×

খেলা

ভারত সব সময় নার্ভাসনেসে ভুগে : কায়সার হামিদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২১, ১০:২৮ পিএম

ভারত সব সময় নার্ভাসনেসে ভুগে : কায়সার হামিদ

কায়সার হামিদ

জাতীয় ফুটবল দলের এক সময়ের অধিনায়ক কায়সার হামিদ বাংলাদেশে ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবে স্বীকৃত। তিনি ‘মোহামেডানের কায়সার হামিদ’ নামেই পরিচিত ছিলেন। সাদা-কালো ক্লাবটির জার্সিতে খেলেছেন ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত। এর আগে খেলেছেন রহমতগঞ্জ ও বিজেএমসিতে। জাতীয় দলের খেলেছেন ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত। তার অধিনায়কত্বেই বাংলাদেশ (লাল দল) প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় ১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে। ৭টি সাফ গেমস এবং তিনটি বিশ্বকাপ বাছাই খেলেছেন কায়সার হামিদ।

১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি ও ১৯৯০ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কায়সার হামিদকে সেরা ফুটবলার নির্বাচিত করে। তিনি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৩ সালে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সেরা একাদশ নির্বাচন করেছিল। সে তালিকায় ছিলেন কায়সার হামিদ। ছিলেন ২০০৫ সালে বাফুফে কর্তৃক সম্মানিত ১০ জন ফুটবলারের মধ্যেও। তার অন্যতম পরিচয়, তিনি নারী দাবাড়ু রাণী হামিদের ছেলে।

কাতার বিশ্বকাপ-২০২২ ও ২০২৩ সালে চীনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে সোমবার ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচ নিয়ে রবিবার ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাচারিতায় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ বলেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে খেলাটা খেলেছে ভারতের বিপক্ষে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে এ ম্যাচে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জয় পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। মাঠে শক্তির বিচারে বাংলাদেশ-ভারত কাছাকাছি। গত ম্যাচে আমরা ওদের মাঠে ড্র করেছি। ভারত সব সময় আমাদের বিপক্ষে নার্ভাসনেসে ভুগে। জেমি ডের শিষ্যরা সোমবার প্রথমে নিজেদের ঘর সামলিয়ে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার পন্থা অবলম্বন করতে হবে, সেই সঙ্গে গোলরক্ষককে বেশ সর্তক থাকতে হবে। কোনো গিফট দেয়া যাবে না। গোলরক্ষকের ভুলে গোল হজম করলে তা পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আমি যেহেতু রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ছিলাম, তাই বলব রক্ষণভাগে যারা দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তারা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের কড়া মার্কিয়ে রাখলে এবং ভুল না করলে আমাদের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রা সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবে জামাল ভূঁইয়ারা।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ভারত ১০৫ এবং বাংলাদেশ ১৮৪তম স্থানে রয়েছে। র‌্যাংকিং সম্পর্কে রক্ষণভাগের অতন্দ্রপ্রহরী কায়সার হামিদ বলেন, মাঠের খেলায় যারা যে দিন প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে সে দিন তারাই জয় পায়। বিশ্বকাপেও আমরা দেখেছি র‌্যাংকিংয়ে যোজন যোজন দূরে পিছিয়ে থাকা অনেক দল বড় দলকে হারিয়ে দিয়েছে ছোট দল। গত দুই-তিন বছরে ভারত ফুটবলে বেশ উন্নতি করেছে। আমরা র‌্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকলেও ভারত আমাদের বিপক্ষে শেষ ৩ ম্যাচে জিততে পারেনি। ৩টি ম্যাচই ড্র হয়েছে। মানে সাম্প্রতিক সময়ে দুদলের শক্তিই সমান সমান। শেষ ৩টি ম্যাচ ড্র হওয়া মানে এটিই বোঝায়। এই শেষ ৩টি ম্যাচের মধ্যে ২০১৩ সালে সাফ-চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে ১-১ গোলের ড্র। ২০১৪ সালে প্রীতি ম্যাচে ২-২ গোলের ড্র এবং ২০১৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সে দিন কলকাতার ৮০ হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল। আমরা সেই ম্যাচে নিজেদের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা ভারতকে প্রায় হারিয়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে একটি গোল হজম করায় ১-১ গোলের ড্র নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। সেই ম্যাচটিতে বাংলাদেশকে জয় না পাওয়ার একটি আক্ষেপ নিয়েও মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। সোমবার ভারতকে যদি তারা হারাতে পারে তাহলে অ্যাওয়ে ম্যাচে জয় না পাওয়ার আক্ষেপটি মিটবে। চিন্তার আরেক কারণ হলো, বাংলাদেশ দল এক ম্যাচ ভালো খেললে পরের ম্যাচে একটু গা ছাড়াভাবে খেলে। এই ধারা পরিবর্তন করে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।

আগের ম্যাচে ভুলত্রুটি সম্পর্কে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ডিফেন্সে ছোটখাটো যে ভুলগুলো হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে সেই ভুল শোধরে রক্ষণভাগ এবং গোলরক্ষককে সেফটি ফুটবল খেলতে হবে। গোল হজম করব না। এ মনোবল নিয়ে খেলতে হবে। মোদ্দা কথা ঝুঁকিপূর্ণ ফুটবল না খেললেই হয়। সিম্পল ফুটবল খেললেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে বাংলাদেশ দল।

ভারতের বিপক্ষে নিজের একটি ম্যাচের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভোরের কাগজকে কায়সার হামিদ জানান, সাফ গেমসের একটি ম্যাচে আমরা ভারতের বিপক্ষে অনেক গোল মিস করে পরে টাইব্রেকারে হেরেছিলাম। ওই ম্যাচে টাইব্রেকারে আমি গোল করেছিলাম। শেখ মোহাম্মদ আসলাম এবং ইউসুফ ভাই গোল মিস করায় আমরা হেরেছিলাম। ঘরের মাঠে ওই ম্যাচে ভারতকে না হারাতে পারার স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App