×

জাতীয়

অর্থপাচারের তথ্য চেয়ে চিঠি দিলেও জবাব পায় না দুদক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২১, ০৬:২৬ পিএম

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা নিয়ে বিভিন্ন সময় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও কোনো সমাধান মেলে না। অপরাধীদের শাস্তিও নিশ্চিত করা যায় না। এ অবস্থায় বিদেশে অর্থপাচারের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন দেশে চিঠি পাঠানো হলেও অধিকাংশ সময় জবাব পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।

সোমবার (৭ জুন) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সমস্যা হচ্ছে কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অ্যাগ্রিমেন্ট নেই। ফলে তারা বাধ্য নন তথ্য পাঠাতে। তারপরও মানিলন্ডারিং ইস্যুতে অনেক দেশে তথ্য চেয়েছি। তাদের আগ্রহ থাকলে মাঝে মাঝে তথ্য পাওয়া যায়।

দুদক সচিব বলেন, মানিলন্ডারিং ইস্যুতে বিভিন্ন দপ্তর থেকেও অভিযোগ আসে আমাদের কাছে। তবে অভিযোগ সুনির্দিষ্ট না হলে আমরা নিতে পারি না। আবার মানিলন্ডারিংয়ের সব অভিযোগ দুদকের তফসিলভুক্ত নয়। দুদক কেবল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট অভিযোগগুলো অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারে।

বর্তমানে মানিলন্ডারিং ইস্যুতে দুদকের মামলায় সাজার হার শতভাগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ঘুষ বা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করার ঘটনা দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত করে থাকে। বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ বিদেশে পাচারের ঘটনা তদন্ত করে এনবিআর। আর হুন্ডি বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থ পাচার হলে তা পুলিশের সিআইডি তদন্ত করে।

জানা যায়, অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন করা হয় ২০১২ সালে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর এ আইন সংশোধন করা হয়। আইন অনুযায়ী, বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়মবহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচার মানিলন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থ বা সম্পত্তি পাচার হিসেবে যেসব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে দেশের বাইরে সম্পত্তি বা অর্থ প্রেরণ বা রক্ষণ বা দেশের বাইরের যে অর্থ-সম্পত্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রয়েছে এবং যা বাংলাদেশে আনয়নযোগ্য ছিল, কিন্তু তা আনা থেকে বিরত থাকা বা বিদেশ থেকে প্রকৃত পাওনা দেশে না আনা বা বিদেশে প্রকৃত দেনার অতিরিক্ত পরিশোধ করা ইত্যাদি। মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন চার বছর ও সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও করা হতে পারে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে বছরে ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার নজিরও আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App