×

জাতীয়

জীবন ও জীবিকা রক্ষার চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ০৮:৩০ এএম

জীবন ও জীবিকা রক্ষার চ্যালেঞ্জ

ফাইল ছবি

* বাজেটের আকার : ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা * রাজস্ব আয় : ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা * সামগ্রিক ঘাটতি রেকর্ড ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা

মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করে করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে জাগিয়ে তোলার চ্যালেঞ্জে গতকাল বৃহস্পতিবার বিশাল ব্যয়ের বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রেকর্ড পরিমাণ ঘাটতি নিয়ে সরকারের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও সেই সীমিত সম্পদ নিয়েই ২০২১-২২ অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তিনি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে এটি দেশের ৫০তম বাজেট।

এবারের বাজেট মূলত মহামারি করোনাকে ঘিরেই। বাজেটের সব কিছুতেই অগ্রাধিকার পেয়েছে মহামারি পরিস্থিতি। করোনার ক্ষতি থেকে যেমন অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ আছে, তেমনি করোনায় বিপর্যস্ত মানুষের জীবন বাঁচানোরও উদ্যোগ রয়েছে বাজেটে। স্বাভাবিকভাবেই এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ অনেক বেড়েছে। এ খাতে আগামী বছরের জন্য অর্থমন্ত্রী বরাদ্দ রেখেছেন তার মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এ অঙ্ক মোট বাজেটের প্রায় ১৮ শতাংশ। একইভাবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য নতুন বাজেটেও থোক বরাদ্দ হিসাবে ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের এবারের বাজেটও দেশ ও জাতির উন্নয়নের পাশাপাশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবন-জীবিকা।

অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেটের শিরোনাম দিয়েছেন ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’। সরকারের এ বাজেট প্রস্তাবনায় রয়েছে বিশ^ময় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নবিভোর পরিকল্পনা। এজন্য বেড়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ও বার্ষিক ভাতার পরিমাণও। সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার। এছাড়া বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল থাকছে। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় থাকছে বিশেষ বরাদ্দ। ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা করতে করপোরেট করহার কমানো হয়েছে। বিভিন্ন খাতে চলমান কর অবকাশের মেয়াদ ও আওতা বাড়ানো হয়েছে। বরাদ্দ অব্যাহত রাখা হয়েছে মেগা প্রকল্পগুলোতে। জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় এসব তথ্য জানা গেছে।

নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। টাকার ওই অঙ্ক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। বিদায়ী অর্থবছরে মুস্তফা কামালের দেয়া বাজেটের আকার ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি এবং জিডিপির ১৭ দশমিক ৯ শতাংশের সমান। মহামারিকালে নতুন অর্থবছরের জন্য রেকর্ড ঘাটতির এ বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ জোগাড় করতে হবে ঋণ করে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা তিনি রাজস্ব খাত থেকে জোগান দেয়ার পরিকল্পনা সাজিয়েছেন, যা বাস্তবায়ন করা হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এরপরও অর্থমন্ত্রীর আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় ঘাটতির এ পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬ দশমিক ২ শতাংশের মতো।

গত এক যুগে সরকার ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে রেখে বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করলেও মহামারির সংকটে প্রণোদনার টাকা জোগানোর চাপ থাকায় গতবার তা ৬ দমমিক ১ শতাংশে পৌঁছায়। এবার তা আরো বড় হলো। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাজেট বক্তৃতার মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি তৃতীয় বাজেট। এ বাজেট উপস্থাপনের আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে তা অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আগামী অর্থবছরের এ প্রস্তাবিত বাজেটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুমোদন দিয়ে স্বাক্ষর করেন।

বিকালে লাল গালিচা দিয়ে ব্রিফকেস হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী। করোনা মহামারির কারণে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও বাজেট ঘিরে সংসদ সচিবালয়ে এদিন ছিল সাজ সাজ রব। লাল গালিচার উপর দিয়ে হেঁটে চকলেট রঙের চামড়ার ব্রিফকেস হাতে অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিকাল ৩টা ৫ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের ২১তম বাজেট। করোনাকালেও এটি দেশের সর্ববৃহৎ বাজেট। সরকারের বেশির ভাগ মন্ত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংসদ অধিবেশনে সংক্ষিপ্তভাবেই অর্থমন্ত্রী তার তৃতীয় বাজেট পেশ করেন; যার সিংহভাগই ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। কিছু অংশ তিনি বাজেট বক্তৃতার বই থেকে পাঠ করেন। মৌখিক বাজেট পেশের পাশাপাশি সংসদ টিভিতে ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে বাজেটের সারাংশ, গড়, খরচের খাতের টিউটোরিয়াল গ্রাফিক্যালি তুলে ধরা হয়। বাজেট উপস্থাপনের শুরুতেই ১৯৭১ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয় অডিও ভিজুয়ালে। কীভাবে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আজ বিশে^র ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠল সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয় দক্ষতার সঙ্গে।

