×

অর্থনীতি

অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ সারাজীবন চলতে পারে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ০৮:২৯ পিএম

অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ সারাজীবন চলতে পারে না

শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই।

অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি সারাজীবন ধরে চলতে পারে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, এতে প্রকৃত কর ও ভ্যাট দাতারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। এ কারণে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করবো। তবে নতুন অর্থবছরের জন্য এ সুযোগ না দেওয়াই ভালো।

তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট ব্যবসাবান্ধব হয়েছে, যা করোনা মহামারির মধ্যেও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। দেশের অর্থনীতির প্রাণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়নে প্রণোদনা প্যাকেজের দ্রুত বাস্তবায়ন ও আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবি করছি।এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের বার্ষিক টার্নওভার ৭০ লাখ টাকা করা হয়েছে এটা এক কোটি টাকা করার অনুরোধ জানান তিনি।

শনিবার (৫ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা ও সাংবাদিক সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এসব কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির, ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান মাহমুদ, এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্লাহ ডন, বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক প্রমুখ।

জসিম উদ্দিন বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত (এসএমই) দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করছে। কোভিডের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এ খাত। এ কারণে এ শিল্পখাতের জন্য আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা প্রয়োজন। এছাড়া ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পরেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ঘোষিত ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের প্রায় ৩০ শতাংশ বিতরণ হয়নি। আমরা বাকি বিতরণ ও নতুন আরেকটা প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ করছি। মূল্য সংযোজন কর আইন সহজীকরণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এফবিসিসিআইয়ের সমন্বয় টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিদ্যমান মন্দা পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক আর্ধ-সামাজিক পরিবেশের তাৎক্ষণিক, স্বল্পমেয়াদি, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শুল্ক ও কর কাঠামো সংস্কার করে একটি জনবান্ধব এবং উৎপাদনশীল রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি। এনবিআরের পলিসি উইং এবং বাজেট বাস্তবায়ন উইংকে আলাদা করার অনুরোধ করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি। রাজস্ব বাড়ানো এবং ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাট ও আয়কর অফিস স্থাপন করলে করের আওতা বাড়বে। বাজেটের ঘাটতি মেটাতে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার বদলে বিশেষ স্থানীয় বন্ড ও বিদেশ থেকে স্বল্প সুদে অর্থ নেওয়া যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো দাবি করা হয়- আগামী এক বছরের জন্য ই-কমার্সকে উৎসে করের আওতাবহির্ভূত রাখা, কাটার সেকশন ড্রেজারকে ক্যাপিটাল মেশিনারি হিসেবে ১ শতাংশ শুল্কে আমদানির সুযোগ দেয়া, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার করা, সরকারের রাজস্ব বাড়ানো এবং ট্যাক্স জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য সব উপজেলা পর্যায়ে আয়কর ও ভ্যাট অফিস স্থাপন করা, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের কাজে টিন নম্বর ব্যবহার করার পাশাপাশি ট্যাক্স পেমেন্টের প্রমাণ বা ডকুমেন্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পলিসি উইং এবং বাজেট বাস্তবায়ন উইংকে পৃথক করা এবং মূল্য সংযোজন কর আইন সহজীকরণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতী রাজস্ব বোর্ড এবং এফবিসিসিআইয়ের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করার দাবিও করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App