×

খেলা

মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে খেলাঘরের প্রথম জয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ০৮:২০ পিএম

মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে খেলাঘরের প্রথম জয়

লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে শুক্রবার মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৪ রানের ইনিংস খেলার পথে বাউন্ডারি হাঁকান।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের এবারের আসরে নিজেদের প্রথম দুটি ম্যাচেই হেরেছিল খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে শুক্রবার মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য ও জহুরুল ইসলামের ম্যাচ জয়ী ইনিংসে ভর করে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে তারা। ৫ উইকেটে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের ১৩৮ রানের জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে খেলাঘর।

ফলে ৭ উইকেটের জয় পায় তারা। মিরাজ ও জহুরুল দুজনেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। মিরাজ ৫৪ ও জহুরুল ৫৩ রান করেন। ম্যাচসেরা হন জহুরুল ইসলাম। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ১০ রানে জিতেছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। শাইনপুকুরের ১৩৭ রানের জবাবে ১২৭ রানেই শেষ হয় শেখ জামালের ইনিংস। ৩ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন শাইনপুকুরের তানভির ইসলাম।

বৃহস্পতিবার তৃতীয় ম্যাচে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে একদম নিষ্প্রভ ছিলেন সাকিব আল হাসান। বল হাতে এক উইকেট নিলেও ব্যাট হাতে কোনো রানই তুলতে পারেননি তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও কোনো রান করতে পারেননি সাকিব। তবুও তার দল ইরফান শুক্কুরের ব্যাটে জিতেছে ৬ উইকেটে। পারটেক্সের ১৫৮ রানের টার্গেট ১৪ বল ও ৬ হাতে রেখেই পেরিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে রূপগঞ্জের দেয়া ১৩৯ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২৫ রানের মাথায় খেলাঘর তাদের দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে। ইমতিয়াজ হোসেন ও সাদিকুর রহমান দুজনেই আউট হন ব্যক্তিগত ৯ রান তোলার পর। ওয়ানডাউনে খেলতে নামা মিরাজ দলের হাল ধরেন। জহুরুল ইসলামের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান তিনি। এই জুটি থেকে ৯৭ রান আসার পর মুক্তার আলির বলে বিদায় নেন মেহেদী। আউট হওয়ার আগে ৪৫ বলে ৬ চার ও এক ছয়ে ৫৪ রান করেন তিনি। মিরাজ আউট হলেও শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন জহুরুল। ৪৪ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। সালমান হোসেন করেন ৭ রান। রূপগঞ্জের হয়ে সানজামুল ইসলাম, মোহাম্মদ শহিদ ও মুক্তার আলি একটি করে উইকেট পান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান তোলে রূপগঞ্জ। আজমির আহমেদের ২১ বলে ২৮ রানের একটি ইনিংসের পর স্কোর বোর্ডে লড়াকু পুঁজি দাঁড় করান আল আমিন। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। সাব্বির ২৩ রান করে আউট হওয়ার পর জাকের আলি ১২ বলে করেন ১৯ রান। আল আমিন ৪২ বলে ৫১ রান কতে সক্ষম হন। খেলাঘরের হয়ে দুটি উইকেট নেন মাসুম খান। মেহেদী হাসান মিরাজ, খালেদ আহমেদ ও রিশাদ হোসেন পান একটি করে উইকেট। এ জয়ের সুবাদে তিন ম্যাচে এক জয় দিয়ে ২ পয়েন্ট পেল খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান নবম স্থানে। তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট থাকা লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের অবস্থান তাদের ঠিক নিচেই। তিন ম্যাচের মধ্যে তাদের একটি ম্যাচে কোনো ফল হয়নি।

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ১৩৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের দুই ওপেনারই ব্যর্থ হন। মোহাম্মদ আশরাফুলের ৪ রানের পর সৈকত আলিও ৯ রানে বিদায় নেন। এরপর ৬২ রানের একটি জুটি আসে নাসির হোসেন ও ইলিয়াস সানির ব্যাট থেকে। ২১ বলে ৪ চারে ২৮ রান করেন নাসির। মাঝে নুরুল হাসান সোহান ১ রানে ও তানবির হায়দার শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর সোহরাওয়ার্দী শুভ ও মোহাম্মদ এনামুলের ব্যাট থেকে দুটি ছোট ছোট ইনিংস আসে। তারা আউট হয়ে গেলে জয়ের স্বাদ নেয়া হয়ে উঠেনি শেখ জামালের। শুভ ১৫ ও এনামুল ১৯ রান করেন।

শাইনপুকুরের হয়ে ৪ ওভারে ৮ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন তানভির ইসলাম। প্রথম দুই ওভারেই সবকটি উইকেট পান তিনি, দেননি কোনো রানও। হাসান মুরাদ ৩৪ রান দিয়ে পান ২ উইকেট। এছাড়া সুমন খান ও ইফতেখার সাজ্জাদ নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন শাইনপুকুরের দুই ওপেনার সাব্বির হোসেন ও তানজিদ হাসান। উদ্বোধনী জুটি থেকে ৫৪ রান তুলে তারা। এরপর জিয়াউর রহমানের শিকারে পরিণত হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ২০ রান করা সাব্বির। তানজিদ ৩১ বলে করেন ৩৪ রান। তৌহিদ হৃদয় ও রবিউল ইসলাম রবিও দুটি বড় ইনিংস এনে দেন শাইনপুকুরকে। রবি ২৬ বলে ৩৪ ও হৃদয় ৩০ বলে করেন ২৮ রান।

শেখ জামালের হয়ে এবাদত হোসেন ও জিয়াউর রহমান দুটি করে উইকেট শিকার করেন। মোহাম্মদ এনামুল নেন এক উইকেট। এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচে প্রথম জয় পেল শাইনপুকুর। ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে তাদের অবস্থান ষষ্ঠ স্থানে। তিন ম্যাচে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের পয়েন্টও ২। তবে তারা শাইনপুকুরের চেয়ে রান রেটে পিছিয়ে থাকায় টেবিলের সপ্তম স্থানে রয়েছে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার আব্বাস মুসা ও তাসামুল হকের ব্যাটে ১৫৭ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় পারটেক্স। মুসা ৬৪ ও তাসামুল ৫৯ রান করেন। মোহামেডানের হয়ে তাসকিন আহমেদ দুটি, সাকিব ও আবু জায়েদ নেন একটি করে উইকেট। জবাব দিতে নেমে সাকিব আল হাসান রান তুলতে না পারলেও ইরফান শুক্কুর, মাহমুদুল হাসান, ও নাদিফ চৌধুরির ব্যাটে জয় পায় মোহামেডান। শুক্কুর ৫২, মাহমুদুল ৩৮ ও নাদিফ ২৭ রান করেন। পারটেক্সের হয়ে তাসামুল নেন ৩ উইকেট। এ জয়ের ফলে দুই ম্যাচে দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে মোহামেডান। দুই ম্যাচের সবকটিতে হারা পারটেক্স সবার তলানিতে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App