনফিডেন্স লেভেলের ঘাটতি ছিল। ওই ম্যাচে খেলোয়াড়রা মোটেও ভালো খেলতে পারেনি। মঙ্গলবার ওমানের বিপক্ষে গোলরক্ষক, রক্ষণভাগ এবং মিডফিল্ডাররা যদি তাদের দায়িত্ব যথাযর্থভাবে পালন করতে পারে, তাহলে প্রতিপক্ষ বেশি ফায়দা নিতে পারবে না।

অন্য দেশের ফুটবল সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর বাংলাদেশের ফুটবল পিছিয়ে যাচ্ছে। এ সম্পর্কে ডাকসুর সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক, জাতীয় দলের সাবেক কোচ মানিক বলেন, আমাদের দেশের ফুটবলাররা যে বয়সে ফুটবল খেলা শুরু করে, অন্যরা অনেক আগে তা করে। বেশি বয়সে খেলা শুরু করায় আমাদের ফুটবলাররা আধুনিক কলাকৌশল রপ্ত করতে পারছে না। এখানে খেলোয়াড়দের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের অবকাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। ক্লাব, ফেডারেশনকে বয়সভিত্তিক ফুটবলে গুরুত্ব দিতে হবে, মাঠের উন্নয়ন করতে হবে। একাডেমির উন্নয়ন করতে হবে। ২০ বছর আগেই এসব করা উচিত ছিল। আর দেরি না করে আজ থেকেই এসব করা উচিত। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন থেকেই আগামী ২০ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

অনেকে বলে আগে ফুটবলের সোনালি দিন ছিল। এখন তা নেই? এ সম্পর্কে ভোরের কাগজকে শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, আমাদের সময়ে ফুটবলের জনপ্রিয়তা ছিল। আমরাও কোরিয়ার বিপক্ষে ৪-৫গোল খেয়েছি। আমরাও হেরেছি। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App