ফরিদ আহমদ দুলাল
এবার আমি নিজেকে সামলাতে পারলাম না, “তুমি কি আমায় ভয় দেখাচ্ছো না-কি! তুমি বোধহয় জানো না ভয় পাবার মতো মেয়ে আমি নই। তোমার নেতা সে কথা কিছুটা হলেও জানে। প্রয়োজনে তার কাছ থেকে জেনে নিও। আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কী আমি বলবো সে বিষয়ে আমায় পরামর্শ না দিলেই খুশি হবো!” আমার কথায় রেজা যেনো এবার একটু ধাক্কা খেলো। এক মুহূর্ত চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো, তারপর বললো, “দেখো পারমিতা, তুমি আমার এলাকার মেয়ে, তায় আবার আমাদের লিডারের বিশেষ নজরে আছো; তাই তোমাকে আমি সাবধান করে দিতে এসেছিলাম। পানিতে থেকে কুমীরের সাথে বিরোধ করার ফল কখনো ভালো হয় না! বোঝো তো রাতের আয়োজনের সাথে যারা যুক্ত, তারা সবাই দলের ছেলেপেলে! একটু সতর্ক থাকাই ভালো নয়?” কথাগুলো বলে রেজা আর দাঁড়ায়নি, মাটির দিকে তাকিয়ে চলে গেলো ধীর পায়ে। আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় বসে রইলাম।
কতক্ষণ বসে ছিলাম জানি না। পারভিন এলো হন্তদন্ত হয়ে। কাছে এসেই প্রশ্ন করলো, “কিরে পারমিতা, কী হয়েছে? রেজার সাথে কী কথা হয়েছে তোর?” আমার মাথায় আগুন জ্বলছিলো, পারভিনের প্রশ্ন যেনো তাতে কেরসিন ঢেলে দিলো, “আমি এক্ষুণি যাবো! সব কথা জানিয়ে দেবো স্যারকে! এতোবড় স্পর্ধা, আমাকে ভয় দেখায়! বলে কি-না, জলে থেকে কুমীরের সাথে বিরোধ না করাই ভালো! অসভ্য! ইতর!” পারভিন এবার আমার পাশে বসে আমায় দু’হাতে চেপে ধরে, “কী পাগলামি করছিস তুই! মাথা ঠাণ্ডা রাখ! তোকে না ডাকলে আগ বাড়িয়ে স্যারের কাছে যাওয়ার কী প্রয়োজন? চল, হোস্টেলে যাই। আজ মনে হয় আর কোন ক্লাস হবে না। পরিস্থিতি খুবই উত্তপ্ত।” কিছুতেই নিজেকে সামলে নিতে পারছিলাম না। কেবলই আমার মনে হচ্ছিলো, রেজার গালে একটা চপেটাঘাত করতে পারলে হয়তো বুকের আগুনটা নিভবে। পারভিন আমার হাত ধরে প্রায় জোর করে টানতে টানতে নিয়ে গেল হোস্টেলের দিকে।
ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো পারভিন। ও নিজেও উত্তেজিত। একদণ্ড বসে থেকে দাঁড়িয়ে পড়লো। তারপর পায়চারী করতে করতে বলতে শুরু করলো, “আমাকে তো তলব করা হয়েছিলো। মনে হয় পাঁচ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। কী ভয়াবহ জেরা! এক প্রশ্নের উত্তর দেবার আগেই আরও দুই প্রশ্ন উচ্চারিত হচ্ছে। তোকেও নিশ্চয়ই ডাকবে। মাথা ঠাণ্ডা রেখে উত্তর করতে হবে, যাতে নিজে কোন বিপদে না পরিস।” আমি ওকে আস্বস্ত করে বললাম, “ভয় পাবার কিছু নেই। যা জানি সব সত্যি সত্যি বলে দেবো। সত্য বলতে দ্বিধা কেনো হবে? আমি তো গুছিয়ে মিথ্যা বলবো না, যেটুকু জানি, সত্যিটাই বলবো।” পারভিন একটু উষ্মা প্রকাশ করে বললো, “তোর অতো যুধিষ্ঠির হয়ে কাজ কী?” আমি আবার চটে গেলাম, “তুই কি আমাকে মিথ্যা বলতে বলছিস!” পারভিন বিলম্ব করলো না, বললো, “মিথ্যা বলতে বলছি কোথায়, আমিই কী মিথ্যা বলেছি একটাও! কিন্তু আমার কথায় কেউ বিপদে পড়বে না। একটু কৌশল অবলম্বন করেছি, এই যা। বলেছি, স্যার আমি তো সেদিন হোস্টেলে ছিলাম না, জরুরি কিছু কেনাকাটা ছিলো, তাই ব্যস্ত ছিলাম মার্কেটে। তোর কথাও আমায় জিজ্ঞাসা করেছিলো, বলেছি, আমি তো স্যার বাইরে ছিলাম, ও কোথায় ছিলো কী করে বলবো? তবে ওর মেজ’পার বাসায় যাবার কথা শুনেছিলাম, গিয়েছিলো কি-না জানি না। তাছাড়া ও তো স্যার একা থাকতেই ভালোবাসে।” ওর কথা শেষ হলো না, দরজায় কেউ কড়া নাড়লো। দরজা খুলে দিতেই খালা ঢুকলো ঘরে। খালার চোখে মুখে উদ্বেগ, “পারমিতা খালা আপনেরে অফিসে ডাকছে অহনই, লুক আইছে খবর নিয়া। যাইয়া দেহেন গেইটে খাড়াইয়া রইছে ব্যাডা। দ্রুত বেরিয়ে গেলাম। বেরুতে গিয়ে ভাবলাম, কেনো হঠাৎ তলব! বোমাবাজির তদন্ত, না-কি কলেজে আমার অনুপস্থিতি? সংশয় আর উদ্বেগ নিয়ে এগিয়ে গেলাম অফিসের দিকে।
তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হলে, কী ধরনের প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে তার কোন ধারনাই আমার ছিলো না, সঙ্গত কারণেই কিছুটা উদ্বেগ ছিলো; আর আহবানটা এমন ছিলো, যেনো আমি কোন আসামী। রুমে ঢুকবার সময় বুকটা একবার কেঁপে উঠলো; পা দু’টি একবার থমকে দাঁড়ালো; মন কিছুটা বিচলিত হলো; মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে ঘরে ঢুকলাম। আমাকে চমকে দিয়ে মির্জাস্যার আমায় অভ্যর্থনা জানালেন, “এসো পারমিতা, তোমায় স্বাগত জানাই। বসে পড়ো।” আমি সামান্য ইতস্তত করছিলাম দেখে বাতেনস্যার বললেন, “সমস্যা নেই বসে পড়ো। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে? কথা হবে অনেক্ষণ।” এবার আমি শঙ্কিত হলাম, অনেক্ষণ কথা হবে! সমস্ত দ্বিধা ঝেরে ফেলে সামনের একমাত্র ফাঁকা চেয়ারে বসে পড়লাম। “বিগত বছরটাকে বিদায় জানালে কী বলে? কেমন কাটলো তোমার নববর্ষ?” স্যারের প্রশ্নে মনে হলো, বেশ শক্ত সাক্ষাৎকার হবে। মনের মধ্যে কোত্থেকে প্রবল একটা প্রেরণা অনুভব করলাম। বললাম, “স্যার, এবছর চৈত্রসংক্রান্তি আর নববর্ষ একাকিত্বে কাটলো। প্রতি বছরই আত্মীয়-স্বজনের সাথে কাটে; মা’র কণ্ঠে লতিয়ে ওঠে, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’, এবছর একা একাই গুন গুন করলাম, ‘তাপস নিঃশ্বাস বায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক এসো এসো।” মির্জাস্যার হেসে বললেন, “তুমি কি গাইতেও জানো?” আমি লজ্জার হাসি হেসে বললাম, “না স্যার আমার মা বলেন, আমার গলা না-কি ফাটা বাঁশ! গান গাইতে পারি না; কিন্তু নিজেকে গানের কথাগুলো শোনাতে পারি; নিজে নিজে শপথ করতে পারি নিজের সাথে।” এবার স্যার সিরিয়াস হলেন, “তাহলে সেদিন রাতে কী করলে? কী অভিজ্ঞতা হলো তোমার সেটা বলো?” আমি দৃঢ়তার সাথে বললাম, “আমি তো স্যার হোস্টেলেই ছিলাম, আমার ঘরে। তবে যে ধরনের শব্দ হলো আতশবাজির, তা আমার কাছে দুঃখজনক বলেই মনে হলো। হাসপাতাল এরিয়ায় এ ধরনের শব্দদূষণ মেনে নেয়া যায় না!” একজন পাল্টা প্রশ্ন করলেন, “কেনো? আমাদের কি উৎসব-আনন্দ থাকতে নেই?” স্যারের কথায় আমি বিচলিত না হয়ে বললাম, “থাকবে না কেনো স্যার! কিন্তু স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা থাকা উচিত অবশ্যই। স্বাভাবিকভাবে যে কাজ আমরা অন্যত্র করতে পারি, একই কাজ কীভাবে আমরা হাসপাতাল এলাকায় করতে পারি স্যার? এখানে কত ধরনের অসুস্থ মানুষ, চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়ে আমাদের যদি এই বোধটুকুও না থাকে, তাহলে এ শিক্ষায় আমাদের কী হবে স্যার?” কমিটির সদস্যরা আমার কথায় যেনো কিছুটা খুশি হলেন। মির্জাস্যার বললেন, “ঠিক আছে, বুঝলাম তুমি ওখানে ছিলে না; কিন্তু কাজটা করলো কে?” আমি কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে বললাম, “যখন স্যার আমি ছিলামই না, তখন কী করে বলবো, কে বা কারা করেছে কাজটা। আমার তো স্যার দেখার সুযোগই নেই।” এবার বাতেনস্যার বললেন, “কিন্তু আমাদের কাছে তথ্য