×

খেলা

অনলাইন-অফলাইনে চলছে তায়কোয়ান্দো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ১০:৩৪ পিএম

অনলাইন-অফলাইনে চলছে তায়কোয়ান্দো

মাহমুদুল ইসলাম রানা

তায়কোয়ান্দো অলিম্পিক গেমসের অন্তর্ভুক্ত একটি খেলা। বাংলাদেশে দিনকে দিন এ খেলা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এসএ গেমসসহ অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দোতে স্বর্ণপদক জিতেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এ মার্শাল আর্টটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শনিবার ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জানান, বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা।

দেশের প্রায় ৮০-৯০টি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন লাখ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছে ফেডারেশন। ২০১৩ সাল থেকে শুরু হওয়া ফেডারেশনের এই কার্যক্রমে মেয়েদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তায়কোয়ান্দো কৌশলে রক্তপাতের বালাই নেই। দুই হাত ও দুই পা অস্ত্র হিসেবে কাজ করে। আর মস্তিষ্ক কাজ করে ‘কমান্ড’ হিসেবে। পথেঘাটে যৌন নির্যাতনসহ যে কোনো পরিস্থিতিতে খালি হাত ও পা দিয়েই শত্রুকে মোকাবিলা করা সম্ভব।

তায়কোয়ান্দো চর্চা করলে আত্মবিশ্বাসী, আত্মরক্ষায় পারদর্শী, সুশৃঙ্খল ও স্বাস্থ্যবান হওয়া যায়। শরীরের নাজুক ও সংবেদনশীল জায়গাগুলো রক্ষার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম হেড গার্ড, চেস্ট গার্ড, হ্যান্ড গার্ড, গ্লাভস, শিন গার্ড, গ্রোয়েন গার্ড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় বলে ঝুঁকিও কম। অন্যান্য খেলার চেয়ে এটি ততটা ব্যয়বহুল না। যারা তায়কোয়ান্দো প্রশিক্ষণ নেন, তাদের হাঁটার গতি ও শারীরিক ভঙ্গি দেখেই কেউ আর তাকে আক্রমণ করতে সাহস পায় না। আক্রমণ করলেও তার প্রতিবাদ করা বা পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক দিন ধরেই কোনো খেলা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছেন তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড়রা। তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা ভোরের কাগজকে জানান, অনলাইন,অফ লাইনে নিয়মিত অনুশীলন চলছে। নিজেকে প্রস্তুত রাখতে অনুশীলনের বিকল্প নেই। খেলোয়াড়রা যেন না হারিয়ে যায় সে জন্য তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। করোনার মধ্যেও গত বছর অনলাইনে আমরা ১০ থেকে ১২টি টুর্নামেন্ট করেছি। ৪ জুন থেকে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় মুজিববর্ষ তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে ২৭০ জন খেলোয়াড়। ৭-৮ বছর বয়সি থেকে শুরু করে নানা বয়সিদের নিয়ে ১২ ইভেন্টে এ টুর্নামেন্ট চলছে।

ভিনদেশি খেলা হলেও এদেশের ছেলেমেয়েরা আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে তায়কোয়ান্দোকে বেছে নিয়েছে। সারাদেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লাব। অনেক ক্লাবে শিক্ষার্থীদের বিনা ফিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বলে ভোরের কাগজকে জানান, মাহমুদুল ইসলাম রানা। করোনা মহামারিতে ঢাকার ১৫টি ভেন্যুতে নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড়রা। শুধু ঢাকায় নয় দেশের ২৫টি জেলায় নিবিড় অনুশীলনে ব্যস্ত বিভিন্ন সময়ের ছেলেমেয়েরা। করোনার মধ্যে এ বছর কি কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে কিনা? এ সম্পর্কে বাংলাদেশ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রতি মাসে আমরা অনলাইনে একটি করে ঘরোয়া টুর্নামেন্টের আয়োজন করছি।

গত বছর ৩-৪টি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। এবারো বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের চেষ্টা চলছে। কেউ যদি তায়কোয়ন্দোয় আগ্রহী হয় সে ক্ষেত্রে তাকে কি করতে হবে? এ সম্পর্কে মাহমুদুল ইসলাম রানা জানান, পোশাক বাবদ দুই হাজার টাকা, ভর্তি ফি পাঁচশত টাকা এবং মাসিক পাঁচশত টাকা দিয়ে যে কেউ যে কোনো ভেন্যুতে অনুশীলন করতে পারবে। ধানমন্ডিতে যে ফি অন্য ভেন্যুতে একই ফি নয়। ভেন্যু অনুযায়ী ফি নির্ধারিত হয়।

মোহাম্মদপুর, রাশিয়ান কালচার সেন্টার, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাড্ডা, উত্তরবারিধারা, মতিঝিল এমনি করে ঢাকায় পনেরটি ভেন্যুতে আমাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। ক্রীড়া পরিষদে আমরা মাসিক তিনশত করে ফি নিচ্ছি। করোনার এ মহামারিতে অসহায় দুস্থ তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড়দের জন্য সুমন দাস এবং মশিউর রহমান নিজ উদ্যোগে সাহায্য সহযোগিতা করছেন বলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App