এবারের ৬ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকার বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ১৪ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৬৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধেই যাবে, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের প্রায় ১৯ শতাংশের বেশি।

রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা : মহামারির প্রথম ধাক্কা সামলে অর্থনীতির চাকা সচল হতে শুরু করেছিল গত বছরের শেষ দিকে। কিন্তু এ বছর সংক্রমণ সামাল দিতে আবারো সরকারকে লকডাউনের পথে যেতে হয়েছে। দুই বছর ধরে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক গতি না থাকায় রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে এনবিআর। মুস্তফা কামাল আশা করছেন, নতুন অর্থবছরের সম্ভাব্য ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ তিনি রাজস্ব খাত থেকে পাবেন। তার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এই অঙ্ক বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত রাজস্ব আয়ের প্রায় ১১ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৮ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। টাকার ওই অঙ্ক মোট বাজেটের ৫৫ শতাংশের মত।

গতবারের ধারাবাহিকতায় সবচেয়ে বেশি কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে, ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এ অঙ্ক বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ শতাংশের মতো বেশি। বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা ১ লাখ ১৫ হাজার ২১৭ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। আয়কর ও মুনাফার ওপর কর থেকে ১ লাখ ৪ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বিদায়ী সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ৩৭ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৫৪ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৫৬ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া বৈদেশিক অনুদান থেকে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে বাজেট প্রস্তাবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, আদায় সন্তোষজনক না হওয়ায় তা সংশোধন করে ৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। সংশোধনে তা ৫ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

আয়-ব্যয়ের ঘাটতি : নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী যে বাজেট প্রস্তাব সংসদের সামনে তুলে ধরেছেন, তাতে আয় ও ব্যয়ের সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে রেকর্ড ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মতো, যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। সাধারণত ঘাটতির পরিমাণ ৫ শতাংশের মধ্যে রেখে বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা হয়। তবে মহামারির সংকটে প্রণোদনার টাকা জোগানোর চাপ থাকায় গতবারের মতো এবারো তা সম্ভব হয়নি। বরাবরের মতোই বাজেট ঘাটতি পূরণে অর্থমন্ত্রীকে নির্ভর করতে হবে অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণের ওপর। তিনি আশা করছেন, বিদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা ঋণ করে ওই ঘাটতি তিনি মেটাবেন। অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরো ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি : মহামারির মধ্যেই বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। পরে তা দুই দফা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, তার নতুন বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারলে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে আটকে রেখেই ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব হবে।

করোনা মোকাবিলায় ২৩ প্যাকেজ : করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকার এ পর্যন্ত ২৩টি প্যাকেজ চালু করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে গত বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ছুটির কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দেয়। এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ৫ এপ্রিল ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার ৪টি প্যাকেজ ঘোষণা করেন। মন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে আমরা ধীরে ধীরে এ প্যাকেজের আওতা বর্ধিত করেছি এবং নতুন নতুন সেক্টর ও নতুন নতুন ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য প্যাকেজের আওতা সম্প্রসারণ করেছি। এ পর্যন্ত আমরা ২৩টি প্যাকেজ চালু করেছি যার মোট আর্থিক মূল্য ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। এর পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে প্রথম আঘাতটি আসে ইউরোপ-আমেরিকায় আমাদের রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের রপ্তানি আদেশ বাতিলের মাধ্যমে। যার ফলে এ খাতের প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হুমকির মধ্যে পড়ে। আমরা কোনো ধরনের কালক্ষেপণ না করে গত বছরের ৩১ মার্চ রপ্তানি খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি জরুরি তহবিল চালু করি।

আর্থিক খাত সংস্কারে ৫ আইন সংশোধন : ব্যাংক, পুঁজিবাজার, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক খাতের সংস্কার ও উন্নয়নে সরকার নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। আর্থিক খাত সংস্কারে ৫টি আইন সংশোধন ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন। আর্থিক খাত সংস্কারে যেসব আইন সংশোধন ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার মধ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেÑ ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, পেমেন্ট সিস্টেম আইন, অস্থাবর সম্পত্তি জামানত আইন, দেউলিয়া (সংশোধন) আইন এবং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি আইন।

সংশোধিত বাজেট : করোনা মহামারির কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়নি। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ব্যয় হয় বার্ষিক বরাদ্দের মাত্র ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে রাজস্ব আয় হয় বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪১ শতাংশ। ফলে চলতি অর্থবছরের বাজেট সংশোধন ও সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। অর্থমন্ত্রী তার নতুন অর্থবছরের বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে চলতি অর্থবছরের একটি সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App