×

মুক্তচিন্তা

শিশুদের জন্য চাই নিরাপদ পৃথিবী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ১২:৩৬ এএম

সারা বিশ্বে ৪ জুন আন্তর্জাতিক আগ্রাসন আক্রান্ত শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের এবং আগ্রাসনের শিকার হয়েছে যেসব শিশু-কিশোর- তাদের স্মরণ করতে এবং তাদের অধিকার আদায়ে সচেতন করতে এ দিনটি পালিত হয়। ১৯৮২ সালে লিবিয়ার যুদ্ধে বেইরুটে ইসরাইলের লিবিয়া ও ফিলিস্তিনের ৬০ জন নির্দোষ শিশুকে হত্যার প্রতিবাদে ঘটনাটি স্মরণ করে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভা দিনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই থেকে প্রতি বছর ৪ জুন আগ্রাসনের শিকার শিশু দিবস দিনটি পালিত হয়ে আসছে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি। কিন্তু যাদের আমরা ভবিষ্যতের কাণ্ডারি বলি তারাই আজকে পৃথিবীর আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। ভবিষ্যতের কাণ্ডারি এসব কোমলমতি শিশুরাই আজকে যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ, হিংসা, ধর্ষণ, অনাহারের শিকার হয়ে মর্মান্তিক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। শিশুশ্রম, শিশু নির্যাতন, শিশু পাচার, যুদ্ধকালীন সময়ে অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে আজকের সমাজ। অথচ ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি এই শিশুদের জন্যই পৃথিবী নিরাপদ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজকের এই বিশ্বে শিশুরা নিজের দেশেই নিরাপদ নয়, তারা যুদ্ধ আগ্রাসনের শিকার হয়ে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে বসবাস করছে। আর এর জন্য দায়ী হলো যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদ। এর ফলে এসব শিশুর ভবিষ্যৎ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি এদের অনেকে পরিবারের সবাইকে হারিয়ে অনাথভাবে দিন অতিবাহিত করছে। এর ফলে তাদের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে সেটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এবং লঙ্ঘিত হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকার। আবার নিজ দেশে বসবাসকারী অনেক শিশুর ভবিষ্যৎ বিপন্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসব শিশুর অনেকের বাবা-মা হারিয়ে কিংবা পারিবারিকভাবে দরিদ্রতার কারণে ছোট বয়স থেকেই যে সময়ে পড়াশোনা করার কথা সেই সময় থেকেই কাজ করতে হয় জীবিকার তাগিদে। আর জীবিকার তাগিদে কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে বিভিন্ন আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে আজকের শিশুরা। বাইরে যারা দোকানপাট, বিভিন্ন শপিংমল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করছে সেসব শিশুর একটু ভুল হলেই বা তাদের কাজের পুরোপুরিটা করতে না পারলে শিকার হতে হচ্ছে শারীরিক নির্যাতনের। এছাড়া তাদের কাজের পরিমাণ অনুযায়ী তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেও না। এ তো গেল বাইরে যেসব শিশু কাজ করে তাদের প্রতি আগ্রাসনের কথা। পাশাপাশি যেসব শিশু বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করে সেসব শিশুও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কারণ তারা তাদের সাধ্যের বাইরে যে কাজ দেয়া হয় সেটা তারা করতে পারে না। এছাড়াও কিশোরী মেয়েদের অনেক সময়ে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়। যা এক প্রকারের ঘৃণ্য অমানবিক শিশু আগ্রাসন। এসব ঘৃণ্য শিশু আগ্রাসন শিশুদের ওপর বিরূপ প্রভাবে ফেলে, যা তাদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিভিন্ন যুদ্ধবিগ্রহের সময় শিশুদের হত্যা করার পাশাপাশি তাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়। সম্প্রতি ইসরায়েলের বর্বতায় অনেক শিশু অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যা বর্তমান সময়ে এক বিশাল নিষ্ঠুরতার পরিচয়। শুধু তাই নয়, তাদের পাচার করে দেয়া হয় বিভিন্ন দেশে। আর এ পাচারকৃত শিশুদের পরে বিভিন্ন জায়গায় কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়। ওদের কাউকে বিভিন্ন খারাপ কাজে সমাজবিরোধী কাজে লাগিয়ে দেয়া হয়। অনেক কিশোরী মেয়েকে পতিতালয়ে পাঠানো হয়, যা একটি ঘৃণ্য অমানবিক কাজ। শিশুদের ভবিষ্যৎ যাতে অন্ধকারে ঢেকে না যায় সেজন্য আমাদের সবার যত্নশীল হওয়া উচিত। শিশু নির্যাতন শিশুদের প্রতি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে এসব সেøাগান শুধু দিলেই চলবে না তা কার্যকর ও করতে হবে। তাই আমাদের সবাইকে রাষ্ট্র পৃথিবীর পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে এবং গড়ে তুলতে হবে শিশুদের জন্য এক নিরাপদ এবং শান্তির পৃথিবী।

সাদিয়া ইসলাম সম্পা : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App