বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের আগারপুঞ্জি ও বনাখলাপুঞ্জি পরিদর্শন করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি দল। এসময় পানগাছ কর্তন এবং জুম দখলের বিষয়ে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানায় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

মঙ্গলবার (০৮ জুন) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আগারপুঞ্জি ও বনাখলাপুঞ্জি এলাকা ঘুরে দেখেন। এসময় তারা আগারপুঞ্জির মান্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) সুখমন আমসে এবং বনাখলাপুঞ্জি নারী মান্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) নরা ধারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের কাছ থেকে পানগাছ কর্তন ও জুম দখলের বর্ণনা শোনেন।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন কণা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহা তানজীম তিতিল, বাপা’র প্রতিনিধি মো. আমিনুর রসুল বাবুল, এক্টিভিস্ট মাসুদ আলম, সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক তন্ময় মোদক ও আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ প্রমুখ।

ক্ষতিগ্রস্থ পানপুঞ্জি পরিদর্শন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, একটি রাষ্ট্র কতটা ভালো চলে তা মাপার গজকাটি হলো সে রাষ্ট্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘু কিংবা জাতিগত সংখ্যালঘু কতটা ভালো আছে। তার ওপর নির্ভর করে। তারা যদি ভালো থাকে তাহলে ধরে নেওয়া যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষও ভালো আছে। এখানে বড়লেখার দুটি ঘটনার খবর পেয়ে আমরা এসেছি। এই খবরগুলো আমাদের মন খারাপ করে দিয়েছে। পানগাছ কর্তন এবং জুম দখলের বিষয়ে জড়িতদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তারা যেন নিরাপদে পানজুম করতে পারেন এই নিরাপত্তাটুকু তাদের দিতে হবে। এছাড়া খাসিদের ভূমির সমস্যা সমাধানে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের আগারপুঞ্জির পানজুমের সহস্রাধিক পানগাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় পুঞ্জির মান্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) সুখমন আমসে বড়লেখা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অন্যদিকে বনাখলাপুঞ্জির খাসিয়া আদিবাসিদের ৭০ একর জুমের জায়গা দখল করে তাদের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে দুস্কৃতিকারিরা। পরে সেখানে তারা কয়েকটি ঘরও নির্মাণ করে। এই ঘটনায় পুঞ্জির নারী মান্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) নরা ধার ও ছোটলেখা বাগানের প্রধান টিলা করণিক মো. দেওয়ান মাসুদ থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। জুম দখলের সাতদিন পর উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পানজুমটি দখলমুক্ত করে খাসিয়াদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।