×

জাতীয়

কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানির’ নেতৃত্বে লন্ডনফেরত রাজিব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২১, ০৯:৫৬ পিএম

কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানির’ নেতৃত্বে লন্ডনফেরত রাজিব

গ্রেপ্তারকৃত কিশোর গ্যাং

কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানির’ নেতৃত্বে লন্ডনফেরত রাজিব

* প্রতিটি জেলা পর্যায়ে তালিকা তৈরীর কাজ চলছে * ডি কোম্পানী কিশোর গ্যাংয়ের ১২ সদস্য গ্রেপ্তার

কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব এ স্বাধীন বাংলাদেশে আর থাকবে না। এ লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলা পর্যায়ে র‌্যাব ব্যাটালিয়ন একটি তালিকা করতে কাজ করছে। তালিকা তৈরির পর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে যারা কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানির’ নেতৃত্বে লন্ডনফেরত রাজিব চৌধুরী। চার বছর আগে অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। ছয় মাসের মাথায় জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন দুই বছর লন্ডনে লেখাপড়া করা রাজিব চৌধুরী। পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া টঙ্গীর কিশোর গ্যাং ‘ডেয়ারিং কোম্পানি’ বা ‘ডি কোম্পানির’ প্রধান পৃষ্ঠপোষক তিনি। র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। রবিবার (৬ জুন) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

টঙ্গী এলাকায় দুটি পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হামলার সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাং ডি কোম্পানির পৃষ্ঠপোষক বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী ও নীরব ওরফে ডন নীরবসহ ১২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ফুচকা খাওয়া শেষে উঠতে দেরি হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। গেল মঙ্গলবার রাতে কিশোর গ্যাং ডি কোম্পানির কয়েকজন সদস্য গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন আরিচপুর এলাকাস্থ ভূঁইয়া পাড়া জামে মসজিদের সামনে তুহিন ও তুষার নামে দুজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মাথা ফটানোসহ গুরুতর জখম করে। পরে এ ঘটনায় পরেরদিন বুধবার ভিকটিম তুহিন আহম্মেদ বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা করে। এই মামলা করার কারণে বাদীর বাড়িঘর ও দোকানপাটে ব্যাপক ভাংচুর করে ভীতির সঞ্চার করার চেষ্টা করে তারা।

এছাড়াও এ ঘটনা অন্যখাতে প্রবাহিত করতে ৩ জুন বৃহস্পতিবার রাতে একই গ্রুপের কয়েকজন সদস্য গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন আরিচপুর এলাকার একটি দর্জি দোকান ভাংচুরসহ চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে আব্দুল মালেকের ছেলে আরজু মিয়া (৩৪) ও সুজন মিয়া (২৪) ও সুজনের স্ত্রী রুপালীকে (২১) গুরুতর আহত করে। কিশোর গ্যাংয়ের এই নৃশংস হামলার বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হলে র‌্যাব তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গত শনিবার সারারাত ঢাকার টঙ্গী ও উত্তরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ডি কোম্পানি ওরফে ডেয়ারিং কোম্পানি কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক মো. রাজিব চৌধুরী বাপ্পি ওরফে লন্ডন বাপ্পি (৩৫), মো. মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরব (২৪), মো. তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারি তানভীর (২৪), মো. পারভেজ ওরফে ছোট পারভেজ (১৯), মো. তুহিন ওরফে তারকাটা তুহিন (২১), মো. রাজিব আহমেদ নীরব ওরফে টম নীরব (৩০), মো. সাইফুল ইসলাম শাওন (২৩), মো. রবিউল হাসান (২০), মো. শাকিল ওরফে বাঘা শাকিল (২৮), মো. ইয়াছিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন (১৮), মো. মাহফুজুর রহমান ফাহিম (২২) ও ইয়াছিন মিয়া ওরফে প্রিন্স ইয়াছিন (১৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৬ হাজার ১৩০ টাকা, ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি চাপাতি, ২টি রামদা, ৩টি লোহার রড ও ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের এ মুখপাত্র আরও বলেন, এ গ্রুপের প্রধান পৃষ্ঠপোষক গ্রেপ্তার লন্ডন বাপ্পি ও জেলে থাকা তার ছোট ভাই পাপ্পু। আর মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয় ডন নীরব (২৪)। মারধরের ঘটনায় হওয়া মামলার সূত্র ধরে নীরবকে গ্রেপ্তারের পরই এসব বেরিয়ে আসে। বাপ্পিসহ গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই কিশোর বয়স থেকেই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তবে সময়ের সঙ্গে তাদের পরিধি বেড়ে ডি কোম্পানি নামে ভয়ংকর হয়ে উঠে তারা। প্রাথমিকভাকে তাদের গ্যাং সদস্য অর্ধশতাধিক বলে আমরা জানতে পেরেছি। এলাকায় মাদক সেবন, স্কুল-কলেজে বুলিং, র‌্যাগিং, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ডাকাতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অনৈতিক কাজে লিপ্ত বলে তারা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। চাঁদাবাজির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ থেকে লন্ডন বাপ্পি গ্রপের সদ্যদের প্রতিমাসে ৩০০-৪০০ টাকা হাত খরচ দিয়ে থাকে। এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App