×

রাজনীতি

বেক্সিমকোর চাপে সরকার টিকার বিকল্প উৎসে যেতে পারেনি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২১, ০২:১৮ পিএম

বেক্সিমকোর চাপে সরকার টিকার বিকল্প উৎসে যেতে পারেনি

বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা 

করোনা ভাইরাসের মহামারিতে স্বাস্থ্যসেবা খাতের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।

করোনার ভ্যাকিসন নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে তিনি বলেন, টিকা ব্যবস্থাপনায় শুরু থেকেই নয়-ছয় দেখেছি। বেক্সিমকোর চাপের কারণে সরকার টিকার বিকল্প উৎসে যেতে পারে নাই। যদিও রাশিয়া ও চীন আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে চেয়েছিল। টিকা বিক্রি করে সরকারি দলের এক অতি ক্ষমতাসীন ব্যক্তির লাভের জন্য রাষ্ট্র নাগরিকদের জীবন হুমকির মধ্যে ফেলেছে। স্বাস্থ্যখাতকে ব্যবসায়ীক খাতে পরিণত হয়েছে।

রবিবার (৬ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, করোনাকালে দেওয়া বাজেটের শিরোনাম ছিল ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ, ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমার’। করোনাকালে উন্নয়নের সঙ্গা ছিল জীবন এবং জীবিকা। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো।

তিনি বলেন, কিছু মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বৃদ্ধি করার কথা বললেও দেখা যাচ্ছে চলতি অর্থবছরে প্রথম দশ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৪৯ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ালেও বিগত ১০ বছরে স্বাস্থ্য সেবায় এডিপি বাস্তবায়ন এই বছরের সবচেয়ে কম। প্রথম ১০ মাসে বরাদ্দের মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। অথচ করোনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব ছিল স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, অর্থ খরচে এতো অদক্ষতা দেখিয়েছে সেই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ানো যে কি? সেটা দেশের মানুষ ভালো জানে। বরাদ্দকৃত অর্থ খরচে স্বাস্থ্য খাতে ন্যূনতম কোনো প্রতিফল দেখতে পাইনি।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা সেবা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। টিকা ব্যবস্থাপনায় শুরু থেকেই নয়-ছয় দেখেছি। সব ডিম এক ঝুঁড়িতে রাখার ফল হয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট ৬ মাসে দেড় কোটি ডোজ টিকা দেবার কথা থাকলেও এবং সেই টিকার মূল্য পরিশোধ করার পরেও টিকা আসছে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ। অন্যদিকে বেক্সিমকো লাভ করেছে ৩৮ কোটি টাকা। নিজের ব্যবসায়ী স্বার্থ রক্ষায় সরকার বেক্সিমকোর চাপের কারণে টিকার বিকল্প উৎসে যেতে পারে নাই। যদিও রাশিয়া ও চীন আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে চেয়েছিল। সরকারি দলের এক অতি ক্ষমতাসীন ব্যক্তির লাভের জন্য রাষ্ট্র নাগরিকদের জীবন হুমকির মধ্যে ফেলেছে।

এসময় তিনি সম্প্রতি টিকা নিয়ে চীনা দুতাবাসের কর্মকর্তার মন্তব্য তুলে ধরে প্রকৃত বিষয়টি জানানোর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন।

রুমিন ফারহানা প্রথম আলোর জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম এর মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, যখন ‘এখন এক কোটি দেব পরে আরো এক কোটি পাবেন’এবং স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরেছেন তখন তাকে চরমভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে। মানুষের চিন্তা বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মুক্তি গণমাধ্যমের স্বার্থে প্রথম আলোর জেষ্ঠ্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। রোজিনাকে ৬ ঘণ্টা ধরে যে হেনস্থা করা হলো যারা এই জন্য দায়ি তাদের ব্যাপারে সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে সেটাও জানতে চাই। কোনো গণমাধ্যমকে রিপোর্ট প্রকাশ করার জেরে হেনস্থার শিকার হতে হয় নানারকম হুমকির মুখে পড়তে তখন আর কোনো গণমাধ্যমই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫২তম। মিয়ানমার এবং আফগানিস্তানের অবস্থান তার চাইতে ভালো।

তিনি বলেন, এই দেশে উন্নয়ন হয়েছে গুটি কয়েক মানুষের। ধনী আরও ধনী হয়েছে। গরিব আরও গরিব হয়েছে বৈষম্য আরও বেড়েছে। করোনায় দারিদ্রের সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App