×

সম্পাদকীয়

বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা ভাবনা ছাড়া উপায় নেই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২১, ১২:১৩ এএম

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাসূচি এলোমেলো হয়ে গেছে। এক দশক ধরে পূর্বনির্ধারিত শিক্ষাসূচি অনুযায়ীই চলছে শিক্ষাব্যবস্থা। দীর্ঘ এই ক্ষতি কীভাবে পোষানো হবে তার বিশ্লেষণ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে বিকল্প শিক্ষায় নানা উদ্যোগ দেখলেও বাস্তবে তা কতটা সফল হয়েছে দেখার বিষয়। যেমন : স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট ডেটা প্যাক, ডিভাইস ক্রয়ের জন্য সফট লোন ইত্যাদির সঙ্গে সংসদ টেলিভিশন, বেতার, কমিউনিটি রেডিওর পাশাপাশি ভার্চুয়ালি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা। যান্ত্রিক এই শিক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে দেশের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিচিত না থাকায় সমস্যা বেড়েছে। জানা গেছে, বৈশি^ক মহামারি করোনায় ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জাতিসংঘের মতে, এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ আগে কখনো হয়নি। এমনকি দুটি মহাযুদ্ধের সময়ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। নানা উদ্যোগের মধ্যে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, বিশেষ করে বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একটা অংশকে পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা গেলেও একটা বড় অংশ এ কার্যক্রমের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। আমরা জানি, পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা, যাদের ইন্টারনেট সাপোর্ট, ডিভাইস (ল্যাপটপ, স্মার্টফোন ইত্যাদি) ও দুর্বল ইন্টারনেট গতির অসুবিধার কারণে সবাইকে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী এ প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত থাকায় শিক্ষকরা যথাযথ দিকনির্দেশনা ও সঠিক মূল্যায়নের দিকে যেতে পারছে না। বলতে গেলে, সে ধরনের নির্দেশনাও আপাতত নেই। বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট নেমে এসেছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। নতুন করে সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার ও চাকরিজীবনের প্রতিযোগিতায় অনেক প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। ভয়ানক তথ্য হলো করোনা ভাইরাস লাখ লাখ কন্যাশিশুকে নতুন বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। স্কুল বন্ধ, বন্ধু ও সাপোর্ট নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্নতা, ক্রমবর্ধমান অভাব এই মেয়েদের বিয়ের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা শিক্ষার্থীরা ভুগছেন নানাবিধ মানসিক সমস্যায়। গত এক বছরে বাংলাদেশে কলেজ-বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্বের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। অনলাইনভিত্তিক সেসব গবেষণায় সীমাবদ্ধতা থাকলেও, প্রায় সব জরিপেই উঠে এসেছে এদেশের ছাত্রছাত্রীরা বিষণ্নতা, উদ্বেগ আর মানসিক চাপে ভুগছে। বাবা-মাকে এই সময়ে সন্তানের সঙ্গে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতি জোর দিতে হবে। করোনায় শিক্ষা বিপর্যয় ও ক্ষতিপূরণ কোন পথে? তা নিয়ে পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বিকল্প সহায়ক হলে তা বাস্তবায়নে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। অনলাইন শিক্ষায় যেসব সমস্যা ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে পৃথিবীর অন্য দেশগুলো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে এগিয়ে নিচ্ছে সে বিষয়ে ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা যেতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App