সোনালি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে

আগের সংবাদ

ফের ফিলিস্তিন নিয়ে কথা

পরের সংবাদ

অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ

এক হৃষিত বাঙালি নাট্যজন

প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১ , ১২:১২ পূর্বাহ্ণ আপডেট: জুন ১০, ২০২১ , ১১:৫৮ অপরাহ্ণ

শাহরিয়ার মাহমুদ প্রিন্স

মঞ্চ বেতার আর টেলিভিশন নিয়েই অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ সারাটা জীবন কাটালেন। তার কাছে নাটক কোনো শৌখিন শিল্পকলা ছিল না। একজন সৃজনশীল নাট্যকার হিসেবে মমতাজউদদীন আহমদ নানাভাবে নানান ভাবনায় বাংলার সমকালীন জীবনযাত্রা এবং বাঙালির রাজনৈতিক চেতনাবোধকে নাটকের সংলাপের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন।

বহুমাত্রিক সৃজনে সমৃদ্ধ অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদের নাট্যজীবন। যাপিত জীবনের দহন-পীড়ন, আঘাত-প্রতিঘাত, প্রেম-বিরহ-ভালোবাসাকে তিনি সরল সহজ ও রসবোধ দিয়ে মঞ্চে এনেছেন। এসব কারণে বাংলার নাট্যমঞ্চে মমতাজউদদীন অনিবার্যভাবেই এক অনন্য সাধারণ নাট্যকার হিসেব তার অবস্থানকে নিশ্চিত করতে পেরেছেন।

সহজ সরল প্রাণবন্ত অথচ তীব্র রাজনৈতিকভাবনা প্রসূত সংলাপ মমতাজউদদীন আহমদের নাটকের আর একটি বিশেষ বৈচিত্র্য। স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষিপ্রতায় মমতাজউদদীন আহমদ যখন ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’ কিম্বা ধর্মব্যবসায়ী জঙ্গিবাদী রাজাকারদের মুখোশ উন্মোচন করেন ‘ওহ তঞ্চক’ মঞ্চে উপস্থাপনের মাধ্যমে ঠিক তেমনিভাবেই অপরিমেয় মায়ামাখা এবং বিস্ময়কর সব সংলাপ দিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বোন’কে নব নাট্যরূপের মাধ্যমে প্রকাশ করে তিনিই বাংলার মঞ্চকে উদ্ভাসিত করেন।

একদা তুমুল জনপ্রিয় ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মমতাজউদদীন সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং গুণী শিক্ষক হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। এ কৃতিত্ব সবার ভাগ্যে জোটে না। তার ভাগ্য প্রসন্ন। শিক্ষক হিসেবে একনিষ্ঠ নিমগ্নতা তাকে এই বিরল সম্মান এনে দিয়েছে। শ্রেণিকক্ষের বাইরেও মমতাজউদদীন আহমদের অসংখ্য ছাত্র, ভক্ত, অনুরাগী। বরেণ্য অর্থনীতিবিদ এবং খ্যাতিমান লেখক ড. আতিউর রহমান মমতাজউদদীন আহমদের এই প্রসঙ্গটি নিয়ে তাই বলেছেনÑ

‘সারা বাংলাদেশেই ছিল এই মৃত্তিকাপুত্রের শ্রেণিকক্ষ।’ (দৈনিক সমকাল ৪ জুন, ২০১৯)

চট্টগ্রাম কলেজ ও চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে অধ্যাপনার সুবাদে মমতাজউদদীন আহমদ দীর্ঘকাল চট্টগ্রামে অবস্থান করতে হয়েছে। প্রারম্ভিকভাবে অধ্যাপক পরিচয়ের বাইরে নাট্যকার ও নাট্যনির্দেশক হিসেবে পরিচিতি প্রকাশের ক্ষেত্র প্রস্তুতে চট্টগ্রাম তাকে অনন্য উচ্চতায় উপস্থাপন করেছে। চট্টগ্রামের সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে মমতাজউদদীন আহমদের সক্রিয় সংযোগ স্থাপন ও প্রগতিবাদী চিন্তা চেতনার বহিপ্রকাশ চট্টগ্রামবাসীকে মুগ্ধ করেছিল। শিক্ষক হিসেবে তার যথার্থ মূল্যায়ন, সম্মান এবং ছাত্রছাত্রীর আকুণ্ঠ শ্রদ্ধা তিনি পেয়েছেন সমুদ্র তীরবর্তী চট্টগ্রাম থেকেই। মমতাজউদদীন আহমদ অকৃপণচিত্তে সেই ঋণ ও ভালোবাসার কথা লিখেছেন তার আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘এইতো আমি’।