আছে, ওরা তোমার সাথে যোগাযোগ করেছিলো, তুমি তাদের খরচাপাতিও দিয়েছিলে।” আমি অবাক হলাম; “দুঃখিত স্যার। যিনি বা যারা এ তথ্য আপনাদের দিয়েছেন, তারা ভুল বলেছেন। আমার কাছে কেউ যায়নি। কয়েকজন দুপুরের আগে এসেছিলেন হোস্টেলে পারভিনের সাথে দেখা করতে; পারভিন না থাকায় আমি তাদের সাথে দেখা করি। কিন্তু তারাই এ কাজের সাথে যুক্ত কি-না আমি নিশ্চিত করে কীভাবে বলি স্যার?” মির্জাস্যার এবার হাসলেন, “তুমি তো বুদ্ধিমতি মেয়ে, বন্ধুদের বাঁচাতে চাইছো!” আমি মুহূর্তের জন্য ভাবলাম, তারপর বললাম, “দুঃখিত স্যার, যারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারে, আমি অন্তত তাদের আমার বন্ধু ভাবতে পারি না।” বাতেনস্যার চোখ বন্ধ করে উচ্চারণ করলেন, “হুম!” তারপর বললেন, “আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি আমাদের কাছে সেদিনের ঘটনা সবটা বল, আর কে কে গিয়েছিলো তা-ও বল।” আমি সেদিনের ঘটনা বিস্তারিত জানালাম, তাদের অধিকাংশের নাম আমি জানি না, তা-ও বললাম; ওরা সবাই আমার ইয়ারমেট নয় তা-ও বললাম। বাতেনস্যার বললেন, “যারা তোমার ইয়ারমেট তাদের নামই বল।” আমি এবার কিছুটা বিব্রত বোধ করছি। একটু কৌশল করে বললাম, “স্যার, কিছু মনে করবেন না; যখন কারও নামই বলতে পারছি না, তখন নিজের ইয়ারমেটের নাম বলাটা কি শোভন হবে? তা ছাড়া, ওর ভাষ্য অনুযায়ী ও আসলে যায়নি, যেহেতু ও আমার এলাকার ছেলে তাই অন্যরা তাকে নিয়ে গেছে।” এবার মির্জাস্যার স্নেহার্দ্র কণ্ঠে বললেন, “দেখ পারমিতা, তুমি নিজেই বলেছো, ঘটনা যা ঘটেছে তা ন্যাক্কারজনক; সবার নাম আমাদের জানা প্রয়োজন। মানছি যে তোমার ইয়ারমেট এবং তোমার এলাকার ছেলে, তার কোন ভূমিকা নেই, দোষও নেই; কিন্তু ওর কাছ থেকে তো প্রকৃত অপরাধীদের নামগুলো জানতে পারবো। তুমি কি চাও না দোষীদের শাস্তি হোক?” আমি নিজের চুলের বেণিটা নিয়ে নাড়াচাড়া করলাম একটু, তারপর বললাম, “নিশ্চয়ই চাই স্যার, তবে কোনো নিরপরাধী শাস্তি পাক সেটা চাই না। আর স্যার প্রথম অপরাধ হিসেবে আমি লঘুদণ্ড চাই।” বাতেনস্যার এবার উষ্মা প্রকাশ করলেন, “সব বিষয়ে তোমার মতামত চাইনি। এবার তুমি তোমার ইয়ারমেটের নামটা বল!” আমি কিছুটা বিচলিত হয়ে রেজার নামটা বলে দিলাম। আমাকে বিদায় দেয়া হলো। আমি মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটতে থাকলাম হোস্টেলের দিকে, বেশ ক’জন ছাত্র-ছাত্রী আমার সাথে হাঁটতে থাকলো। সবাই জানতে চায়, কী কী প্রশ্ন আমায় করা হয়েছে, কার কার নাম উচ্চারিত হয়ছে ইত্যাদি। আমি করো কোনো প্রশ্নের উত্তরই দিলাম না। আমার বুক ফেটে কান্না এলো। হোস্টেলের রুমে গিয়ে দরোজা বন্ধ করে কিছুক্ষণ কাঁদলাম। পারভিন পাশে বসে আমায় জড়িয়ে ধরলো। কান্নার সংক্রমণ ওর মধ্যেও বিস্তৃত হলো। অতঃপর দু’জন গলাগলি করে কাঁদলাম।
পরদিন কলেজে গিয়ে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। হোস্টেল গেইট, ক্যান্টিন, কলেজ লাউঞ্জ সর্বত্র আমার নামে পোস্টার সাঁটা হয়েছে। অধিকাংশ পোস্টারের ভাষাই অশালীন-অশ্লিল। আমি দ্রুত হোস্টেলে ফিরে গেলাম এবং দরোজা বন্ধ করে শুয়ে শুয়ে কাঁদলাম। আধঘণ্টা পর পারভিন এসে ডাকলো। ওকে দেখে আমার কান্না সশব্দ হলো। পারভিন যথেষ্ট উত্তেজিত; “ঘরে বসে কাঁদলে সবকিছুর মীমাংসা হবে? মুখ-হাত ধুয়ে নে, চল কলেজে যাই; স্যারদের সাথে কথা বলি।” আমি বিক্ষিপ্ত-এলোমেলো ছিলাম, “কী হবে স্যারদের বলে! কারা করেছে এসব? কেন করেছে?”
