×

মুক্তচিন্তা

জনসার্বভৌমত্ব রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুশীলন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২১, ১২:১১ এএম

জনসার্বভৌমত্ব রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুশীলন
ব্রিটিশ ও তৎপরবর্তী পাকিস্তান উপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী শাসনকার্যের স্থায়িত্বের তাগাদা থেকে বাঙালির চিরাচরিত সার্বজনীন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের মধ্যে ফাটল ধরানোর কৌশলের আশ্রয় নেয়। তারা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আচরণে বিভাজিত রাজনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করতে গিয়ে সমাজ রাষ্ট্রে এক ধরনের ধর্মীয় উন্মাদনার বিস্তার ঘটায়। মানুষে মানুষে মানবিক, সামাজিক হৃদ্যতার জায়গা দখল করে নিতে থাকে ধর্মীয় বিভাজন। এই বিভাজন অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এবং ধর্মীয় সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সার্বজনীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। রাজনীতি, সমাজদর্শন, ধর্মীয় উপাসনালয়, সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় উন্মাদনার বীভৎস প্রভাব বাঙালির সার্বজনীন মূল্যবোধ নষ্ট করে দেয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে মুক্তি সংগ্রামের প্রতিশ্রুতির মধ্যে রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে সার্বজনীনতা রক্ষায় অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকে সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি ব্যবধানের ঊর্ধ্বে থেকে সর্বসাধারণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাজনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুপ্রবেশ নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে মর্মান্তিকভাবে হত্যার পর নীতি আদর্শহীন ক্ষমতা দখলদার শাসকগোষ্ঠী আবারো ক্ষমতা স্থায়িত্বের কৌশল হিসেবে রাজনীতি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুশাসনে ধর্মকে নিয়ে আসে। দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির বলয়ে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার হীনউদ্দেশ্যে সর্বক্ষেত্রে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রীয় নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে ধর্ম ব্যবসায়ীরা সংগঠিত হতে থাকে এবং কিছু উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তির আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অধিকাংশ ধর্মীয় উপাসনালয়ে ধর্ম ব্যবসায়ী সুবিধাভোগী গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। ধর্মীয় লেবাসধারী এর মহলটি ধর্মের নামে মসজিদ মাদ্রাসায় তাদের সামগ্রিক আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। ধর্মীয় উপাসনালয় ও আচার অনুষ্ঠানগুলো রাষ্ট্র ও সরকারের কোনো পর্যবেক্ষণ বা নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সার্বজনীনতা হ্রাস পেতে থাকে। জিম্মি হয়ে পড়ে সাধারণ অসহায় ধর্মপ্রাণ মানুষ। সাধারণ মানুষের এই অসহায়ত্বের সুযোগে বিগত কয়েক বছর থেকে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমনকি জাতীয় মসজিদে ইসলামী লেবাসধারী কিছু সংগঠন মিটিং মিছিলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে। ফলে ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বজনীনতা ক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। অথচ মহান মুক্তিযুদ্ধে সব ধরনের উপাসনালয় দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অন্যতম সার্বজনীন বৈশিষ্ট্যে গড়ে উঠেছিল এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার নিকট ধর্ম ও আদর্শ চর্চাকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হতো। আশার কথা হচ্ছে, অতিসম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয় ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা যাবে না বলে নির্দেশনা জারি করেছে। বিলম্বে হলেও এই নির্দেশনা দেশের জনগণ তথা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রকাশ ঘটেছে। পুঁজিপতিদের আগ্রাসন রোধ করে বাংলাদেশ সামাজিক ও মানবিক মর্যাদার দিকে ধাবিত হওয়ার কথা থাকলেও সেই বাংলাদেশকে সুকৌশলে একদিকে ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদের উর্বর ভূমি বানানো হয়েছে, অন্যদিকে নব্য ধনিক শ্রেণির জন্য ব্যাংক ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে লুটপােেটর সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ফলে তারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করার পাশাপাশি ধীরে ধীরে দেশের সার্বিক উৎপাদন ব্যবস্থা নিজেদের কুক্ষিগত করে নিতে সক্ষম হয়। কার্যত এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা