×

সারাদেশ

বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২১, ০৯:১১ পিএম

বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি

মঙ্গলবার কাঁদামাখা অবস্থায় এমপি মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। ছবি: ভোরের কাগজ

বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন এমপি

ঘূর্ণিঝড় যশ-এর তাণ্ডবে খুলনার কয়রা সুন্দরবন উপকুলীয় অঞ্চলে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দেখতে গিয়ে জনতার ধাওয়া খেলেন খুলনার-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) সাংসদ মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।

মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি অস্বীকার করে অস্বীকার আক্তারুজ্জামান এমপি বলেন, তাকে বহনকারী ট্রলারে কাদা ছুঁড়ে মারা হয়নি। কয়েক হাজার মানুষ বেড়িবাঁধ নির্মানে কাজ করছিলে। সেখানে গেলে তাকে দেখে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। বার বার বাঁধ ভাঙে আর বারবার স্বেচ্ছাশ্রমে তাদের কাজ করতে হয়। এ কারণে সংসদ সদস্যের ওপর তাদের ক্ষোভ।

এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় যশ-এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায়। ভাঙনের স্থান দিয়ে পানি ঢুকে প্রায় ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। পাউবো বাঁধটি মেরামত করতে না পারায় স্বেচ্ছাশ্রমে উপজেলার প্রায় তিন হাজার মানুষ বাঁধ মেরামতে নামেন।

[caption id="attachment_287511" align="aligncenter" width="949"] খুলনার কয়রায় বেড়িবাঁধ নির্মান দেখতে আসেন সাংসদ মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।[/caption]

তারা আরও জানান, আজ সকালে বেড়িবাঁধ মেরামতের সময় এমপি আক্তারুজ্জামান বাঘালিয়া ইউনিয়ানের হোগলারহাট থেকে প্রায় ৫০-৬০ জন অনুসারী নিয়ে একটি ট্রলারে করে আসেন। এ সময় এমপিকে দেখে বাঁধ মেরামতরত এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হন। পরে এমপির ট্রলারের দিকে কাঁদা ছুঁড়ে তাকে ফিরে যেতে বলেন এবং ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী নদীতে নেমে আসেন। এ সময় এমপি বাঁধের কিছুটা দূরে ট্রলার থেকে নামেন। তখন এলাকার কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে এমপি মাইকে বক্তব্য দিয়ে বাঁধ মেরামত কাজে নামলে স্বেচ্ছাশ্রমিকরা বাঁধ মেরামত ফেলে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী মহারাজপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর দেয়াড়া ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন,  ট্রলারে করে এমপি আসলে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে আসা জনতা তার (এমপি) আসার প্রয়োজন নেই বলে কাঁদা ছুঁড়তে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে এমপি বাঁধের কাজ শুরু করতে গেলে অধিকাংশ জনগণ কাজ ছেড়ে চলে যান। তা না হলে আজ বাঁধের কাজ শেষ হয়ে যেত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় স্বেচ্ছাশ্রমিক বলেন, বাঁধের কাজ আসলেই এমপি তার আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে কাজ করান। ফলে কাজ ভালো হয় না। একটু ঝড়-বৃষ্টি হলেই বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ জনগণ। সে কারণেই এমপির ওপর উপজেলার অধিকাংশ মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তার প্রকাশ ঘটেছে আজ।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ একটু সমস্যা করছিল। পরে এমপি সাহেব বক্তব্য দিলে তারা আবার শান্ত হয়ে যান। তেমন কোনো বড় ঘটনা না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App