চট্টগ্রামেই মমতাজউদদীন আহমদ প্রথম নাট্যরূপ দেন কাজী নজরুল ইসলামের ‘রাক্ষুসী’ গল্পের। ১৯৬০ সালে চট্টগ্রামে ‘নজরুল হীরক জয়ন্তী’ অনুষ্ঠানে এই নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছিল। আবার ১৯৬০ সালের প্রলঙ্ককারী জলোচ্ছ্বাসে শত শত, সহস্র সহস্র মানুষের মৃত্যু, জীবিতদের নিদারুণ যন্ত্রণা ও কষ্ট দেখে বিচলিত মমতাজউদদীন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই তাণ্ডবলীলাকে প্রামাণ্য করে লিখেন ‘তবু আমরা বাঁচবো’। এই নাটক ১৯৬১ সালে মঞ্চস্থ হয়। অর্থের বিনিময়ে টিকেট বিক্রি করে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ।

চট্টগ্রাম বেতারের প্রথম সম্প্রচারিত নাটকটিরও নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। এ বেতার কেন্দ্রের প্রথম নাটক ‘সাগর থেকে এলাম’ সম্প্রচারিত হয় ১৯৬২ সালে। মমতাজউদদীন এ প্রসঙ্গে নিজেই বলেছেনÑ

‘বেতারে অভিনয় শুরু করেছি ১৯৬২ সালে। লিখেছিও। চট্টগ্রাম বেতারের প্রথম নাটকটিও আমার লেখা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা বেতারে প্রচারিত হওয়া প্রথম নাটকটিও আমার লেখা। বাহাদুরির কিছু নেই হয়তো ঘটনাচক্রে ঘটে গেছে।’ (আমার নাট্য ভাবনা)

মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি ছিলেন মমতাজউদদীন আহমদ। এই দুঃসাহসিক অভিযাত্রাটিতে সরকারি কলেজের একজন অধ্যাপকের অংশগ্রহণ সহজতর বিষয় নয়। কিন্তু অদম্য সাহসী মমতাজউদদীন আহমদ পেরেছিলেন। ৩২ বছরের সরকারি কলেজের শিক্ষকতার জীবনে মমতাজউদদীন ন্যায়সঙ্গত সব সংগ্রামে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দান করেছেন। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন এবং সর্বোপরি মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রারম্ভিক পর্যায়েই তিনি ছিলেন সক্রিয় এবং সোচ্চার এক কণ্ঠস্বর।

৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণটি মমতাজউদদীনকে ভীষণভাবে আলোড়িত করেছিল। তিনি এই ঐতিহাসিক ভাষণের স্লোগান থেকেই নাটক লিখলেন ‘এবারের সংগ্রাম’ (রচনাকাল ১৪ মার্চ ১৯৭১) এবং ‘স্বাধীনতার সংগ্রাম’ (রচনাকাল ২১ মার্চ ১৯৭১) শিরোনামে। ‘এবারের সংগ্রাম’ মঞ্চস্থ হয় ১৫ মার্চ ১৯৭১ চট্টগ্রাম লালদীঘি ময়দানে।

বাংলাদেশের আরেকটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে মমতাজউদদীন আহমদের সংযুক্তি খুবই আলোচিত। কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্রটি প্রচার করা হয়েছিল এর রচয়িতা ছিলেন মমতাজউদদীন আহমদ। সাংবাদিক কামাল লোহানীর এ প্রসঙ্গে বলেনÑ

