×

অর্থনীতি

‘কালো’ টাকা সাদা করার সুযোগের ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২১, ০৯:২৩ পিএম

‘কালো’ টাকা সাদা করার সুযোগের ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার পক্ষে বা বিপক্ষে উভয় ধরনের মতামত থাকার কথা জানিয়ে এমন সুযোগ আবারও রাখার ইঙ্গিত রয়েছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের ব্ক্তব্যে। এসময় তিনি বলেন, অনেকে বলছেন এক্ষেত্রে সমাজের ইকুইটির জাস্টিস এনশিউর করা যাবে না যদি এটি অব্যাহত থাকে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা আরো একমাস এইটা দেখবো। তারপর আলোচনা হবে।

শুক্রবার (৪ মে) ভার্চুয়াল মাধ্যমে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বলেছেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া ‍যদি লাভজনক হয়, তাহলে অব্যাহত রাখার জন্য আলোচনা করা হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা বা বৈধ করার বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থবিলেও এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। গত বাজেটে শুধু চলতি অর্থবছরের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এবারে বাজেটে নতুন করে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। চলতি অর্থবছরে যেসব খাতে এমন সুযোগ আছে, তা আগামী ৩০ জুন শেষ হয়ে যাবে।

গত ১৯ মে এক বৈঠকে শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওটা কালো টাকা নয়, অপ্রদর্শিত টাকা। যতদিন প্রদর্শিত না হবে, ততদিন কন্টিনিউ করবে। আমাদের সিস্টেমের কারণে অনেক সময় অপ্রদর্শিত টাকা সিস্টেমে চলে আসে।

কোথাও কোনো ঘোষণা বা প্রস্তাব বা কিছু উল্লেখ না থাকায় আগামী অর্থবছরে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিদ্যমান অবাধ সুযোগ থাকছে কিনা একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, দুই সপ্তাহ আগে যখন আমরা এমন বলেছিলাম, তখন আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না। আমাদের প্রফিটেবলিটি যাচাই করতে হবে। যদি এটি প্রফটেবল হয়, তাহলে এটি অব্যাহত রাখার জন্য আমরা আলোচনা করবো। এখন এই মুহূর্তে এইটা নিয়ে মিশ্র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দুইটাই আছে।

তিনি আরো বলেন, কেউ বলে এইটা রাখতে, কেউ আবার না রাখতে বলেন। অনেকে বলছেন এক্ষেত্রে সমাজের ইকুইটির জাস্টিস এনশিউর করা যাবে না যদি এটি অব্যাহত থাকে। তাই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা আরো একমাস এইটা দেখবো। তারপর আলোচনা হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ১০ মাসে অপ্রকাশিত সম্পদের ওপরে ১৪ হাজার ৪৫৯ দশমিক চার কোটি টাকা বৈধ করা হয়েছে। এই সময়ে ১০ হাজার ৪০৪ জন লোক সম্পদ বৈধ করার জন্য মোট এক হাজার ৪৪৫ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা কর দিয়েছেন।

তথ্য অনুসারে, ১৯৭১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অপ্রকাশিত আয়ের প্রায় ৩০ হাজার ৮২৪ কোটি টাকার হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে, যা থেকে প্রায় তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা কর আদায় হয়েছে।

অপ্রকাশিত আয়ের মধ্যে ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালে দুই দশমিক ২৫ কোটি টাকা, ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সালে ৫০ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা, ১৯৮১ থেকে ১৯৯০ সালে ৪৫ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সালে ১৫০ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা, ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সালে ৯৫০ দশমিক ৪১ কোটি টাকা, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ৮২৭ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা, ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে এক হাজার ৬৮২ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালে এক হাজার ৮০৫ দশমিক শূন্য এক কোটি টাকা এবং ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১১ হাজার ১০৭ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা প্রকাশ করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App