×

সারাদেশ

চোখে মুখে শুধুই হতাশা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী মানুষের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২১, ০৮:০৩ পিএম

চোখে মুখে শুধুই হতাশা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী মানুষের

নদীর ভাঙ্গনে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে নি:স্ব পরিবার গুলো। ছবি: ভোরের কাগজ

অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে দিন দিন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পানির তীব্র স্রোতে নদের তীরবর্তী গ্রামের মানুষ আতংকে জীবন যাপন করছে। ইতিমধ্যে ঘুঘুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঘুঘুমারী কমিউনিটি ক্লিনিক নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

এদিকে নদী ভাঙ্গনের কারনে ফসলি জমি ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যের জমিতে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে নি:স্ব পরিবার গুলো। স্থানীয় এলাকাবাসীরা বলেন, যে ভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে এই ভাঙ্গন বন্ধ করতে না পারলে উপজেলার মানচিত্র থেকে মুছে যাবে কয়েকটি গ্রাম, বাড়ি ভিটা হারিয়ে নি:স্ব হবে হাজার হাজার মানুষ। শনিবার( ১২ জুন) কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চরশৌলামারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, সুখেরবাতী, চরঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, খেদাইমারী, চর খেদাইমারী, সাহেবের আলগা, বলদমারা, বাইশ পাড়া, সোনাপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে নদী ভাঙ্গনের চিত্র দেখা যায়।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের ৭.৩ কি:মি বামতীর রক্ষাবাঁধ নির্মান করা হচ্ছে ৪৭৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে। ১৫ টি প্যাকেজের মধ্যে আরএফএল কোম্পানীর ৪ টি, স্ট্যার্ন্ডাড কোম্পানীর ৪ টি, তাজ মঞ্জিলের একটি, জেডিএমএম বিল্ডার্স একটি, মেসার্স ডন করপোরেশন এন্ড সানফ্লাওয়ার কোম্পানীর একটিসহ বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব কাজ গুলি করা হচ্ছে। বর্ষার শুরুতেই ব্রহ্মপুত্র নদের পানিতে প্রখর স্রোতে বইছে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন বন্ধ করতে না পারলে বিলীন হয়ে যাবে বামতীর রক্ষাবাঁধের আংশিক কাজ ও ঘরবাড়ি ফসলি জমি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সরকারের কোটি কোটি টাকা জলে যাবে, উদ্দেশ্য ব্যহত হবে।

ঘুঘুমারী গ্রামের স্থানীয় এলাকাবাসী মিয়াউল্লাহ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের ফলে আমার বাড়িঘর ফসলি জমি ভেঙ্গে গেছে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন দ্রুত ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নিন। মর্জিনা বেগম বলেন, আমাদের ঘুঘুমারী গ্রাম প্রায় নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। আমরা ত্রাণ চাইনা ভাঙ্গন বন্ধ চাই।

এ বিষয়ে চর শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম সাইদুর রহমান দুলাল বলেন, নদী ভাঙ্গনের ফলে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হওয়ার পথে। ইতিমধ্যে ঘুঘুমারী, খেদাইমারী ও সোনাপুরসহ কয়েকটি গ্রামে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। শত শত মানুষ ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে অন্যের জমিতে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে সাথ্যমতো সহযোগীতা করছি। নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ্ জানান, আমি নদী ভাঙ্গন এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি বিষয়টি খুবই ভয়াবহ অবস্থা। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরো কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আমি গুরুত্ব সহকারে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছি তারা আমাকে আশ্বস্থ করেছেন যে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এর সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি জেনেছি। রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী পয়েন্টে ভাঙ্গন রোধে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতি মধ্যে সাহেবের আলগা পয়েন্টে ভাঙ্গন রোধে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। আশা করি ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App