: জানি না।
: তাহলে, কী বলবো স্যারদের কাছে? কার নামে নালিশ জানাবো?
: নিশ্চয়ই এটা ওদের কাজ, যারা বাজি পুড়িয়েছে, যারা কলেজে রাতের শান্তি নষ্ট করেছে!
: কিন্তু কেনো! কী ক্ষতি করেছি আমি ওদের!
: ওদের ধারনা তুই ওদের নাম প্রকাশ করে দিয়েছিস।
: কিন্তু আমি তো ওদের নাম প্রকাশ করিনি; উল্টো ওদের যেনো লঘু শাস্তি দেয়া হয় তার জন্য সুপারিশ করেছি।
: তুই চল না, দেখা করি স্যারদের সাথে?
: না আমি কারো কাছে বিচার নিয়ে যাবো না! দেখি ওরা কত পোস্টার লাগাতে পারে!
আমার মনের মধ্যে একটা জেদ চেপে গেল, আমি শেষপর্যন্ত দেখতে চাই। বিচার নিয়ে গেলাম না কারো কাছে। পরদিন কলেজে গিয়ে দেখলাম আরও নতুন নতুন পোস্টার। আমার নামে কী-সব অকথ্য ভাষা লেখা হয়েছে! সব দেখে আমি ঘরে ফিরে এলাম। দুপুরের পর পারভিন এসে জানালো কলেজে আজ না-কি আমাকে নিয়ে তোলপাড়! পুলিশ মোতায়েন হয়েছে।
পরদিন কলেজে গিয়ে দেখলাম কোথাও কোনো দেয়ালে আমাকে নিয়ে কোনো পোস্টার নেই। গতকাল বিকেলে না-কি একদল ছাত্র অসভ্যতার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং নিজেরাই সমস্ত পোস্টার তুলে ফেলে। ওরা না-কি স্লোগান দিয়েছে, ‘পারমিতা তোমার ভয় নাই, আমরা আছি তোমার সাথে!’ রেজা না-কি সেই মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছে। আমি মনে মনে হাসলাম। যে আমায় এসব খবর শোনাচ্ছিলো, তাকে প্রশ্ন করলাম, “আচ্ছা রেজা কেনো হঠাৎ আমার ব্যাপারে অতটা আন্তরিক হয়ে উঠলো? না-কি ঘটনার নেপথ্যে ভিন্ন ঘটনাও আছে?” মেয়েটি আমার প্রশ্নে অবাক হলো, “আমি কী করে জানবো ঘটনার পেছনের ঘটনা! তবে রেজা বলছিলো, জামালপুর থেকে না-কি ওর লিডার সুমন নামে কেউ এসে তোর বিরুদ্ধে সব পোস্টার তুলে ফেলতে বলেছে।” অনুমান করলাম, অশান্তি এখানেও ডালপালা বিস্তার করছে! মনে মনে খুব অস্বস্তি বোধ করছিলাম, ভাবলাম মির্জাস্যারের সাথে বিষয়টা শেয়ার করে আসি। প্রশাসন ভবনে গিয়ে দেখি সবাই ব্যতিব্যস্ত; মির্জাস্যারের পিয়ন বলল, “মামা পরিস্থিতি খুবই গরম! ডিসি-এসপি আইছে, আরও সব বড় বড় নেতারা আইছে; মিটিং চলতাছে। মির্জাস্যার মিটিংয়ে আছেন; আইজ আর মনে হয় দেখা অইবো না।” বুঝলাম পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চলছে। সোজা হোস্টেলে ফিরে এলাম। মনে মনে সবুজের কথা স্মরণ করলাম। সবুজ বলেছিলো একা হবার কৌশল। আত্মার প্রশান্তি চাইলে নিজের অন্তর্জগৎ আবিষ্কার নাকি খুবই কার্যকর।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।