×

মুক্তচিন্তা

পল্লবীতে সাহিনুদ্দিন হত্যা এবং ক্রসফায়ার কালচার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২১, ১২:১৯ এএম

নশ^র এই পৃথিবীতে বিচরণকাল মোটামুটি ৭০-৯০ বছর। এরপর বাঁচলেও মানুষ সাধারণত সচল সক্ষম থাকে না। সম্রাট অশোক, মুঘল সম্রাট আকবর, নবাব মীরজাফর খান কেউ নেই। পড়ে আছে তাদের ফেলে যাওয়া প্রসাদ, দুর্গ। সেই ক্ষমতা, বিরাট বাহিনী, পরিষদ কিছুই নেই। কল্যাণকর কাজগুলো মানুষ এখনো স্মরণ করে। মীরজাফরকে ঘৃণা করে মানুষ এখনো। এই স্বল্পকালীন সময়ে সম্পদ অর্জনে ক্ষমতা ভোগ করার জন্য কিছু মানুষ সব অপরাধ করে থাকে। কোভিড-১৯ এর চাক্ষুস মৃত্যুর ঘটনাও কিছু মানুষকে বিচলিত বা ভীত করেনি। এত কথার উৎপত্তির কারণ সাম্প্রতিক একটি জাতীয় দৈনিকের একটি সংবাদ শিরোনাম ‘আড়ালের কারিগররা থেকে যায় আড়ালেই’ ঘটনাটি ঘটে পল্লবীর অলিনগওে একটি জমি জবর দখলকে কেন্দ্র করে। ১৬ মে পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় পুত্র সন্তানের সামনে প্রকাশ্যে সাহিনুদ্দিন নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার মূল কুশলীব হাভেলী প্রপার্টিজের এমডি লক্ষ্মীপুর- ১ আসনের সাবেক সাংসদ এবং ইসলামিক গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল। নিহত ব্যক্তি ছিল ওই ১০ একর জবর দখলের মূল বাধা। উল্লেখ্য, দেশের বড় বড় প্রখ্যাত অধিকাংশ আবাসিক (বেসরকারি) এলাকা তৈরি এবং সেসব প্লটের তৈরি বড় বড় দালানের নিচে চাপা পড়ে আছে অনেক ভূমি পুত্রের সকরুণ আর্তনাদ। আমার নিজ এলাকা সীতাকুন্ড থানার বাড়বকুন্ড বাঁশবাড়ীয়া এলাকায় শিল্পপতিরা বনবিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন কয়েকশ একর জমি জবর দখল করে শিল্পকারখানা তৈরি করেছে। আমাদের পরিবারিক কয়েক একর জমি অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইয়াবা এবং মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলে র‌্যাব-পুলিশ প্রধানগণ গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেন। ফলে অবলীলাক্রমে ইয়াবা এবং মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার হতে থাকে। চালু হয় ক্ষেত্রবিশেষে ক্রশফায়ার। প্রায় ৩০০-এর মতো ব্যক্তির মৃত্যুর পর এবং কক্সবাজারের কমিশনার এনামুলের ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার অডিও ফাঁস হলে কয়েকদিন ক্রসফায়ার থমকে ছিল। এরপর পুনরায় শুরু হয় সেই একই ঘটনা। ক্রসফায়ারে প্রথম র‌্যাব এরপর পুলিশ, বিজিবিও সেই পথে হাঁটছে। কক্সবাজারে মেজর সিনহার মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন ক্রসফায়ার বন্ধ ছিল। আশা করা গিয়েছিল মেজর সিনহা নিজ রক্ত দিয়ে দেশকে ‘ক্রসফায়ার’ মুক্ত করলেন। না পুনরায় বিভিন্ন বাহিনী নির্বিকারভাবে এটা শুরু করেছে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। জনস্বার্থে অভিজ্ঞজনদের কয়েকটি পরামর্শ বিবেচনা করা যেতে পারে। (১) পুলিশ সুপার ৫ বৎসরের জেলায় মেট্টোপলিটন এলাকা এবং এপিবিএন এ কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের নায়কের দায়িত্ব দেয়া যায় (২) যে ব্যাটালিনের অধিনায়ক প্রতিরক্ষা বাহিনীর তার সহ-অধিনায়ক হবেন জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (৩) বাহিনীসমূহের অনুপাত পুলিশ+প্রতিরক্ষা বাহিনী+ বিজিবি আনসার ৬০+৩০+১০ করা যেতে পারে। যা সময়ের চাহিদায় পরিবর্তন যোগ্য। (৪) ৩টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে একটা র‌্যাব সেক্টর/ রেঞ্জ করা যায় যার প্রধান হবেন একজন অতিরিক্ত ডিআইজি ৪ বছর। উল্লেখিত পদক্ষেপগুলো সম্মান সমন্বয় ২টাই হবে। র‌্যাবের একটি এলিট ফোর্স ইতোমধ্যে জঙ্গি দমনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার করে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। অভ্যন্তরীণ টানপড়েন কাটিয়ে আগামীতে আরো অধিক কল্যাণমূলক কাজ করবে সেটা সবার কাম্য।

মো. নূরুল আনোয়ার সাবেক আইজিপি ও লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App