×

খেলা

সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার সামনে জামাল-তপুরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২১, ০২:৫৭ পিএম

সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার সামনে জামাল-তপুরা

ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে শিষ্যদের নিয়ে ছক কষছেন কোচ জেমি ডে

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে আজ সোমবার (৭ জুন) মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ভারতের বিপক্ষে জিততে মরিয়া হয়ে আছে জামাল ভূঁইয়া-তপু বর্মনরা। এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট তুলে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তাই লক্ষ্যে রণ কৌশল সাজাচ্ছেন জাতীয় দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে।

সোমবার (৭ জুন) কাতারের দোহার জাসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বেসরকারি টিভি চ্যানেল টি-স্পোর্টস ও গাজী টিভি।

এর আগে দোহাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের রক্ষণকে বড় পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়েছে। এবারও ভারতের বিপক্ষে তাই হতে পারে।

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ ও ভারত খেলছে গ্রুপ ‘ই’তে। এ গ্রুপে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে রয়েছে কাতার, ওমান ও আফগানিস্তান। এই গ্রুপে এখন পর্যন্ত জয় না পাওয়া দল হলো বাংলাদেশ ও ভারত। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে প্রতিবেশী এই দুই দেশ খেলে ২০১৯ সালে। সেটি ছিল ভারতের হোম ম্যাচ। কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। ৪২ মিনিটে বাংলাদেশের সাদ উদ্দিন গোল করে এগিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু ৮৮ মিনিটের সময় ভারতের আদিল খান গোল করে বাংলাদেশের জয় একপ্রকার ছিনিয়ে নেন। প্রায় নিশ্চিত হারা ম্যাচ ভারত ড্র করলে বাংলাদেশ জয়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়।

দুই দলই এখন জয়ের জন্য মরিয়া। বিশেষ করে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ভারতের বিপক্ষে গত ২২ বছরে কোনো জয় পায়নি। সোমবারের ম্যাচটির মাধ্যমে দুই দল ৩০তম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। আগের ২৯ দেখায় ভারত ১৫ ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে। বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র দুটি ম্যাচে। আর বাকি ১২টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। বাংলাদেশ সর্বশেষ জয়টি পেয়েছে ১৯৯৯ সালে। সেটি ছিল দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয়টি এসেছিল ১৯৯১ সালে। সেটিও ছিল দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসের ম্যাচ। তবে ভারতও কিন্তু দীর্ঘদিন বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পায়নি। শুনলে হয়তো অনেকে অবাক লাগবে যে ভারত বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষবার জয় পেয়েছিল ২০০৯ সালে। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে আরও তিনবার মুখোমুখি হয়ে একবারো তারা জয় পায়নি। উল্টো ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে তো প্রায় হেরেই গিয়েছিল তারা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৯ সালে বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচে ভারতের হয়ে গোল করেন আদিল খান। সেই আদিল খান হলেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড়। ভারতীয় স্ট্রাইকারদের বাংলাদেশের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা সামলান ঠিকই, কিন্তু আদিল খান হঠাৎ করে গোল করে বসেন। ওই ম্যাচটির শেষ দিকে বাংলাদেশ রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেছিল। আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

ভারতের স্ট্রাইকাররা যে খুব বেশি ভয়ানক না তা কাতারের বিপক্ষে খেলা তাদের শেষ ম্যাচটির দিকে তাকালে বোঝা যাবে। তবে তাদের রক্ষণভাগ খুব শক্তিশালী, সেটিও কিন্তু তারা দেখিয়েছে কাতারের বিপক্ষে ম্যাচটিতে। বর্তমানে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন কাতার ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে। কিন্তু সে ম্যাচটিতে তারা ভারতের গোলবার লক্ষ্য করে ১০ বার শট করে। অন্যদিকে ভারত কাতারের জাল লক্ষ্য করে একবারো শট করতে পারেনি। ভারতের ডিফেন্ডাররা যদি অসাধারণ কিছু না করে দেখাতেন তাহলে কাতারের বিপক্ষে ভারতের গোল হজম করার সংখ্যাটা অনেক বেশি হতো।

অন্যদিকে বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বেশ ভালোই খেলে। জামালরা আফগানদের জাল লক্ষ্য করে মোট চারবার শট করতে সমর্থ হয়। অন্যদিকে আফগানিস্তান করে পাঁচবার শট। মানে দুই দলই সমানে সমানে লড়াই করেছিল।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ড্র করতে পারায় বাংলাদেশ এখন অনেকটা স্বস্তিতে আছে। ভারত বাছাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। তারা ম্যাচের ৯৩ মিনিটের সময় একটি গোল করে কোনোমতে ড্র করেছিল। সেই আফগানিস্তানকে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে রুখে দিয়েছে বাংলাদেশ। তাই ভারতকে বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার খুব বড় কোনো কারণ নেই।

বাংলাদেশ ও ভারত এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ বাছাইয়ে একটি ম্যাচেও জয় তুলে নিতে না পারায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এই দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। ফলে এখন দুই দলের সামনে সুযোগ হলো এশিয়ান কাপের পরবর্তী রাউন্ডে জায়গা করে নেওয়ার।

বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে মাত্র একবারই খেলেছে। অন্যদিকে ভারত এশিয়ান কাপে খেলে নিয়মিত। সর্বশেষ আসরেও খেলেছে তারা। এখন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পরবর্তী রাউন্ডে জায়গা করে নেওয়ার জন্য ভারতের সামনে বাংলাদেশের ম্যাচটি বাঁচা-মরার লড়াইয়ের মতো হয়ে গেছে। ফলে এখন তারা বাংলাদেশের চেয়ে একটু বেশি চাপে থাকবে।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য ভারত বাংলাদেশের অনেক দূর এগিয়ে আছে। সর্বশেষ প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতের অবস্থান ১০৫। আর বাংলাদেশের অবস্থান হলো ১৮৪। দুই দলের মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ের ফারাক হলো ৭৯। কিন্তু ফুটবল হলো মাঠের খেলা। র‌্যাঙ্কিং কোনো বিষয় নয়। সেটি বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছে।

র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা দল চমক দেখিয়েছে। এর অনেক উদাহরণ আছে। আর বাংলাদেশও ভারতকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রুখে দিয়েছে।

বাংলাদেশ দলের হয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলটি করেন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় তপু বর্মন। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে গোল করা সাদ উদ্দিন ইনজুরির কারণে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি। এখন দেখার বিষয় আজ ভারতের বিপক্ষে তার অভাবটা পূরণ করেন কে?

ভারতকে প্রথম ম্যাচে রুখে দিতে দলটির অধিনায়ক ও সেরা খেলোয়াড় সুনীলের দিকে বাড়তি নজর রেখেছিল বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচটিতেও তার দিকেই বাড়তি নজর রাখতে হবে। তাকে যদি আটকে রাখা যায় তাহলে ভারতকে আটকে রাখাটাও সহজ হবে। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে পর পর দুটো ম্যাচে এই সুনীল ছেত্রির কারণে জয় নিয়ে ফিরতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App