×

সারাদেশ

নোয়াখালীতে ডায়রিয়ায় এক সপ্তাহে মৃত্যু ১০, আক্রান্ত সহস্রাধিক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২১, ০৯:১৩ পিএম

নোয়াখালীতে ডায়রিয়ায় এক সপ্তাহে মৃত্যু ১০, আক্রান্ত সহস্রাধিক

টিউবওয়েলের পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি আয়রন ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ায় এই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। ছবি: ভোরের কাগজ

নোয়াখালীতে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১০ জন। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে ৬ শতাধিক আক্রান্ত ও ৬ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন অফিস, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল, সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা জন প্রতিনিধিদের সূত্রে জানা গেছে, মাত্রাতিরিক্ত গরমে জেলার প্রায় পুকুর, দিঘি-নালা, নর্দমা শুকিয়ে গেছে। যার ফলে গভীর ও অগভীর নলকূপের পানির স্তর নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলের পানি লবনাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে। এতে সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, সদর ও বেগমগঞ্জে ব্যাপক হারে ডায়রিয়া রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাছুম ইফতেখার জানান, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৬০৬ জন। এর মধ্যে ৬ জন মারা গেছে। এর আগে এপ্রিল ও মে মাসে জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল ৪ হাজার ৭৭১ জন এবং মারা গিয়েছেন ১৪ জন।

সুবর্ণচর, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশী বলে জানিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফ উদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী।

সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা এলাকার প্রায় বাড়িতে ২/৩ জন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী রয়েছে। তবে এদের মধ্যে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশী বলে জানা গেছে। স্থানীয় আবুল কাশেম, আবদুর রহমান, নুরুল হুদাসহ এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ সময় গরমে তাদের বাড়ির পুকুরগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় তারা টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছেন। টিউবওয়েলের পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি আয়রন ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ায় এবং বৃষ্টির পর পুকুরের জমানো পানি ব্যবহার করেই এই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকা জরিপ করে দেখেছে যে, উপজেলার চরজব্বর, চরবাটা, চর জুবলী এলাকায় আক্রান্তের হার বেশি। এই পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে সচেতন হওয়ার জন্য তারা প্রচারনা চালাচ্ছেন।

সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শায়লা জানান, কিছুতেই এ উপজেলার ডায়রিয়া পরিস্থিতি আয়ত্বে আনা যাচ্ছে না। এখানে ডায়রিয়ার এন্টিবায়োটিক ঔষধসহ পর্যাপ্ত কলেরা স্যালাইনেরও অভাব দেখা দিয়েছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ আনোয়ারা বেগম বলেন, গত নয় দিনে আমাদের এই ওয়ার্ডে শিশুসহ ৪৮৩ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জন রোগী মারা গেছেন। ডায়রিয়ার এন্টিবায়িক ঔষধসহ পর্যাপ্ত স্যালাইনের সংকটের কথাও জানান তিনি।

এদিকে নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ ও চাটখিলেও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারী হাসপাতাল ছাড়াও প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতেও ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলায় কলেরা স্যালাইনসহ পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ রয়েছে বলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App