‘২৫ মার্চ ক্রাক ডাউনের পর যখন ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বেতার ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা চেষ্টা করলেন কি করে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে তারা সহযাত্রী হতে পারবেন। তারা তৈরি করলেন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। এবং সেই বেতার কেন্দ্র থেকে তারা ভাবলেন বাংলাদেশ থেকে যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে কর্মরত আছেন তারাও যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শামিল হয়েছেন এটাকে জানাবার জন্য একজন সামরিক কর্মকর্তাকে ডাকতে হবে। তারা গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রফিকের কাছে। রফিক বলেছিলেন, ‘আমার উপরে মেজর জিয়া আছেন। তার কাছে যান। জিয়া তখন পালিয়ে পটিয়ার দিকে চলে যাচ্ছে। সেখানে গ্রামের লোক তাকে আটকে দিয়েছে। সেখানে গিয়ে বেলাল মোহাম্মদ আর মাহমুদ হাসান দুজন মিলে তাকে (জিয়াকে) আবার নিয়ে আসলেন কালুরঘাট বেতার প্রক্ষেপণ কেন্দ্রে। সেখানে মমতাজউদদীন আহমদ উপস্থিত। মেজর জিয়া বক্তব্য লিখে ঘোষণা করবেন সেটা শুনে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে বাঙালি যারা আছেন তারা যেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনÑএই আহ্বানটা তার মাধ্যমে দেয়া হবে। তিনি লিখলেন। কিন্তু তিনি যেটা লিখলেন সেটা দুঃখজনক। মনে হলো দেশে একটা সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে, আমার সুযোগ হয়েছে আমি এখন অভ্যুত্থানের নেতা হয়ে হেড অব দি প্রভিশন্যাল গভমেন্ট হয়ে গেলাম। একথা শুনবার পর চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি তার জামাতার মাধ্যমে খবর পাঠালেনÑ এটা আর্মি ক্যু নয়, এটা একটি রাজনৈতিক যুদ্ধ। তখন মেজর জিয়াকে বেলাল মোহাম্মদসহ অন্যরা বোঝালেন। জিয়া মনটাকে পরিবর্তন করে লেখার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কি লিখবেন বুঝতে পারছেন না। কিভাবে তিনি আহ্বান জানাবেন বুঝতে পারছেন না। ইংরেজি লিখলেন। এটা লেখার পর এটা তো বাংলায় লিখে বেতারে প্রচার করতে হবে। এবং এটা তো জিয়ার কণ্ঠেই প্রচারিত হবে। এটা বাংলা অনুবাদ করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবেই প্রস্তুত হয়ে গেলেন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। মমতাজউদদীন মুখে বলছেন তাঁরই আরেক ছাত্র সাতাকানিয়া কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাশেম সন্দ্বীপ সেটি লিখে যাচ্ছেন। পরবর্তীকালে জিয়া সেটাই পাঠ করেছিলেন।

স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অনেকে অনেক জায়গায় দাবি করেন। সেকারণেই (১৮ জানুয়ারি ২০১৯) এমন একটা মোক্ষম সময়ে মমতাজউদদীন আহমদের ৮৫তম জন্মদিনে এ কথাটি বলতে পেরে আমার ভালো লাগছে।

(১৮ জানুয়ারি ২০১৯ আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদের ৮৫তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যের অংশ বিশেষ)’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চট্টগ্রামে একঝাক তরুণ ছাত্রদের নিয়ে মমতাজউদদীন আহমদ গড়ে তুললেন থিয়েটার ’৭৩। বেশ কিছু সফল নাটক চট্টগ্রামের মঞ্চে উপহার দিয়েছিল থিয়েটার ’৭৩। মমতাজউদদীন আহমদের অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র গোলাম কুদ্দুছ এবং অধ্যাপক জিয়াউল হাসান কিসলু এ সময়ের নাট্য আন্দোলনে তার সহযাত্রী ছিলেন। ফলাফল নিম্নচাপ, বর্ণচোরা, হরিণ চিতা চিল, যামিনীর শেষ সংলাপ ইত্যাদি নাটকের মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের সূত্রপাতে অন্যতম প্রধান কারিগরের ভূমিকা পালন করেন।

 

