×

খেলা

মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় জিতল গাজী গ্রুপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২১, ০৮:৫৩ পিএম

মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় জিতল গাজী গ্রুপ

হাফসেঞ্চুরি করে ব্যাট উচিয়ে ধরেন গাজী গ্রুপের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ছবি: ভোরের কাগজ

জমে উঠেছে বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। আজ বুধবার (২ জুন) এ টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা। এদিন দ্বিতীয় ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মুখোমুখি হয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। এ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুমিনুল হকের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে গাজী গ্রুপ ৭ উইকেট ও ৭ বল হাতে রেখেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে জিতেছে।

মুমিনুল ৫৪ রানে সাজঘরে ফিরলেও ৬২ রানে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তিনি বল হাতে ২ উইকেট শিকার করার পর ব্যাট হাতে ৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচ সেরা পুরস্কার জিতেছেন। এছাড়া ডিপিএলে দিনের প্রথম ম্যাচে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতিকে ১৯ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। এদিন টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট খুইয়ে ১৪৯ রান তোলে ফরহাদ রেজার দল প্রাইম দোলেশ্বর। জবাবে ১৩০ রানে গুটিয়ে যায় খেলাঘর।

এদিকে মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন গাজী গ্রুপের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। আর টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এই তারকা ক্রিকেটার ৪টি ছক্কার মারে ৩৫ বলে খেলেন ৪১ রানের ইনিংস। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকেন তিনি। ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন আশরাফুল। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর বল দারুণ ফ্লিকে ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান তিনি। চতুর্থ ওভারে বাঁহাতি পেসার নাহিদ হাসানকে ছক্কায় উড়ান দুবার।

এরপর স্পিনার নাসুমকে সুইপ করে ছক্কা উড়িয়ে মুগ্ধ করেন আশরাফুল। চারটি ছক্কা হাঁকালেও কোনো চারের মার নেই তার ইনিংসে। ৩৫ বলে ৪১ রান করে আউট হন আরিফুল হকের বলে। আরিফুলের বল উইকেট থেকে সরে গিয়ে শট খেলতে গিয়ে পয়েন্টে থাকা ফিল্ডার নাসুমের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন আশরাফুল। এছাড়া সৈকত আলীর ৩৩, জিয়াউর রহমানের ২১ ও নাসির হোসেনের ২০ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। অন্যদিকে, গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে বল হাতে মুকিদুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ ২টি করে, আরিফুল হক, সৌম্য সরকার ও নাসুম আহমেদ নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।

জয়ের জন্য ১৫২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ৪০ রানেই ফিরে যান গাজী গ্রুপের দুই ওপেনার শাহাদাৎ হোসেন ও সৌম্য সরকার। শাহাদাৎকে ব্যক্তিগত ১৩ রানে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে তুলে দিয়েছেন এনামুল হক জুনিয়র। আর সৌম্য আউট হন ১৪ রান তুলে। তৃতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৯৭ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। তবে তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে মুমিনুল আউট হন ৫৪ রানে। দলের রান তখন ১৩৭। তবে এরপর আর কোনো বিপদ নয়। মিডল অর্ডার জাকির হাসানকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের বাকি পথটুকু পাড়ি দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ম্যাচ শেষে তিনি অপরাজিত থেকেছেন ৬২ রানে।

এছাড়া দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির অধিনায়ক। তবে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ ইমরানুজ্জামানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শুরুটা দারুণ করে দোলেশ্বর। ওপেনিংয়ে ফজলে মাহমুদকে নিয়ে ৪ ওভার ৫ বলেই স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪৫ রান। ১৭ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান ইমরান। ফজলে মাহমুদের ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ১৪ রান। তিন নম্বরে নেমে সাইফ হাসানও দারুণ শুরু করেন। যদিও এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৩৩ বলে ২৮ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর মার্শাল আইয়ুব ২০ বলে ২১ রান করে। আর  ১২ বলে ১৬ রান আসে শামিম হোসেনের ব্যাট থেকে। শেষ দিকে শরিফউল্লাহ একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৯ বলে ১৫ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস। তাতেই দলীয় রান ৬ উইকেটে ১৪৯ দোলেশ্বরের।

তবে খেলাঘরের বোলাররা অবশ্য এদিন দারুণ নিয়ন্ত্রিত বল করেন। খালেদ আহমদের ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। একই সংখ্যক উইকেট নিয়েছে মাসুম খান। এই বোলার ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৩২। ১৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খেলাঘর। দলীয় ৭ রানের মাথায় ওপেনার সাদিকুর রহমান আউট হন। দলীয় ১০ রানে আরেক ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন ৩ রানে ফেরেন সাজঘরে। এরপর ১ রান করে অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম ফিরলে চাপে খেলাঘর। তবে চতুর্থ উইকেটে ফরহাদ হোসেন এবং সালমান হোসেন ৪০ রানের জুটি গড়লে ম্যাচে ফেরে খেলাঘর। কিন্তু ২৭ বলে ১৪ রান করে সালমান ফিরলে আবারো চাপে পড়ে খেলাঘর। এরপর উইকেটে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু ১০ বলে ১২ রান করে মিরাজও ফেরেন দলীয় ৭৫ রানে। এর আগেই ফরহাদ হোসেন ৩৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হন। এরপর দ্রুতই আরো দুটি উইকেট হারায় তারা। এক সময় ৭৮ রানেই ৮ উইকেট হারায় খেলাঘর।

কিন্তু শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের ঝড়ো ইনিংসে জয়ের আশা দেখছিল খেলাঘর। ১৯ বলে ৩টি ছক্কা ও ২টি চারে ৩৭ রান করেন রিশাদ। তবে দলকে জয় এনে দিতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তুলতে সক্ষম হয় খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি। আর তাইতেই প্রাইম দোলেশ্বর ১৯ রানের জয় পায়। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন কামরুল ইসলাম, রেয়াজুর রহমান রাজা এবং এনামুল হক জুনিয়র। আর একটি করে উইকেট নেন ফরহাদ রেজা, শরিফুল্লাহ এবং তাইবুর রহমান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App