×

পুরনো খবর

পাবনায় গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র হাতে ঠিকাদার আ.লীগ নেতারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২১, ১০:২৭ পিএম

পাবনায় গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র হাতে ঠিকাদার আ.লীগ নেতারা

ভিডিওতে দেখা যায়, গণপূর্ত ভবনে ঢুকছেন ফারুক হোসেন (গোলাপি পাঞ্জাবি পরা, মাথায় টুপি), তার পেছনে অস্ত্র হাতে এ আর খান মামুন (মুখে মাস্ক)।

পাবনায় গণপূর্ত অফিসে অস্ত্র হাতে ঠিকাদার আ.লীগ নেতারা

ভিডিওতে দেখা যায়, শেখ লালু (সাদা কালো স্ট্রাইপড টি শার্ট পরা) ঢুকছেন গণপূর্ত কার্যালয়ে।

পাবনা গণপূর্ত অফিসে ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতাদের অস্ত্র নিয়ে ঢোকার ঘটনায় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত ৬ জুন এই ঘটনা ঘটলেও এর একটি ভিডিও ফুটেজ শনিবার (১২ জুন) জানাজানি হয়। আতঙ্কিত অফিসের কর্মীরা। গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা এ নিয়ে পুলিশে কোনো অভিযোগ করেননি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওই নেতারা বলেন, আমরা ভুল করে লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে ওই অফিসে গিয়েছিলাম। তবে এটি আমাদের ভুল হয়েছে।

সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গত ৬ জুন বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন সদলবলে পূর্ত ভবনে ঢুকছেন। পেছনে শটগান হাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান মামুন এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। ভিডিওতে অস্ত্র নিয়েই তারা কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকতে দেখা গেছে। ওই সময় তাদের সঙ্গীরা বাইরে কক্ষের অপেক্ষায় ছিলেন। ১২টা ১২ মিনিটে তারা ফিরে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গণপূর্তকর্মী বলেন, এসব মহড়ায় তাদের আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রভাব বলয় তৈরি করে বিভিন্ন কাজের দরপত্র নিজেদের আয়ত্তে নিতে চেষ্টা করেন ক্ষমতাসীন দলের ঠিকাদার নেতারা। তাদের দাপটে অন্য ঠিকাদাররা দরপ্রস্তাব জমা দিতে পারছেন না।’

[caption id="attachment_289873" align="aligncenter" width="700"] ভিডিওতে দেখা যায়, শেখ লালু (সাদা কালো স্ট্রাইপড টি শার্ট পরা) ঢুকছেন গণপূর্ত কার্যালয়ে।[/caption]

কর্মকর্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলেও কোনো হুমকি দেননি। কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি। তাই কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “ঠিকাদাররা আমার কক্ষে এসেছিলেন। আমার টেবিলে অস্ত্র রেখে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের কাছে এসেছেন বলে তারা জানান। খারাপ আচরণ বা গালাগালি করেননি।

বিল কিংবা দরপত্রকে কেন্দ্র করে এই মহড়া কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পাবনায় নতুন যোগ দিয়েছি। এসব বিষয়ে আমার জানা নেই।

নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, “ঘটনার সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তবে সিসিটিভি ফুটেজে অস্ত্র হাতে অনেকে এসেছে দেখেছি। তারা আমাকে সরাসরি বা ফোনে কোনো হুমকি দেয়নি। কথাও হয়নি। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ করিনি।”

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন বলেন, আমি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নই। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে মামুন ও লালু আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তবে এভাবে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি।

এ আর খান মামুন বলেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে বৈধ অস্ত্র নিয়ে আমি ব্যবসায়িক কাজে ইটভাটায় যাচ্ছিলাম। পথে নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে কথা বলতে গণপূর্ত বিভাগে যাই। কিন্তু তিনি না থাকায় আমরা ফিরে আসি। তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়নি। প্রতিপক্ষ ঠিকাদাররা বিষয়টিকে অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে যুবলীগ নেতা শেখ লালু বলেন, ভুলবশত আমরা অস্ত্র নিয়ে অফিসে ঢুকে পড়েছিলাম।

প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন কাজ নিজেদের আয়ত্তে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন  ফারুক হোসেন, এ আর খান মামুন এবং শেখ লালু ।

পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল হক খান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পাবনার ডিসি কবীর মাহমুদ বলেন,  আইন-শৃংখলা বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App