১৯৭৬-এ ঢাকায় বদলি হয়ে এসে মমতাজউদদীন কাজ করেছেন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে একজন উচ্চতর বিশেষজ্ঞ ও বাংলা উপকমিটির আহ্বায়ক হিসেবে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে তার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্পষ্ট। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং ড. কুদরাত-এ-খুদার শিক্ষা কমিশনের আলোকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নে আগ্রহী ছিলেন। অধ্যাপক শফিউল আলম এ নিয়ে লিখেছেনÑ

‘১৯৭৪ সালে প্রকাশিত কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিটির সুপারিশের আলোকে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি যে সাত খণ্ডে কমিটির রিপোর্টে প্রকাশিত হয় প্রতিটি খণ্ডে আছে অধ্যাপক মমতাজউদদীনের উজ্জ্বল সম্পাদনার স্পর্শ। মঞ্চে, টেলিভিশনে, মমতাজউদদীনের নাটক দেখেছি, তার শিশুতোষ গল্প পড়েছি, ছাত্র হিসেবে শ্রেণিকক্ষে তার বক্তৃতা শুনেছি, সভামঞ্চে তার উন্মুক্ত সরস উপস্থাপন দেখেছি, ভাষণ শুনেছি। পাঠ্যবই রচনায়, সভা-সেমিনারে এক সঙ্গে অংশ নিয়েছি, তার সম্পাদিত ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’ গ্রন্থে তার আগ্রহে আমার লেখা সংকলিত হয়েছে, বাসে-রিকশায় এক সঙ্গে ভ্রমণ করেছি, নানা বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছি তার সঙ্গে, একাডেমিক তর্ক হয়েছে অনেকবার। তিনি তার ব্যক্তিত্বের অনুপম প্রসাধনীতে সব সময় সব বিষয়কে গৌরবময় করে তুলেছেন, তার এ অনন্যতা অটুট ছিল আজীবন। তিনি সতত মানুষের দৃষ্টির মধ্যে আছেন, কাছে আছেন, ঈর্ষণীয় আকর্ষণ আছে তার।’

মমতাজউদদীন ১৯৭৭-৭৮ সালে কাজ করেছেন শিল্পকলা একাডেমিতে। প্রকাশনা ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ছিলেন তিনি। শিল্পকলা একাডেমিতে তখন বাঙালি সাহিত্য সংস্কৃতির আদল বদলে বাংলাদেশি মুসলিম সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশে একদল সাহিত্য-সংস্কৃতিসেবী উন্মাদ হয়ে উঠেছিল। মমতাজউদদীন এ থেকে মুক্তির জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে অবশেষে আবার প্রিয় পেশা শিক্ষকতায় ফিরে গেলেন। জগন্নাথ কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নতুন কর্মজীবন মমতাজউদদীন আহমদের নাট্যপ্রাণ হৃদয়ে আশার সঞ্চার এনে দিল। মঞ্চ, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রের সব মাধ্যমেই তিনি ছিলেন চৌকস অভিনেতা, নাট্যকার এবং নির্দেশক। এসবক্ষেত্রে প্রণম্য মমতাজউদদীনের নাট্যভাবনায় বারংবার বাংলার শেকড়ের কথা, মুক্তিযুদ্ধজাত বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তাই আলোচিত হয়েছে বারবার। তঞ্চক, ঠক, মতলববাজ ও দুষ্ট রাজনীতির প্রতি মমতাজউদদীন যখন ব্যঙ্গ বিদ্রƒপ প্রকাশ করেন তীব্র ভাষায় ঠিক তখনই তিনি অবলম্বন করেন একটি সক্রিয় নাট্যভাষা। এ নাট্যভাষার রূপরচয়িতায় তিনিই একজন পথিকৃত এবং প্রধানতম প্রবর্তকও বটে।

‘সাতঘাটের কানাকড়ি’ মমতাজউদদীনের সমসময়ের একটি উল্লেখযোগ্য নাটক। প্রকাশভঙ্গির সারল্য এবং আঙ্গিকের বৈচিত্র্যময়তার মধ্যেও তিনি প্রকাশ করেছেন সতত সত্য ও সাহসের প্রত্যক্ষ প্রবাহকে। আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় মমতাজউদদীন ছিলেন অন্যতম একজন কুশিলব। তিনি বিগত হয়েছে ২০১৯ সালের ২ জুন। শ্রদ্ধা রইলো তাঁর প্রতি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়