×

জাতীয়

‘বাজেট প্রণয়নে সাংসদদের অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২১, ১১:২৫ পিএম

সরকারি দলের সংসদ সদস্যদেরও জাতীয় বাজেট কিংবা সরকারের অন্যান্য নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ দেয়া হয় না বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের ঘাটতি আছে। এ ঘাটতি আমাদের ঠিক করতে হবে। আবার যদি আমরা মনে করি যে শুধু সরকার যেটা দেবে, সেটাকেই পাস করে দেয়া হলে আমাদের বাজেট অধিবেশনের প্রয়োজন নেই। আরেকটি বিষয় হচ্ছে- বাজেট যখন সংসদে উপস্থাপন করা হয়, তারপর আর পরিবর্তন হতে দেখা যায় না। হয়তো আমাদের দুয়েকজন সংসদ সদস্যের কিছু বিষয় বলা হয়, সেটা তারা উত্থাপন করেন। পরে সেগুলোকে মেনে নেয়া হয়। কিন্তু মৌলিক কাঠামোর কোনো পরিবর্তন করা হয় না। এ প্রক্রিয়ায় বাজেটের গুণগত মান পরিবর্তনে সাংসদ বা সংসদ তেমন একটা কিছু করতে পারছে না।

শনিবার (১২ জুন) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাজেট ডায়লগ-২০২১’ শীর্ষক বাজেটপরবর্তী আলোচনা সভার গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় সাংসদ রুমিন ফারহানা, এফবিসিসিআই সভাপতি জসীম উদ্দিন, এমসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ আরো অনেকে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ীদের খালি সুবিধা দিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা লুটেরা। কয়েক দিন ধরে লাগাতার এসব বলা হচ্ছে। কথাগুলো শুনতে আমি আগ্রহী নই। আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, অনেক করছাড় দেয়া হয়েছে। এসব ছাড়ের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা বহু বছর ধরেই। সরকার একটু একটু করে কমাচ্ছে। নিহাদ কবির বলেন, আগে একটা ধোঁয়া তোলা হতো এনজিওদের বিরুদ্ধে। বলা হতো, কিস্তির টাকার জন্য তারা টিনের চাল খুলে নিয়ে যায়। এবার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। অথচ ব্যবসায়ীদের সরকার এক হাতে দেয়, অন্য হাতে তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেয়।

সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। ১০ মাসে এত কম আয় হয়েছে যে বাকি দুই মাসে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে ১২২ শতাংশ। ব্যয় সক্ষমতার অবস্থাও ভালো নয়। কোভিডের কারণে যেই অর্থবছরে ব্যয় বেশি হওয়ার দরকার ছিল, সেই অর্থবছরেই সম্প্রসারণমূলকের পরিবর্তে সংকোচনমূলক বাজেট হয়েছে। ব্যক্তি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়েনি, ৮ শতাংশ। অথচ নতুন বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ শতাংশ। কীভাবে তা অর্জন সম্ভব হবে? মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ এখনো ১ শতাংশের নিচে বলে সমালোচনা করেছে সিপিডি। বলেছে, কৃষি খাতেও বরাদ্দ কমেছে। অথচ দুটিই গুরুত্বপূর্ণ।

সংলাপে নির্ধারিত আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক সৈয়দ আবদুল হামিদ এবং ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব স্মল এন্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের (নাসিব) সভাপতি মির্জা নুরুল গণি।

এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা, তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার সলিডারিটির প্রধান নির্বাহী কল্পনা আক্তার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App