×

সারাদেশ

কুষ্টিয়া চিনিকলের গুদাম থেকে ৫৩ টন চিনি গায়েব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ০১:০৫ পিএম

কুষ্টিয়া চিনিকলের গুদাম থেকে ৫৩ টন চিনি গায়েব

কুষ্টিয়া চিনিকল।

কুষ্টিয়া চিনিকলের গুদাম থেকে ৫৩ টন চিনি গায়েবের ঘটনা ঘটেছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গুদাম কর্মকর্তা (স্টোরকিপার) ফরিদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (৫ জুন) দুপুরে এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।

জানা যায়, গত মৌসুমে উৎপাদনবন্ধ থাকা কুষ্টিয়া সুগারমিলের গুদামে ১১০ টনের মত চিনি মজুদ ছিল। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) মিলের কর্মকর্তারা স্টক রেজিস্ট্রারের সঙ্গে মজুদ চিনির পরিমান মেলাতে গিয়ে দেখতে পান সেখানে প্রায় ৫৩ টন চিনি কম আছে। ফলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে সুগারমিল প্রশাসনে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, ফ্যাক্টরি, গোডাউন আর কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ১০ ১২ বছর ধরে এমন কাজ চলে আসছিলো বলে মনে হয়। এখন বিষয়টি সামনে এসেছে। একদিনে এত চিনি পাচার হয়নি। তাই সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের সামনে আনতে হবে।

এ ঘটনায় গোডাউন কিপার ফরিদুল ইসলামকে সাসপেন্ডসহ তদন্ত টিম গঠন হয়েছে। ফরিদুল স্টোর কিপার ছিলেন। সম্প্রতি তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে সোহেল নামের একজন দায়িত্বে ছিলেন। তার সময় চিনি চুরি ঘটনা হয়ে থাকতে পারে বলে বেশির ভাগ শ্রমিক-কর্মচারী মনে করেন। তার সময় তেল চুরিও হয়েছে, যার প্রমাণ পেয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে জিএম ফ্যাক্টারি কল্যাণ কুমার দেবনাথকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মিলের জিএম (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান বলেন,‘বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার নজরে আসে। সেদিনই ফরিদুল ইসলামকে বরখাস্ত ও তদন্ত টিম গঠন করে। কর্পোরেশনকে এ ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন মিলের গোডউন খালি হয়নি। এ সুযোগে চিনি কখনো একেবারে শেষ হয়নি। এবার মিল বন্ধ হওয়ার পর চিনির স্টক শেষ হয়ে আসে। তাই রেজিষ্ট্রার ও গোডাউনের চিনির হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। তার পরিমাণ ৫০টনের বেশি। তদন্ত চলছে। বিষয়টি তদন্তে উঠে আসবে। যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একাধিক সুত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন চিনিকলের একটি চক্র বাইরে চিনি বিক্রির সময়ে গোপনে ট্রাকে চিনি পাচার করে আসছে। এ বছরেও দিন ছাড়া রাতেও চিনির ট্রাক গেছে। তবে এক বছরে এমন হয়নি। সম্প্রতি কয়েক বছরে এ কাজ হয়ে আসছে। এর আগে গোডাউন ধ্বসেও কিছু চিনি নষ্ট হয়। সে সময় চিনি পাচার হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।

এদিকে চিনি গায়েবের ঘটনায় কথা বলতে রাজী হননি এমডি রাকিবুর রহমান।

কুষ্টিয়া চিনিকলে চিনি মজুদ করে রাখার জন্য ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার দুটি গুদাম ঘর রয়েছে।

কুষ্টিয়া চিনিকল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি চিনিকল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। এই মিলের দৈনিক আখ মাড়াই করার ক্ষমতা এক হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন এবং উৎপাদনের ক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App