×

সারাদেশ

কালীগঞ্জে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি, বিদ্যুৎ গেলেই অন্ধকারে রোগীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২১, ১০:১৫ পিএম

কালীগঞ্জে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি, বিদ্যুৎ গেলেই অন্ধকারে রোগীরা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করা হচ্ছে। ছবি: ভোরের কাগজ

কালীগঞ্জে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি, বিদ্যুৎ গেলেই অন্ধকারে রোগীরা

বিদ্যুৎ না থাকলেই অন্ধকারে থাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ছবি: ভোরের কাগজ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ না থাকায় ইসিজি করা হয় মোমবাতি জ্বালিয়ে। লোডশেডিং হলেই অন্ধকারে থাকতে হয় রোগীদের। এছাড়াও ঝড়ে বৈদ্যুতিক তার ক্ষতিগ্রস্থ হলে দীর্ঘ সময়েও আসেনা বিদ্যুৎ।

হাসপাতালের জেনারেটর দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এটি মেরামত করার জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নেননি বলে হাসপাতালে আগত রোগী ও স্থানীয়রা জানান।

রবিবার (৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার মহেশ্বরচাঁদা গ্রামের মোহাম্মদ আলী বজ্রপাতে আহত হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে আসার দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে চার্জার মেশিন দিয়ে ইসিজি করা হয়। এরপর জানা যায় তিনি মারা গেছেন।

এদিকে, সোমবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুটলিয়া নামক স্থানে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে। এতে জেলার কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। আর এ সময় অন্ধকারে থাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়নি। রোগীর স্বজনরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেন।

বজ্রপাতে নিহত মোহাম্মদ আলীর ভাইপো মিঠু মালিথা জানান, তার চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার দুই ঘণ্টা পর মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করা হয়। ইসিজি করার পর চিকিৎসকরা চাচাকে মৃত ঘোষণা করেন। সরকারি হাসপাতালে মোমবাতি জ্বালিয়ে ইসিজি করার ঘটনা বিরল।

[caption id="attachment_289189" align="aligncenter" width="687"] বিদ্যুৎ না থাকলেই অন্ধকারে থাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

হাসপাতালটির পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি কোলা বাজার এলাকার মুহিত নামে এক রোগী জানান, সোমবার রাতে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা অন্ধকারে ছিলাম। হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার আলোর ব্যবস্থা করা হয়নি।

মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি উপজেলার বেজপাড়া এলাকার শীতা রাণীর স্বজন মিতা রাণী বলেন, সোমবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর গভীর রাতে বিদ্যুৎ আসে। দীর্ঘসময় হাসপাতাল অন্ধকারে ছিল। নিজেরা মোমবাতি কিনে জ্বালিয়ে খাওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। মোমবাতি না কিনলে রোগীকে ওষুধ দিবেন না বলে হাসপাতালের নার্সরা স্বজনদের জানান।

তারা বানু নামের আরেক রোগী জানান, সোমবার সন্ধ্যার আগে থেকে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত অন্ধকারে ছিলাম। নিজেরা মোমবাতি কিনে আলোর ব্যবস্থা করেছি।

এ ব্যাপারে জানতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন লুবনার মুঠোফোনে জেনারেটর বিষয়য়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালে আসতে হবে। মুঠো ফোনে কোনো তথ্য দিবো না বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জেনারেটর বিষয়ে কিছুই জানাননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App