দুর্বৃত্তায়িত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে অবশ্যম্ভাবী পরিণতি লাভ করে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন। এই দুর্বৃত্ত শ্রেণি প্রথমে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলো কুক্ষিগত করে। এরপর তারা দেশের সামগ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থা নিজেদের অনুকূলে নিয়ে নেয়। অর্থনীতির সব ইন্ডিকেটের বিশেষ করে শিল্পকারখানা, ব্যাংক, বিমা, অবকাঠামো উন্নয়ন, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, শিক্ষায় তাদের একক আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে সমাজ রাষ্ট্রের জনমানসিকতায় আসে এক ধরনের দুর্বৃত্তায়নপনা। ভোটাভুটির গণতন্ত্রে মনোনয়ন বাণিজ্যের ধারাবাহিকতায় জাতীয় সংসদের অনেকাংশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে। কালো টাকা নির্ভর অর্থনীতির কারণে সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক চর্চা গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নেয়া আজ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যেহেতু অর্থনীতি ও রাজনীতির মূল নিয়ন্ত্রক এখন ব্যবসায়ী গ্রুপ, তাই বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রকে জনাকাক্সক্ষার পরিবর্তে অনেকাংশে ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিতে হচ্ছে। উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দ্বারা। এই সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যখন যেভাবে খুশি ভোগ্যপণ্যে দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের শোষণ করছে, যা সামাজিক অস্থিরতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ জনস্বার্থ বিবেচনায় স্বাধীনতার সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধুর সরকার এসব উচ্চ মুনাফাখোর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কব্জা থেকে জনগণকে রক্ষায় টিসিবি গঠন করেন এবং এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করেছিলেন। সামগ্রিক পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া আধিপত্য থেকে জনগণকে রক্ষায় বিআরটিসির মাধ্যমে পাবলিক প্রাইভেট প্রতিযোগিতামূলক পরিবহন ব্যবস্থাও গড়ে তুলেছিলেন। দেশের শাসন ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে উচ্চ সুবিধাভোগীদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের ধারাবাহিকতায় অতিসম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি)-২০২০ এ এক শ্রেণির কারিগরি ঊর্ধ্বতন আমলা তথা ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারদের একচ্ছত্র আধিপত্য অব্যাহত রাখার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। জনগণের ক্ষমতার সার্বভৌমত্বের প্রতীক প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের নির্দেশনা এবং সরকারি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সিদ্ধান্তকে উপক্ষো করে দেশের জনগণকে জিম্মি করে কতিপয় উচ্চ পর্যায়ের সুবিধাভোগী কারিগরি আমলাদের কোটারী স্বার্থ সংরক্ষণের চক্রান্ত করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ধারাবাহিকতায় দেশের নির্মাণ ক্ষেত্রেও দেশ ও জনগণকে জিম্মি করার অসৎ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) ২০২০-তে ‘ইঞ্জিনিয়ার’-এর সংজ্ঞায় শুধু ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করা হয়েছে। যদিও সরকারের গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রতিবেদনে ইঞ্জিনিয়ারের সংজ্ঞায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছেÑ ইঞ্জিনিয়ার ২ ধরনের, তা হলো ‘ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’। সরকারের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রসারের কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বিএনবিসির যেসব ধারা বা উপধারায় ‘ইঞ্জিনিয়ার’ এবং ‘আর্কিটেকট’ শব্দ আছে তার পূর্বে ডিগ্রি অর্থাৎ ‘ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার’ ও ‘ডিগ্রি আর্কিটেকট’ উল্লেখ করা ন্যায়সঙ্গত। অন্যদিকে দেশের নির্মাণ ক্ষেত্রে জনগণকে সুবিধাভোগী মুষ্টিমেয় ডিগ্রি প্রকৌশলীদের নিকট জিম্মি করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিএনবিসিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের (সিভিল) স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করার অধিকার থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত করা হয়েছে। যা অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। গুটিকয়েক ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারের (সিভিল) নিকট সমগ্র জনগণকে জিম্মি করার এই জনস্বার্থবিরোধী অপকৌশল কোনোভাবে রাষ্ট্রের জন্য গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে নির্মাণ ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) ৪-৫ তলা পর্যন্ত বিল্ডিংয়ের স্ট্রাকচারাল ডিজাইন অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করে জনগণকে সেবা দিয়ে আসছিলেন এবং জনগণ অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে সেই সেবা গ্রহণ করতে পারতেন। তাই জনস্বার্থ বিবেচনায় বিএনবিসি ২০২০-এ বর্ণিত ক্যাটাগরি-২ অর্থাৎ পাঁচতলা পর্যন্ত বিল্ডিংয়ের স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করার সুযোগ যৌক্তিক কারণে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের (সিভিল) অন্তর্ভুক্ত করে সংশোধন করা যুক্তিযুক্ত। কনস্ট্রাকশন সুপারভিশনে ১০ তলা ভবনের জন্য ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা উভয়ের জন্য ৪ বছরের অভিজ্ঞতা রাখা হয়েছে। কিন্তু ১০ তলার ওপর অর্থাৎ বহুতল ভবন সুপারভিশনের জন্য ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারদের অভিজ্ঞতা ৮ বছর এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অভিজ্ঞতা রাখা হয়েছে ২০ বছর। যা অযৌক্তিত, অগ্রহণযোগ্য ও নির্মাণ কাজে সুপারভিশনের ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত এক জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। এই ক্ষেত্রে বহুতল ভবন সুপারভিশনের জন্য ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অভিজ্ঞতা ৫ বছর এবং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অভিজ্ঞতা ৭ বছর করে সংশোধন আনা প্রয়োজন। সার্টিফিকেশন অব ওয়ার্কের ক্ষেত্রে ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার, ডিগ্রি আর্কিটেক্ট ও প্ল্যানারদের রাখা হয়েছে। কিন্তু ডিপ্লোমা আর্কিটেক্ট ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের রাখা হয়নি। একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার ভবনের কনস্ট্রাকশন সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে সার্টিফাইড ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের রাখা বাঞ্ছনীয়। এছাড়া কনস্ট্রাকশন অব অথরিটিতে ডিগ্রি প্রকৌশলীদের সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এবং ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা যুক্তিযুক্ত। প্রসঙ্গত, উল্লিখিত ২-৩টি সংজ্ঞা ও উপধারা সংশোধন করা হলে বিএনবিসি-২০২০-এর মৌলিক কোনো পরিবর্তন ঘটবে না এবং জাতীয় নির্মাণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমের কোনো ক্ষতিই হবে না। বরং নির্মাণ কার্যক্রমে সার্বজনীনতা বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণ কোনো গোষ্ঠীর নিকট জিম্মি হবে না। দেশের সামগ্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মকাণ্ডের ৮৫ ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। কেননা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ব্যবস্থায় ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা উভয় গ্রুপই ৪ বছর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করে। তারপরও এই সীমাহীন বৈষম্যমূলক আচরণের মাধ্যমে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের রাস্তায় ঠেলে দিয়ে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপপ্রয়াস চলছে কেন? এটা কি কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত? দেশে চলমান শ্রেণি বিভক্ত সমাজব্যবস্থায় ও ধনিক বণিকদের উত্থান প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সেক্টরে গড়ে উঠা সিন্ডিকেটের বিদ্যমান অপকৌশল থেকে জনগণকে রক্ষা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং কাজ। তারপরও ব্যবসা, বাণিজ্য, ব্যবস্থাপনা, প্রশাসন, সমাজব্যবস্থায় একশ্রেণির সুবিধাভোগী সংঘবদ্ধ অপশক্তির নানা অপকৌশল থেকে জনগণকে রক্ষা করে জনসার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রকেই বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে টেকসই উন্নয়নের পথে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই সার্বজনীন সুশাসন, পণ্য উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থা, সম্পদের সুসমবণ্টন, কর্ম নিশ্চয়তা, শ্রমশোষণ রোধ, উৎপাদন ব্যবস্থায় জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনকল্যাণকর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চর্চা জোরদার করার বিকল্প নেই। আর তা করতে হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও পথনির্দেশনায় দেশের সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কর্মের অধিকার ও মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে জনকল্যাণকর রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রবর্তনে সরকারকে সুদৃঢ় পদভারে এগিয়ে যেতে হবে এবং প্রতিষ্ঠা করতে হবে জনসার্বভৌমত্ব বা রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব। এ কে এম এ হামিদ : উন্নয়ন গবেষক ও সভাপতি, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App